Advertisement
০৬ মে ২০২৪

কিশোরীদের স্বাস্থ্যে নজর দিতে প্রকল্প

কিশোরীদের সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে সরকারি প্রকল্প শুরু হতে চলেছে জেলায়। বীরভূম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভলপমেন্ট সার্ভিসেস স্কিম’ (আইসিডিএস) এর পরিকাঠামো ব্যবহার করে বাস্তবায়িত হতে চলছে প্রকল্পটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

কিশোরীদের সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে সরকারি প্রকল্প শুরু হতে চলেছে জেলায়। বীরভূম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভলপমেন্ট সার্ভিসেস স্কিম’ (আইসিডিএস) এর পরিকাঠামো ব্যবহার করে বাস্তবায়িত হতে চলছে প্রকল্পটি। সুসংহত শিশুবিকাশ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক অরিন্দম ভাদুড়ী বলছেন, ‘‘১১-১৮ বছর বয়সী কিশোরীদের পুষ্টিগত ও স্বাস্থ্যগত অবস্থার উন্নতি এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে তুলতেই শুরু হচ্ছে প্রকল্পটি।’’ দফতর সূত্রের খবর, এই প্রকল্পের সূচনা হবে ইলামবাজার ব্লক থেকে। বাকি ব্লকগুলিতেও কিশোরীরা ধীরে ধীরে এই প্রকল্পের আওতায় আসবে। তার প্রক্রিয়া চলছে।

ঠিক কী আছে প্রকল্পে?

শৈশব এবং বড় হওয়ার মাঝে রয়েছে বয়ঃসন্ধির সময়। এই সময় শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তন আসে। তৈরি হয় নানা কৌতূহল। জীবনপথে ঠিকভাবে এগিয়ে যেতে এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজন শিক্ষায় সাহায্য, পরামর্শ, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা। মেয়েদের ক্ষেত্রে যা খুব জরুরি। ঋতুকালীন সময়ে অপরিচ্ছন্নতা, বাল্যবিবাহ, যৌন নির্যাতন, নারী পাচার সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। তার উপরে নির্ভর করে ভবিষ্যত সুরক্ষা থেকে শুরু করে সুস্থ মাতৃত্ব। ঠিক তেমনই প্রয়োজন পুষ্টির দিক, এবং নিজের পায়ে দাঁড়ানোর উপায় বাতলে দেওয়া। সে কথা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। অরিন্দমবাবু বলছেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে প্রতিটি ব্লক থেকে ৩০০ জন করে কিশোরীকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে থেকে প্রতি ব্লকে ৪০ জন করে চূড়ান্ত কিশোরীকে বাছা হয়েছে। এরাই হবে সথী সহেলি বা পিয়ার লিডার। কিশোরীদের খাবার জন্য প্রতিদিন ১০ টাকা করে মাসে ৩০০ টাকা বরাদ্দ থাকবে।

২০০০ সালে ভারতের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়, কিশোরী শক্তি যোজনা (কেএসওয়াই) নামে একটি প্রকল্প নিয়ে আসে। যা ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস স্কিম (আইসিডিএস) এর পরিকাঠামো ব্যবহার করে বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল ১১-১৮ বছর বয়সী মেয়েদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের অবস্থা উন্নত করা। যাতে তারা তাদের বাড়ি-ভিত্তিক ও পেশাগত দক্ষতা উন্নত করতে এবং তাদের সামগ্রিক উন্নয়নে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাদের স্বাস্থ্য, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, পুষ্টি এবং পরিবার কল্যাণ ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান অর্জন করে। প্রাথমিক ভাবে দেশের ২০০টি জেলাকে এর আওতায় আনা হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরের ধাপে ২০১১ সালের জুলাই মাস থেকে ওই প্রকল্পই এ রাজ্যের সাতটি জেলা— কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, মালদহ, নদিয়া, কলকাতা এবং পুরুলিয়ায় পাইলট ভিত্তিতে আইসিডিএস প্রোজেক্ট থেকে ২৯,৪৪৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ‘সবলা’ প্রকল্পটি চালু হয়েছে। যার ফলে কয়েক লক্ষ কিশোরী মেয়ে সবলা প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধা পাচ্ছে। তার সঙ্গে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন এবং পরিবার কল্যাণ, স্বাস্থ্য এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, বর্তমান পরিষেবাগুলি সম্পর্কে তথ্য ও নির্দেশ পাচ্ছে। বেসরকারি সংস্থা বা স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের (ভিটিপিএস) মাধ্যমে বিউটিশিয়ান, হস্তশিল্প, সেলাই, ছাপাখানা এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো বিভিন্ন পেশার বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সবলা নামটি থাকবে কিনা জানা যায়নি তবে, এ বার বীরভূম জেলাও একই প্রকল্পের আওতায় আসতে চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE