Advertisement
১৯ মে ২০২৪

দুই দলের দুই পদ, শম্পার আর্জি খারিজ হাইকোর্টে

তিনি কংগ্রেসের বিধায়ক। তিনি-ই তৃণমূলের কাউন্সিলর। এই পরিস্থিতিতে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করে বাঁকুড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান শম্পা দরিপার কাউন্সিলর পদ খারিজ করেছিলেন মহকুমাশাসক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১২
Share: Save:

তিনি কংগ্রেসের বিধায়ক। তিনি-ই তৃণমূলের কাউন্সিলর। এই পরিস্থিতিতে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করে বাঁকুড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান শম্পা দরিপার কাউন্সিলর পদ খারিজ করেছিলেন মহকুমাশাসক। পদ বাঁচাতে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শম্পাদেবী। কিন্তু, বুধবার শম্পাদেবীর আবেদন খারিজ করেছে হাইকোর্ট।

মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা বলেন, “দলত্যাগ বিরোধী আইনে শম্পাদেবীর কাউন্সিলর পদ খারিজ হয়েছিল। হাইকোর্টও তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। ফলে তিনি এখন আর কাউন্সিলর নন।’’

দলত্যাগ বিরোধী আইন তাঁর ক্ষেত্রে কতটা খাটে, তা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছিলেন শম্পাদেবী। এ বার বিধানসভা ভোটের আগে দল বিরোধী কাজের অভিযোগে দল থেকে শম্পাদেবীকে বহিষ্কার করেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এর পরে বাঁকুড়া কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রতীকে প্রার্থী হন শম্পাদেবী। ভোটে তৃণমূল প্রার্থী মিনতি মিশ্রকে হারিয়ে বিধায়কও হন। তবে, গত বছর তৃণমূলের টিকিটে জিতে কাউন্সিলর হওয়ায় সেই পদটি থেকে গিয়েছিল শম্পাদেবীর। বিধানসভা ভোটের পরে বাঁকুড়ার পুরপ্রধান, তৃণমূলের মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত শম্পাদেবীর কাউন্সিলর পদ খারিজের আবেদন জানা জেলা প্রশাসনের কাছে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে মহকুমাশাসক একাধিক বার শুনানি ডেকেছেন। শম্পাদেবী কোনও শুনানিতেই হাজির থাকেননি।

এর পরেই মহকুমাশাসক নির্দেশিকা জারি করে শম্পাদেবীর কাউন্সিলরপদ খারিজ করেন। বাঁকুড়ার বিধায়ক তখন দাবি করেছিলেন, তিনি দল ছাড়েননি, দলই তাঁকে বহিষ্কার করেছে। এই পরিস্থিতিতে দলবিরোধী আইন তাঁর উপর কোনও ভাবেই খাটবে না। প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে মামলাও করেন। আবেদন পেয়ে মহকুমাশাসকের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। তবে শেষ পর্যন্ত শম্পাদেবীর আবেদনই খারিজ হয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন শম্পাদেবী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় রয়েছি। রায়ের কপি না দেখে কিছু বলতে পারব না। রায় দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।’’

হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, “সত্য মেব জয়তে।’’ তিনি বলেন, “আইন আইনের পথেই চলেছে। শম্পাদেবীর আগেই উচিত ছিল কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সম্মান নিয়ে ফিরে যাওয়া। কোনও ভাবেই তিনি কাউন্সিলর পদ বাঁচাতে পারবেন না জেনেও কেবল বিষয়টিকে আইনি প্রক্রিয়ায় ঝুলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই হাইকোর্টে গিয়েছিলেন।’’

জেলা সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম এক জন ব্যক্তি পুরসভায় শাসক দলের প্রতিনিধি এবং বিধানসভায় বিরোধী দলের হয়ে থাকতে পারেন না। এই ঘটনা নজিরবিহীন। হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shampa Daripa counselor High court dismissed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE