Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তার আছে, ওষুধ নেই

ডাক্তার আছেন। কিন্তু বরাদ্দ নেই ওষুধ। তাই ডাক্তারের কাছে প্রেসক্রিপশন লিখে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে রোগীদের। এর ফলে ধুঁকছে জেলা পরিষদ পরিচালিত ময়ূরেশ্বরের কুণ্ডলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

বেহাল: কুণ্ডলায়। নিজস্ব চিত্র

বেহাল: কুণ্ডলায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৫১
Share: Save:

ডাক্তার আছেন। কিন্তু বরাদ্দ নেই ওষুধ। তাই ডাক্তারের কাছে প্রেসক্রিপশন লিখে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে রোগীদের। এর ফলে ধুঁকছে জেলা পরিষদ পরিচালিত ময়ূরেশ্বরের কুণ্ডলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, একসময় গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য এলাকার অবস্থাপন্ন শুভানুধ্যায়ীরা নিজেদের খরচে দাতব্য চিকিৎসালয় খুলেছিলেন। পরবর্তী কালে সরকার সেগুলি অধিগ্রহণ করে। ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের পাশাপাশি ওষুধ বরাদ্দেরও ব্যবস্থা করা হয়। কুণ্ডলা গ্রামেও স্থানীয় জমিদার মুখোপাধ্যায় পরিবারও ১৯২০ সালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু করেন। পরবর্তী কালে সেটি অধিগ্রহণ করে বীরভূম জেলা পরিষদ। একজন চিকিৎসক, কম্পাউন্ডার, নাইটগার্ড-সহ বরাদ্দ হয় ওষুধও। একসময় সপ্তাহে ছ’দিনই সেখানে ওষুধ-সহ পরিষেবা মিলত।

২০০১ সাল থেকে ওষুধ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। চিকিৎসক সপ্তাহে দু’দিন আসেন। প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে চলে যান। ২০১৫ সালে অবসর নিয়েছেন কম্পাউন্ডার শিশিরকুমার মণ্ডল। তাঁর স্থানে আজও কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। গ্রামবাসীদের অনুরোধে তিনিই কার্যত স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ চালাচ্ছেন। ১৯৮৮ সাল থেকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন শিশিরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘যখন ওষুধ মিলত, তখন ৭০০-৮০০ জন রোগী হতো। এখন ১০০ জনও হয় না। এই সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তো সাধারণত গরিব মানুষেরাই আসেন। তাঁদের প্রয়োজন বিনা পয়সার ওষুধ। কিন্তু তা না পেলে শুধু প্রেসক্রিপশন লিখিয়ে নিতে কে-ই বা আসবে।’’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক অসীম ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘ওষুধের জন্য জেলা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। তাই যাঁরা আসেন, তাঁদের প্রেসক্রিপশন লিখে দেওয়া ছাড়া আর কি-ই বা করা যায়!’’

এই পরিস্থিতিতে চরম ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, গৌতম মুখোপাধ্যায়রা জানান, বেসরকারি পরিচালনায় যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এক দিন এলাকার ১০-১২টি গ্রামের মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন, সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রই এখন সরকারি সদিচ্ছার অভাবে নিজেই ধুঁকছে। বারবার সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও লাভ হয়নি বলে তাঁদের দাবি।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র এখন আয়ুষ দফতরের অধীনে চলে গিয়েছে। তবে গ্রামবাসীরা যদি লিখিত ভাবে তাঁদের দাবির বিষয়টি জানান, তা হলে জেলা পরিষদের তহবিল থেকেও ওষুধের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kundala Kundala Health center medicine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE