Advertisement
E-Paper

পরিযায়ী শ্রমিকদের যন্ত্রণা পুজোর থিমে

কেরলে সন্তানসম্ভবা হাতিকে বাজি ভরা আনারস খাইয়ে মারার ঘটনা ফুটে উঠেছে তাদের মণ্ডপে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:৫৪
সেই ছবি: বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়া ইয়ং স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপে। নিজস্ব চিত্র ।

সেই ছবি: বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়া ইয়ং স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপে। নিজস্ব চিত্র ।

ব্যাগের উপরে ঘুমন্ত শিশু। সে ব্যাগ টেনে নিয়ে চলেছেন মা। দেশজোড়া পূর্ণ লকডাউনের এই ছবি নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। এ বার মাটির মডেলে সেই ছবিই উঠে এসেছে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়ার বাগদিপাড়ার ইয়ং স্পোর্টিং ক্লাবের সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে। সেখানে মডেল দিয়ে সাজানো হয়েছে লকডাউনের এমনই নানা চিত্র। অন্য মডেলে তুলে ধরা হয়েছে গৃহবন্দি দিনমজুর পরিবারের বারান্দায় কাজের অপেক্ষায় স্বামী-স্ত্রী। জানালা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে ঘরবন্দি শিশু। ক্লাবের সম্পাদক বিপদতারণ বাগদি বলেন, ‘‘আমাদের দিনমজুর পাড়া। তাই লকডাউনে দিনমজুর আর পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টই আমাদের ‘থিম’।’’

শুধু সেখানেই নয়, বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর থেকে বাঁকুড়া, খাতড়া থেকে ইঁদপুর— নানা জায়গায় এ বার পুজোয় ‘থিম’-এ জোর দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়ার শহরের কলেজ মোড় টেন্টের ৩৮তম বর্ষের ‘থিম’ ‘সাতটি কাকে দাঁড় বায়’। একটি বড় নৌকার আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। যার দাঁড় বাইছে সাতটি কাক। পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় কুণ্ডু বলেন, ‘‘মোবাইল ফোনের যুগে বাংলা ছড়ার উপরে শিশুদের আকর্ষণ কমছে। বাংলা ছড়াকে আকর্ষণীয় করতেই এই থিম।’’ শহরের যোগেশপল্লির মোড়ে ফ্রেন্ডস ফিফটির এ বার ২৬তম বর্ষ। তাদের ‘থিম’— ‘গ্রাম বাংলা’। খড়ের চালা ও মাটির ঘরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ।

বিষ্ণুপুর শহরের কুরবানতলার স্বাধীন ক্লাবের ‘থিম’-এ ‘বন্যপ্রাণ রক্ষার বার্তা’। কেরলে সন্তানসম্ভবা হাতিকে বাজি ভরা আনারস খাইয়ে মারার ঘটনা ফুটে উঠেছে তাদের মণ্ডপে। ক্লাবের পক্ষে নুর মহম্মদ বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণ রক্ষা ও তাদের বিরক্ত না করার বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে আমাদের মণ্ডপের থিমে। কৃষ্ণগঞ্জ মধ্যাহ্ন ক্রিকেট দলের এ বারের ‘থিম’ ‘মোদের গরব মোদের আশা/ আ মরি বাংলা ভাষা।’। ক্লাবের পক্ষে সায়ন্তন নাগ বলেন, ‘‘সরকারি ক্ষেত্রে আরও বেশি করে ব্যবহার হোক বাংলা ভাষা। এই দাবিই রাখা হয়েছে এ বারের থিমে।’’ কুসুমবনি দেশপ্রেমি সঙ্ঘের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে সহজ পাঠের আদলে।

বড়জোড়ার শুশুনিয়া বিবেকানন্দ ক্লাবের এ বারের থিম কৃষি। ধানের মড়াইয়ের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। ক্লাবের তরফে সমীর ঘোষ বলেন, ‘‘লকডাউনে গোলার ধান আর কৃষিকাজ আমাদের গ্রাম বাংলার মানুষকে রক্ষা করেছে। তাই এ বারের থিম কৃষি।’’

বিষ্ণুপুর শিরোমণিপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা তাদের মণ্ডপে নিজেরাই হাতে খড়ি দিলেন কলেজের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির ৫৩ জন শিশুকে। ওই কলেজের পড়ুয়া তথাগত বিশ্বাস, রুদ্রাণী ঘোষ বলেন, ‘‘আগামী প্রজন্মের সবাই পড়াশোনা শিখুক। এটাই আমাদের ইচ্ছে।’’

বিষ্ণুপুর মিউজ়িক কলেজে তাদের চিরাচরিত প্রথা মেনে বিষ্ণুপুরের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের যুগপুরুষ সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিন্দুবাসিনী দেবীর ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রগুলির পুজো করানো হয়। উপস্থিত ছিলেন গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যা স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্দাসের দশরথবাটি গ্রামের নারীদের সংগঠন ‘জাগো নারীর’ তৈরি মণ্ডপে ফুটে উঠেছে স্বনির্ভরতার বার্তা। তাঁদের হাতের কাজেই সেজে উঠেছে মণ্ডপ।

saraswati puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy