Advertisement
১৬ মে ২০২৪

৪ ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায়, এল রিপোর্ট

চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসন। রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর পরে বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন মৃতের ছেলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০৩
Share: Save:

চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসন।

রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর পরে বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন মৃতের ছেলে। হাসপাতালের কাছে রিপোর্ট তলব করেন মহকুমাশাসক। বুধবার রাতেই হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেন মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘রিপোর্ট দেখে আমার মতামত-সহ তা অতিরিক্ত জেলাশাসককে (উন্নয়ন) পাঠিয়েছি।’’

তবে প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী বৈদ্যনাথ চট্টোপাধ্যায়ের (৬৪) মৃত্যুর পিছনে যে অভিযোগ উঠেছে, তার সারবত্তা পাওয়া যাচ্ছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘হাসপাতাল সুপারকে রোগীর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আলোচনার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ শ্বাসকষ্ট নিয়ে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন রঘুনাথপুর থানার বাগমানমি গ্রামের ওই বৃদ্ধ। রাতে জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক তাঁকে দেখে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়ে ভর্তি করান মেডিসিন বিভাগে। যদিও রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, ভর্তি করার পরে অক্সিজেন দেওয়া হলেও আর কোনও চিকিৎসক তাঁকে দেখতে আসেননি। চার ঘণ্টার বেশি সময় বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকার পরে বুধবার সকাল সাতটা নাগাদ হাসপাতালেই মারা যান তিনি। চিকিৎসায় গফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয়েরা।

প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত রিপোর্টে চিকিৎসকদের গাফিলতির বিষয়টি স্পষ্ট করা গেলেও কোন চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর গাফলতি আছে, তা পরিষ্কার নয়।

নিয়ম অনুযায়ী, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকই প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। রোগীকে ভর্তি করার টিকিটে তিনি লিখে দেন, রোগীর অবস্থা কেমন এবং ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের রোগীকে দেখাটা কতটা জরুরি। হাসপাতালের একটি সূত্রের খবর, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানিয়ে ছিলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে দ্রুত ডাকার পরামর্শও দিয়েছিলেন তিনি। ওয়ার্ডে থাকা নার্সরা সেই মতো ‘কল বুক’ করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে খবরও পাঠিয়েছিলেন। যদিও হাসপাতালেরই আর একটি সূত্রে জানাচ্ছে, ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক বুধবার সকালে জানান, রাতে ওয়ার্ড থেকে তাঁকে ডাকাই হয়নি। হাসপাতাল সুপারকে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। কথা বলা যায়নি চিকিৎসকদের সঙ্গেও। তা হলে এক্ষেত্রে কার গাফিলতি? প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘হাসপাতাল সুপারের দেওয়া রিপোর্টে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট নয়। যা করার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকই করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patient Death negligence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE