E-Paper

এক ধাক্কায় বাদ ৮ শিক্ষিকা, পড়ানো নিয়েই ফাঁপরে স্কুল

শুধু সাহাপুরে নয়, এ দিনের রায়ের জেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বহু স্কুলেই এমন প্রশ্ন উঠেছে।

সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৫৬
ইলামবাজারের সাহাপুর হাই স্কুল।

ইলামবাজারের সাহাপুর হাই স্কুল। —ছবি : সংগৃহীত

“কাল থেকে স্কুলে ঘণ্টা দেওয়ারও লোক থাকল না!”—সুপ্রিম কোর্টের এসএসসি রায় প্রকাশ্যে আসার পরে হতাশার সুরে বললেন ইলামবাজারের সাহাপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন আহমেদ৷ ওই স্কুলের দুই শিক্ষাকর্মীরই চাকরি বাতিল হয়েছে। চাকরি বাতিল হয়েছে স্কুলের একমাত্র অঙ্ক শিক্ষকেরও। ছেলেমেয়েদের অঙ্ক শেখাবেন কে, দৈনন্দিন কাজ সামলাবেন কোন কর্মী, ভেবে পাচ্ছেন না সালাউদ্দিন।

তবে শুধু সাহাপুরে নয়, এ দিনের রায়ের জেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বহু স্কুলেই এমন প্রশ্ন উঠেছে। হাজারেরও বেশি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়ায় কী ভাবে স্কুলের কাজকর্ম হবে, কী ভাবেই বা বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, জেলার ১০২৫ জনের চাকরি বাতিলের কারণে বিভিন্ন স্কুলে শিকেয় উঠতে চলেছে বিশেষ বিশেষ বিষয়ের পঠনপাঠন। নলহাটি হাইস্কুল ফর গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা বিদিশা সিংহ বলেন, “২৪০০ ছাত্রী। অনুমোদিত ৪১টি পদে ২৩ জন শিক্ষিকা ছিলেন। এই রায়ের ফলে ৮ জন শিক্ষিকা বাদ চলে গেলেন। কী ভাবে স্কুল চলবে বুঝতে পারছি না।”

সিউড়ির পাবলিক অ্যান্ড চন্দ্রগতি মুস্তাফি মেমোরিয়াল হাইস্কুলে জীবন বিজ্ঞানের এক মাত্র শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। সাংড়া সতীশচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিজে অঙ্কের শিক্ষক। প্রশাসনিক কাজের জন্য তাঁর পক্ষে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। তিনি ছাড়া একমাত্র অঙ্ক শিক্ষকের চাকরি যাওয়ায় সেখানেও পঠন-পাঠন নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন প্রধান শিক্ষক।

সিউড়ি হাটজনবাজার রামপ্রসাদ রায় স্মৃতি বিদ্যালয়ে চাকরি বাতিল হয়েছে শিক্ষা বিজ্ঞানের শিক্ষকের। ওই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ৮০ জন পড়ুয়া ওই বিষয়ে পড়ছে৷ তাদের পড়াশোনা কী ভাবে চলবে, চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাধাইপুর পল্লিমঙ্গল বিদ্যালয়ে একইসঙ্গে দর্শন ও অঙ্কের দুই শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। দু'জনেই তাঁদের বিষয়ে স্কুলের একমাত্র শিক্ষক ছিলেন। প্রধান শিক্ষক আশিস বিশ্বাস বলেন, “এর পরে স্কুলে শিক্ষকের অভাবের কারণেই কেউ সরকারি স্কুলে নিজের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করবে না। এই ঘটনার ফলে সরকারি স্কুল, বিশেষত আমাদের মতো গ্রামীণ স্কুলগুলির পড়াশোনার পরিকাঠামো কার্যত ভেঙে পড়বে।”

রাজনগরের ভবানীপুর শম্ভুনাথ উচ্চবিদ্যালয়ে চাকরি গিয়েছে তিন জন শিক্ষক ও এক শিক্ষাকর্মীর। ১১৮০ জন ছাত্রছাত্রী। প্রধান শিক্ষক-সহ অনুমোদিত পদ ২৩। স্কুল সূত্রের খবর, প্রধান শিক্ষক-সহ ৫টি পদ এমনিতেই শূন্য ছিল। আরও তিন জন চলে গেলে পড়াশোনার কী হবে, কেউ জানেন না। শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন প্রধান শিক্ষকদের একাংশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ilambazar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy