Advertisement
E-Paper

কাতরাচ্ছেন রোগিণী, কোথায় ডাক্তার-নার্স

ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে। এ বার অভিযোগের তির বাঘমুণ্ডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে। অভিযোগ, পেটে যন্ত্রণা, বমি ও পায়খানার উপসর্গ নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা এক রোগিণীকে প্রায় তিন ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকতে হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১২

ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে। এ বার অভিযোগের তির বাঘমুণ্ডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে। অভিযোগ, পেটে যন্ত্রণা, বমি ও পায়খানার উপসর্গ নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা এক রোগিণীকে প্রায় তিন ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকতে হয়েছে। পরে বিডিও, বিধায়ককে ফোনে ঘটনাটি জানালে নড়েচড়ে বসেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিক ও কর্মীরা। তারপরেই ওই রোগিণীর চিকিৎসা শুরু হয়।

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ। বাঘমুণ্ডি ব্লকেরই ডাভা গ্রাম থেকে হরণী মাছুয়ার নামে এক রোগিণীকে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁরা গিয়ে দেখেন, কেউ তাঁদের রোগীকে দেখতে আসছেন না।

রোগিণীর দেওর পিন্টু মাছুয়ার জানান, দুপুর থেকেই তাঁর বৌদির বমি ও পায়খানা শুরু হয়। সন্ধ্যার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁরা হরণীকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তখন চিকিৎসক ছিলেন না। কোয়ার্টারে খোঁজ করতে গেলে এক চিকিৎসক রোগিণীকে নিয়ে গিয়ে ইন্ডোরে ভর্তি করতে বলেন। কিন্তু ইন্ডোরে গিয়ে দেখি, কোনও চিকিৎসক বা নার্স কেউই নেই। এ দিকে বৌদি যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন, অন্যদিকে চিকিৎসা করানোর মতো কেউ নেই। কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না।’’ তাঁরা উপায় না দেখে খবর পাঠান স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুব্রত কুমারকে। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাউকে না দেখে অবাক হয়ে যাই। অথচ ওই মহিলা খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। শেষে উপায় না দেখে বিডিও ও বিধায়ককে ফোন করে ঘটনাটি জানাই। তারও কিছু পরে চিকিৎসক, নার্স এসে চিকিৎসা শুরু করেন। ততক্ষণে রোগিণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রায় তিন ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়েছিলেন।’’

বাঘমুণ্ডির বিডিও অভিষেক বিশ্বাস বলেন, ‘‘বুধবার রাত্রে রাত প্রায় ৯টা নাগাদ ফোনে খবর পাই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক রোগিণীকে নিয়ে যাওয়া হলেও তিনি বিনা চিকিৎসায় পড়ে রয়েছেন। তাঁকে দেখার মতো কেউই নেই। আমি তখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লোকজনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে ওই রোগিণীকে দেখতে বলি।’’

জঙ্গলমহলে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে যেখানে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, সেখানে এমন অভিযোগ কেন উঠছে? বাঘমুণ্ডি ব্লক মেডিক্যাল অফিসারকে ফোন করা হলে তিনি লাইন কেটে দেন। তবে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, ‘‘আমি বুধবার রাতেই ওই অভিযোগটি পেয়েছি। যে চিকিৎসক ওই রোগিণীকে প্রথমে দেখেছিলেন তাঁরই অন্তত চিকিৎসা শুরু করা উচিত ছিল। ওই রকম রোগীর আগেই স্যালাইন দেওয়া দরকার। কেন এমনটা হল, খোঁজ নিচ্ছি। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য বাঘমুণ্ডির ব্লক মেডিক্যাল অফিসার-সহ কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিককে (১) দিলীপ মাহাতো ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বাঘমুণ্ডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে চারজন চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন বুধবার ছুটিতে ছিলেন। নার্স পাঁচজন রয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন বুধবার কাজে ছিলেন। তবে নার্সদের ডিউটি রোস্টারে গোলমাল থাকায় সন্ধ্যায় কিছু সময়ের জন্য কোনও নার্স ছিলেন না। ওই গোলমাল মেটানো হয়েছে। রোগিণী এ দিন ভাল রয়েছেন।

Patient Doctor Nurse
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy