Advertisement
E-Paper

বিতর্ক সঙ্গী করেই মনোনয়ন দিলেন সৌমিত্র

বাঁকুড়া জেলায় ঢুকে ইন্দাসের আগে সৌমিত্র গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করেন। তারপর বলেন, “চার মাস পর বাঁকুড়ার মাটিতে পা রাখলাম। সে জন্য প্রণাম।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫৪
করজোড়ে: বাঁকুড়ায় ঢোকার আগে পথে বসে পড়েছেন বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র

করজোড়ে: বাঁকুড়ায় ঢোকার আগে পথে বসে পড়েছেন বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র

মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের। বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) দফতরে ঢোকার মুখে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়ালেন তিনি। পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়ান সৌমিত্রের স্ত্রী সুজাতাও। তবে, শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই সৌমিত্র ও বাঁকুড়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার মনোনয়ন জমা দেন।

বাঁকুড়া জেলায় কয়েকটি মামলায় জড়িত সৌমিত্রকে ছ’সপ্তাহের জন্য জেলায় ঢুকতে নিষেধ করেছে হাইকোর্ট। পরে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানানোয়, সেখান থেকে সৌমিত্রকে শুধুমাত্র মনোনয়নের দিন বাঁকুড়ায় ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার মনোনয়ন দিতে বেরিয়েই গোলমালে পড়েন সৌমিত্র।

বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ বিধানসভা। এ দিন সেখান থেকে বাঁকুড়ামুখী সৌমিত্রের পিছু নেয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের বেশ কয়েকটি গাড়ি। ওই এলাকার বিজেপির নেত্রী শম্পা মাথুরের অভিযোগ, ‘‘লোদনা মোড়ের কাছে প্রার্থীর সঙ্গে দলীয় কর্মীদের কয়েকটি গাড়ি পার হতেই তৃণমূলের পতাকা লাগানো একটি ট্রাক্টর রাস্তার উপরে আড়াআড়ি ভাবে দাঁড়িয়ে পড়ে। ওই ট্রাক্টর থেকে লোকজন নেমে বিজেপির বাকি ছ’টি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। মহিলা থেকে বয়স্ক— সবাইকে মারধর করে।’’ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে খণ্ডঘোষ থানার সামনে ঘণ্টাখানেক অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। পরে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। বিজেপির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ।

বাঁকুড়া জেলায় ঢুকে ইন্দাসের আগে সৌমিত্র গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করেন। তারপর বলেন, “চার মাস পর বাঁকুড়ার মাটিতে পা রাখলাম। সে জন্য প্রণাম।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘শুধু খণ্ডঘোষেই প্রচার করেছি। তাতেই তৃণমূল ভয় পেয়ে আগে কালো পতাকা দেখিয়েছে, আমার গাড়িতে লাঠি মেরেছে। এ দিন সঙ্গীদের আটকে মারধর করল। মানুষ জবাব দেবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেলাশাসকের দফতরে স্ত্রী ও কয়েক জন নেতা-কর্মীকে নিয়ে ঢুকতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন সৌমিত্র। বাঁকুড়া পুলিশের ডিএসপি (ডিইবি) অরুণাভ দাস তাঁদের জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে প্রার্থী-সহ মোট পাঁচ জন ঢুকতে পারেন।

বুধবার তৃণমূল প্রার্থীরা মনোনয়ন দিয়ে গিয়েছেন। সৌমিত্র অভিযোগ করেন, ‘‘আগের দিন তৃণমূল প্রার্থীদের সঙ্গে বেশি লোক ঢুকেছিল। তাহলে এখন অন্য নিয়ম কেন হবে?’’ পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটির সময়ই সুজাতা অতিরিক্ত জেলাশাসকের দফতরে ঢুকে পড়েন। তারপরেই পুলিশ সৌমিত্রর সঙ্গে থাকা বিজেপি নেতাদের বার করে দেওয়ার চেষ্টা করে। সৌমিত্র প্রতিবাদ জানান। শেষে স্ত্রীকে অফিস থেকে ডেকে নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মনোনয়ন দিতে ঢোকেন।

এরপরেই সুজাতা পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে অভিযোগ করেন, “আপনারা সব দলদাসে পরিণত হয়েছেন। এত তোষামোদ করেন কেন? আগামী দিনে বিজেপিই ক্ষমতায় আসছে।’’ যদিও জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘তৃণমূলের মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনেও দফতরে প্রার্থীর সঙ্গে চার জনই ভিতরে ঢুকেছিলেন।’’ তৃণমূল নেতৃত্বও সে দিন বিজেপির অভিযোগ মানতে চাননি।

বাঁকুড়া শহরে অবশ্য মনোনয়নের আগে বিরাট মিছিল করায় তৃপ্ত বিজেপির দুই প্রার্থী। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের দাবি, ‘‘তৃণমূলের হুমকি সত্ত্বেও মিছিলে প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষ ছিলেন।’’ যদিও পুলিশের দাবি, বড়জোর হাজার পাঁচেক মানুষ ছিলেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁয়ের পাল্টা দাবি, ‘‘আমরা বিজেপির তিন গুণ ভিড় করেছি।’’

লোকসভা ভোট ২০১৯ Lok Sabha Election 2019 BJP Saumitra Khan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy