Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নোট-জটে আঁধারে পাথর শিল্পীরা

বড়দিনের ছুটি পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু শীতের নরম রোদে গা সেঁকতে সেঁকতে পিকনিকের মজু কুড়োতে আসা লোকজনের সংখ্যা কম নয়। তবু হাসি নেই শুশুনিয়ার পাথর শিল্পীদের মুখে।

পর্যটকেরা এলেও এ বার জমল না কেনাকাটা। মুষড়ে পড়েছেন পাথর শিল্পীরা। ছবিটি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ।

পর্যটকেরা এলেও এ বার জমল না কেনাকাটা। মুষড়ে পড়েছেন পাথর শিল্পীরা। ছবিটি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ছাতনা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:১৪
Share: Save:

বড়দিনের ছুটি পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু শীতের নরম রোদে গা সেঁকতে সেঁকতে পিকনিকের মজু কুড়োতে আসা লোকজনের সংখ্যা কম নয়। তবু হাসি নেই শুশুনিয়ার পাথর শিল্পীদের মুখে। কারণ কেন্দ্রের নোট বাতিলের পরে কেনাকাটায় রাশ টেনেছেন সাধারণ মানুষ। ফলে পাথর শিল্পীরা প্রতিবারের মতো এ বারও শিল্পের পসরা সাজিয়ে বসলেও দোকানগুলিতে ভিড় তেমন জমছে না।

শিল্পীরা জানাচ্ছেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দু’মাসেই মূলত শুশুনিয়ায় মানুষের আনাগোনা বেশি থাকে। তাই বেচাকেনার জন্য এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন তাঁরা। তবে এ বার একধাক্কায় ব্যবসা অর্ধেকেরও কম হয়ে গিয়েছে।

শুশুনিয়ায় আসা পর্যটকেরা পাহাড়ে ঘোরার পরে পাথরের তৈরি নানা উপহার সামগ্রী, মূর্তি, পুজোর উপকরণ, পাঁচমুড়ার পোড়া মাটির ঘোড়ার আদলে তৈরি পাথরের ঘোড়া কিনে নিয়ে যান। তবে এ বার অনেকেই দূর থেকে ওই সব সামগ্রী দেখেই ক্ষান্ত হচ্ছেন। কেনাকাটা করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এই কারণেই আশানুরূপ ব্যবসা না হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে এই পর্যটনস্থলের ব্যবসায়ীদের। পাথর শিল্পী প্রভঞ্জন কর্মকারের কথায়, “অন্যান্যবার পয়লা জানুয়ারির দিন নিদেন পক্ষে ১০ হাজারের বেশি টাকার ব্যবসা হয়। এ বার টেনেটুনে হাজার ছয়েক টাকার ব্যবসা হয়েছে।” আর এক শিল্পী বাবলু কর্মকারের আক্ষেপ, “বছরের প্রথম দিন হাতে গোনা কয়েকজন খদ্দের পেয়েছিলাম। বড় দিনেও তেমন ব্যবসা হয়নি। পর্যটনের ভরা বাজারে এমন লোকসান হওয়ায় সারা বছর সংসার টানতে পারব কি না তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছি।” পাথর শিল্পী শ্যামাপদ রায় জানান, জিনিসপত্রের দাম গত বছরের তুলনায় বেশ খানিকটা কমানোর পরেও তাঁর বিশেষ কেনাবেচা বাড়েনি।

শুশুনিয়ায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, কেন্দ্রের নোট বাতিলের জেরে ব্যাঙ্ক থেকে পর্যাপ্ত টাকা তুলতে না পারায় তাঁদের হাত খালি। তাই কেনাকাটায় কাঁচি চালাচ্ছেন তাঁরা। সপরিবারে শুশুনিয়ায় বেড়াতে এসেছিলেন দুর্গাপুরের সৌমিত্র সুরাল। তাঁর কথায়, “ব্যাঙ্ক থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকা তুলতে পারছি না বলে এ বার কাছাকাছি বেড়াতে এসেছি। পাথরের অনেক কিছুই ভাল লেগেছিল। কিন্তু হাতে নগদের মজুত কম হওয়ায় মেপে খরচ করেছি।”

পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হয়, এখন সে দিকেই তাকিয়ে শিল্পীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Local Business Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE