এলাকায় প্রচলিত জনশ্রুতি অনুযায়ী, দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে বালক ভোজন করেছিলেন বাবা। তার পরেই নাকি কঠিন অসুখ থেকে সেরে উঠেছিল তাঁর ছ’বছরের মেয়ে।
পরের বছরই ১৯৪৭ সালে নলহাটিতে নিজের বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেছিলেন হরিতারণ সিংহ। পরের ৭০ বছর ধরে সেই পুজো সমান আড়ম্বরে শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে হরিতারণবাবুর বাড়িতে তাঁর উত্তরপুরুষেরা করে আসছেন। আয়োজনে খামতি নেই এ বছরও।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বংশ পরম্পরায় সিংহবাড়ির পুজোর দায়িত্ব বর্তমানে সামলান হরিতারণবাবুর দুই নাতি এবং এক নাতনির পরিবার। পারিবারিক পুজো উপলক্ষে হরিতারণবাবুর দেশের বাড়ি চাঁদপাড়া থেকেও আত্মীয় পরিজনেরা নলহাটিতে এসে পুজোয় সামিল হন। দাদুর প্রচলন করা পুজোর দায়িত্ব সামলাতে প্রতি বছরের মতো এ বারও এসেছেন হিমাচল প্রদেশে কর্মরত নাতি সুভাষকুমার সিংহ। তিনি বললেন, ‘‘১৯৪৭ সাল থেকে ’৮১ সাল পর্যন্ত দাদু নিজেই এই পুজোর দেখভাল করতেন। পরবর্তী কালে বংশানুক্রমে পারিবারিক পুজো হিসাবে বাবা ও নাতিনাতনি হিসাবে বর্তমানে আমরা সেই পুজোর দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছি।’’
এই পারিবারিক জগদ্ধাত্রী পুজোর বিশেষত্ব হচ্ছে, সপ্তমী-অষ্টমী ও নবমীর পুজো একই দিনে হয়। দেবীর ডাকের সাজ। একই চালিতে সিংহের উপর অধিষ্ঠাত্রী দেবীর নীচে থাকে হাতির কাটা মুন্ডু। নবমী তিথি থাকতেই পাড়ার পুকুরে ভোরে দেবীর আবাহনের ঘট ভরা হয়। তার পরে দিনভর সেই পুজো হয়। তবে, চাঁদপাড়ায় পৈতৃক দেবতা পরম আরাধ্য বাবা রামেশ্বর তলায় চড়ক পুজোর সময় অনেক মানসিক বলিদান হওয়ায় নলহাটিতে জগদ্ধাত্রীর পুজোয় কোনও বলিদান প্রথা রাখেননি হরিতারণবাবু। পুজো হয় তান্ত্রিক মতে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির ভিতরে পাকা দালানের মণ্ডপে তৈরি হয়েছে পাকা বেদী। আলোকমালায় সুসজ্জিত করা হয় পুজো মণ্ডপ থেকে সিংহবাড়ির পাকা দালান। বছরের শেষে সিংহবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর আনন্দ পাড়াপড়শির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
সপ্তমীর ঘট ভরা থেকে সন্ধিপুজোর হোম যজ্ঞাদি, নবমীর আরতি, দশমীতে দেবীর বিসর্জনে সিংহবাড়ির সঙ্গে পাড়ার সকলেই এলাকার একমাত্র জগদ্ধাত্রী প্রতিমা নিয়ে মেতে থাকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy