নির্যাতিতা: শোনাচ্ছেন বিবরণ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
পণের দাবিতে স্ত্রী-র গলায় গামছার ফাঁস, সাইকেলের পাম্প দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল। গুরুতর আহত অবস্থায় অণিমা শীল নামে ওই বধূ বোলপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইলামবাজারের নীলডাঙার বৃহস্পতিবারের ঘটনা। নির্যাতিতার স্বামী চিরঞ্জিৎ শীল পলাতক। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আত্মীয়েরাই অণিমাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
গত মঙ্গলবারই কাটোয়ার এক বধূকে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ওই বধূর দাবি ছিল, ‘‘মেয়ের জন্মের পরেই বাপের বাড়ি থেকে ৬০ হাজার টাকা আনতে চাপ দেওয়া হয়। প্রায়ই মারধর করা হতো। বছর চারেক আগে তাড়িয়েও দেওয়া হয়েছিল।’’ শ্বশুরবাড়ির লোকের বিরুদ্ধে তাঁর পিঠে বঁটির বাঁট দিয়ে মারধরের অভিযোগও ওঠে। পড়শিরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। ঘটনা হল, দু’টি ক্ষেত্রেই বিয়ের বহু দিন পরেও পণের দাবিতে অত্যাচার হয়েছে। বোলপুরের ঘটনায় বিয়ের পনেরো বছর পরেও পণের টাকা দাবি করা হয়েছে। কাটোয়ার ক্ষেত্রে আট বছর।
আহত বধূ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পনেরো আগে ইলামবাজারের নীলডাঙা গ্রামের অণিমার সঙ্গে বর্ধমানের আউশগ্রামের গোপালপুরের চিরঞ্জিতের বিয়ে হয়। তাঁদের একটি পুত্র সন্তানও আছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি হত। এ দিন, ইলামবাজারে নিজের শ্বশুরবাড়িতে এসে স্ত্রী-র সঙ্গে বচসায় জড়ায় চিরঞ্জিৎ। এরপরেই স্ত্রীকে সাইকেলের পাম্প দিয়ে মারধর শুরু করে। পরে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়েও টানাটানি করে। এই দৃশ্য দেখে প্রতিবেশীরা গৃহবধূকে উদ্ধার করেন। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। যদিও, এই ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে অণিমা বলেন, “বিয়ের পর থেকেই আমাদের মধ্যে পণের টাকা নিয়ে অশান্তি চলছে। প্রায়ই আমাকে মারধর করত। ওই একই ঘটনায় এ দিনও মারধর করে। প্রথমে সাইকেলের পাম্পার, পরে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে টানতে থাকে।’’ নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা মঙ্গলবারের ঘটনাটি নিয়ে জানিয়েছিলেন, মহিলাদের জন্য একাধিক আইন রয়েছে। উনি আগে আইনের দ্বারস্থ হলে এত দিন ভুগতেন না। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ দায়ের হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy