Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩
margram

বিস্ফোরণে নিহত লাল্টুর দেহ পৌঁছল মাড়গ্রামে, থমথমে এলাকায় চলছে পুলিশি টহলদারি

শনিবার রাতে বিস্ফোরণের পর থেকে থমথমে বীরভূমের মাড়গ্রাম। সোমবার ওই ঘটনায় নিহত লাল্টু শেখের দেহ পৌঁছয় গ্রামে। এলাকায় জারি রয়েছে পুলিশি টহলদারি। ধৃতদের হাজির করানো হয়েছে আদালতে।

তখন মাড়গ্রামে পৌঁছেছে লাল্টু শেখের দেহ।

তখন মাড়গ্রামে পৌঁছেছে লাল্টু শেখের দেহ। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০০
Share: Save:

মাড়গ্রাম বিস্ফোরণে নিহত লাল্টু শেখের দেহ সোমবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে পৌঁছল তাঁর গ্রামে। শনিবার রাতে বিস্ফোরণের পর থেকেই থমথমে গোটা এলাকা। ফলে লাল্টুর দেহ পৌঁছতেই নতুন করে উত্তেজনা যাতে না ছড়ায় সে জন্য পুলিশি নিরাপত্তা ছিল গ্রামে। সোমবারই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে লাল্টুর। অন্য দিকে, দুই তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগে সোমবার ধৃত ৬ জনকে হাজির করানো হয় আদালতে। তাঁদের ৮ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Advertisement

শনিবার রাতে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল নিউটন শেখের। গুরুতর জখম অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল লাল্টু শেখকে। রবিবার মৃত্যু হয় লাল্টুর। সোমবার বেলার দিকে তাঁর দেহ পৌঁছয় মাড়গ্রামে। শনিবারের ঘটনার পর থেকে থমথমে গোটা এলাকা। সেখানে রয়েছে পুলিশি টহলদারি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, মাড়গ্রাম-১ পঞ্চায়েতের প্রধান তথা লাল্টুর দাদা ভুট্টু শেখের সঙ্গে ধৃত সুজাউদ্দিন শেখের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। আব্দুল গফ্‌ফর নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওদের দু’জনের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই অশান্তি।’’ শনিবারের ঘটনা তারই ফলশ্রুতি বলে মনে করছেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজাউদ্দিন মাড়গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। তিনি দায়িত্বে ছিলেন ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। ২০১৮ সালে তৃণমূলের টিকিটে পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হন সুজাউদ্দিন। কিন্তু তাঁকে প্রধান না করে ভুট্টুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তখন থেকেই দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

তৃণমূলের অভিযোগ, গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সুজাউদ্দিন। মাস তিনেক আগে তিনি আবার ফিরে যান কংগ্রেসে। তৃণমূলের মাড়গ্রাম-২ ব্লকের সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, ‘‘সুজাউদ্দিন এক সময় তৃণমূল করেছেন। তবে সক্রিয় ভাবে কোনও দিনই যুক্ত ছিলেন না। মূলত বিজেপির হয়ে কাজ করতেন। বিধানসভাতেও বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। ভুট্টু শেখ ওই এলাকার ভাল সংগঠক। তাই এই আক্রোশ।’’ যদিও সুজাউদ্দিনের স্ত্রী সোনালি বেগমের দাবি, ‘‘আমার স্বামী তৃণমূল করত। ও এখনও পঞ্চায়েতের সদস্য। দলের সমস্ত মিটিং-মিছিলেও যেত।’’

সুজাউদ্দিন যে বিজেপিতে ছিলেন, তা মেনে নিয়েছে বীরভূম বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের আগে সুজাউদ্দিন শেখ বিজেপি করেছেন এটা সত্যি। কিন্তু ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে উনি আমাদের দল ছেড়ে গিয়েছেন। ওঁর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা করছি। আমরা দোষীদের শাস্তি চাইছি।’’

Advertisement

শনিবারের ঘটনা নিয়ে বীরভূম তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ দোষারোপ করছে কংগ্রেসকে। এ নিয়ে মাড়গ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রসিদ বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। তাতে সব সত্যিটা বেরিয়ে আসবে। প্রমাণ হয়ে যাবে কারা দোষী আর কারা নির্দোষ।’’

মাড়গ্রামকাণ্ডে অভিযুক্ত ৬ জনকে সোমবার রামপুরহাট মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে হাজির করানো হয় । ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, বিস্ফোরক আইন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.