E-Paper

আটের পরে আট, কুকুরের মৃত্যুমিছিল

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল থেকেই গোমরা গ্রামে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ১২টি পথকুকুরকে মুখে গ্যাঁজলা ওঠা অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৪
নানুরে গোমরা গ্রামে মৃত কুকুর এবং অসুস্থ চিকিৎসা চলছে।

নানুরে গোমরা গ্রামে মৃত কুকুর এবং অসুস্থ চিকিৎসা চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

সিউড়ির পরে নানুর। ফের পথকুকুর ও কুকুরছানার অস্বাভাবিক মৃত্যু। দু’দিন মিলিয়ে মারা গেল ১৬টি কুকুর!

সিউড়ির টিনবাজারের মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার হয়েছিল ৮টি কুকুরছানার দেহ।প্রত্যেকের মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল। আর নানুরের গোমড়া গ্রামে এক দিনে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮টি পথকুকুরের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সিউড়ির মতো এ ক্ষেত্রেও বিষক্রিয়ার ফলে কুকুরগুলির মৃত্যু হয়েছে বলে ব্লক প্রাণিসম্পদ বিভাগের অনুমান। কুকুরগুলিকে খাবারের সঙ্গে ফসলে দেওয়া কীটনাশক মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছে বলে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল থেকেই গোমরা গ্রামে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ১২টি পথকুকুরকে মুখে গ্যাঁজলা ওঠা অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ৭টি কুকুর পুরোপুরি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা কয়েকটি কুকুরের দেহ বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিয়ে আসেন। তার পরে ব্লক প্রাণিসম্পদ দফতরে খবর যায়। প্রাণী চিকিৎসক সিদ্ধার্থ সাহা এবং ভিএফএস হিরন্ময় ভট্টাচার্য গ্রামে ছুটে যান। তাঁদের চিকিৎসার পরে ৪টি কুকুরের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক তিনটিকে বাঁচানো গেলেও একটি ছানাকে বাঁচানো যায়নি।

গ্রামবাসী পৃথ্বীরাজ দাস, জগন্নাথ মণ্ডলরা বলেন, ‘‘গ্রামে সব মিলিয়ে প্রায় ১৫-২০টি কুকুর ছিল। বুধবার সকাল থেকেই কুকুরছানাগুলি বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পূর্ণবয়স্ক কুকুরগুলি প্রথম দিকে ছানাদের ঘিরে করুণ সুরে ডাকাডাকি করছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদেরও একই অবস্থা হয়।’’ পল্টু মণ্ডল, বিজয় দাস জানান, সব মিলিয়ে ৮টি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। ৩-৪টি কুকুর নিখোঁজ রয়েছে। তারা অন্য কোথাও মরে পড়ে থাকতে পারে বলে তাঁদের অনুমান।

প্রাণী চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমরা যখন ওই গ্রামে যাই, তখন একটি বাচ্চা-সহ ৪টি কুকুর অসুস্থ ছিল। তার মধ্যে বাচ্চাটিকে বাঁচানো যায়নি। বাকি ৩টির অবস্থা স্থিতিশীল। গ্রামবাসীদের কাছে জেনেছি ৮টি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। দেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। তাই ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি।’’ ব্লক প্রাণিসম্পদ আধিকারিক মিহির কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, বিষক্রিয়াজনিত কারণেই কুকুরগুলির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান। গ্রামটি এখন দফতরের নজরদারির মধ্যে রয়েছে। পশুপাখিদের প্রতি মানবিক হওয়ার জন্য ধারাবাহিক ভাবে গ্রামে গ্রামে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পথকুকুরদের নিয়ে কাজ করা সিউড়ির একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের সম্পাদক রাজর্ষি ঘোষ ও সদস্যা সূপর্ণা সাউ বলেন, ‘‘প্রতি বছরই এই সময় এই ধরনের ঘটনা ঘটে। ছানাগুলো না-বুঝেই অনেকের বাড়িতে ঢুকে নোংরা করে দেয়। সেই রাগে অনেকে নৃশংস ঘটনা ঘটায়। তবে, এ বারে সেই প্রবণতা অনেকটাই বেশি।’’ তাঁদের দাবি, অবলা পথকুকুরের পিঠে গরম জল কিংবা তেল দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তাঁরা প্রশাসনের কাছে সচেতনামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি কীটনাশক বিক্রির ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের দাবি জানাচ্ছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nanur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy