Advertisement
E-Paper

দখলে কেবল দুই আসন, পর্যুদস্ত বাম

২-০-০-০! এটাই এবার বীরভূমে বামেদের পুরভোটের স্কোর কার্ড! সদ্য সদ্য অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে শেষ হয়েছে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছেন জেলার সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। আর এবার পুরভোটেই তাঁর জেলাতেই প্রায় ধুয়ে মুছে সাফ লালপার্টি! জেলার চার পুরসভার ৭৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিপিএমের দখলে মাত্র ২ টি!

মহেন্দ্র জেনা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১৮
ফল প্রকাশের পর তৃণমূলের মহিলা কর্মী সমর্থকদের আবির খেলা। বোলপুরে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

ফল প্রকাশের পর তৃণমূলের মহিলা কর্মী সমর্থকদের আবির খেলা। বোলপুরে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

২-০-০-০!

এটাই এবার বীরভূমে বামেদের পুরভোটের স্কোর কার্ড! সদ্য সদ্য অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে শেষ হয়েছে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছেন জেলার সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। আর এবার পুরভোটেই তাঁর জেলাতেই প্রায় ধুয়ে মুছে সাফ লালপার্টি! জেলার চার পুরসভার ৭৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিপিএমের দখলে মাত্র ২ টি! রাজ্যে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেদের দখলে থাকা একাধিক আসন হাতছাড়া হয়েছে বামেদের। গত পুরসভার নির্বাচনে রামপুরহাট পুরসভার মোট ১৭ টি আসনের মধ্যে বামেদের দখলে ছিল ৩ টি ওয়ার্ড। বোলপুরের ১৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে বামেদের দখলে ছিল ২ ওয়ার্ড। সিউড়ির ১৮ টি আসনের বামেদের দখলে ছিল ৩ টি ( দুটি এবং বাম সমর্থিত নির্দল একটি) এবং সাঁইথিয়াতে ১৬ টি আসনের মধ্যে বামেদের দখলে ছিল ২ ওয়ার্ড। গতবার জেলার চারটি পুরসভার মোট ৭০ টি আসনের মধ্যে ১০ টি ওয়ার্ড দখল করেছিল বামেরা। নির্বাচনের পর দল বদলের মধ্য দিয়ে রামপুরহাটে ৩ টি আসন, বোলপুরে একটি আসন, সিউড়িতে একটি আসন নিয়ে চলতি পুরভোটের আগে মোট পাঁচটি আসন ধরে রাখে বামফ্রন্ট।

জেলার চারটি পুরসভার নির্বাচনের মধ্যে তিনটি পুরসভায় একটি করে আসন বেড়ে এইবারের নির্বাচনে মোট আসন দাড়ায় ৭৩। কিন্তু এই ৭৩ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিজের আসন সংখ্যা বাড়ানোর জায়গায় আগের আসন থেকে তিনটি আসন খোয়াল বামফ্রন্ট।

বাম, অতি বাম কোনও জেলা নেতৃত্বের কাছেই মঙ্গলবার এই গো-হারান হারের ব্যাখ্যা নেই। জেলায় বামেদের এই বিপর্যয় এমন এক সময়ে এসেছে, যেখানে বামফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএমের জেলা সম্পাদক বদল হয়েছে। পুরভোটের কয়েক দিন আগে সিপিএমের নতুন জেলা সম্পাদক রাম চন্দ্র ডোমের মাথায় বসেছে কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্যের পালক। এমন পরিস্থিতিতে বীরভূমে বামফ্রন্টের ধস নামল। শুধু তাই নয়, জেলার চারটি পুরসভার বহু আসনে ফ্রন্টের প্রার্থীদেরই জমানত জব্দ হতে হয়েছে।

কী বলছেন রামবাবু?

‘‘এই ফল প্রত্যাশিত ছিল না। এহেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুরসভার বোর্ড দখল না করতে পারলেও, প্রতিনিধিত্ব করবার আশা ছিল।” বলছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। পুরবোর্ড দখল করতে যে তাঁরা অক্ষম তা অকপটে স্বীকার করে নিয়ে হারের ব্যাখ্যায় বললেন, ‘‘তৃণমূলের পেশি শক্তি ও অর্থ শক্তির কাছে বামেদের হার মানতে হয়েছে।’’

জেলার শহরে ভোট কমছিল তা মানছেন বাম নেতারা। কিন্তু তাঁদের দাবি, এই বারের নির্বাচনে সবথেকে গুরুতর বিষয় হচ্ছে ভোট কেনার জন্য ব্যাপক অর্থ ব্যবহার হয়েছে। ভোট অবাধ হয়নি। ‘‘মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিফলন হইনি। সাড়া রাজ্যের ভোট প্রক্রিয়া যা দাঁড়িয়েছে, সন্ত্রাস, ছাপ্পা ভোট, কালো টাকার ব্যবহার হয়েছে তাতে।’’ বলছেন কেউ কেউ। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সমীর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মানুষ একেবারে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন, এমন নয়। ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছি আমরা।’’

দুই চিত্র। বোলপুরে দলীয় কর্মী সমর্থকদের কাঁধে বিজেপি প্রার্থী বিকাশ মিশ্র।

(ডান দিকে) সিউড়িতে হতাশা গ্রাস করেছে বাম শিবিরে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী ও তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু নির্বাচনের জন্য সন্ত্রাস করেছে শাসক দল, এমন নয়। ধারাবাহিক ভাবে সন্ত্রাস চালিয়ে আসছে ওরা। তার জেরেই মানুষ নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বিরত থেকেছে। ফলাফলে তারই প্রভাব।’’

বামেদের এই ফলাফল এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদক রামচন্দ্রবাবুর অভিযোগকে নিয়ে কটাক্ষ করেছেন শাসক দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “বামেরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, তৃণমূল কোনও পেশি শক্তি বা কোনও অর্থ শক্তি ব্যবহার করেনি। নির্বাচন অবাধ হয়েছে, আমাদের কোনও পেশি শক্তি নেই।’’

birbhum cpm left got 2 seats ramchandra dome birbhum left front birbhum cpm crisis mahendra jena
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy