পুজোর ভিড়।
মণ্ডপে বিদ্যা বালন। তাঁকে ঘিরে তুমুল ভিড়। অথচ কোনও বিশৃঙ্খলা হল না। চুম্বকে, এই ঘটনাই পুরুলিয়ার পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের এমনই সাফল্য।
পুজোয় মণ্ডপ চষে বেড়ানোয় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বৃষ্টি, আবহাওয়ার এমন পূর্বাভাষ জেনে এ বার অনেকে ষষ্ঠীতেই দূরের ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা ছকে ফেলেছিলেন। সে দিন থেকেই পুরুলিয়া থেকে নিতুড়িয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় থিকথিকে ভিড় নেমেছিল। কিন্তু পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের যুগলবন্দি সে সব সামলে দিয়ে সবার প্রশংসা কুড়িয়ে নিল।
পুরুলিয়া শহরেও ভিড়ে উপচে পড়া রাস্তায় পুলিশ-সিভিক কর্মীদের উপস্থিতি বেশি পরিমাণেই ছিল। জেলার বিভিন্ন থানা এলাকার রাস্তাঘাটে শুধু দিনের বেলাতেই নয়, রাতেও মোটরবাইক আরোহীদের হেলমেট রয়েছে কি না, সেই তল্লাশিও চালানো হয়েছে সমানে। জেলা পুলিশেরই এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এর ফলে দুর্ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।’’
নিতুড়িয়া, সরবড়ি, বাথানেশ্বর, পারবেলিয়া এলাকার একাধিক বিগ বাজেটের পুজো বা কাশীপুর পঞ্চকোট রাজবাড়ির ঐতিহ্যের পুজো, কিংবা পুরুলিয়া, ঝালদা শহরের পুজো— ঠাকুর দেখতে রাস্তায় বেরিয়ে পুলিশ-সিভিক ভলান্টিয়ারদের সক্রিয়তা দেখে আমজনতা খুশি। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা অচিন্ত্যময় বন্দ্যোপাধ্যায় ষষ্ঠীতে নিতুড়িয়া এলাকায় ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলেন। নবমীর বিকেলে বাঁকুড়া থেকে সপরিবারে কাশীপুর পঞ্চকোট রাজবাড়ির পুজো দেখতে এসেছিলেন আশিস দাস, পুরুলিয়া শহরের জগন্নাথ দত্তেরা। সকলেই প্রায় এক মত— ‘‘পুজোয় দিন-রাত পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরা যে ভাবে যান নিয়ন্ত্রণ ও ভিড় সামলেছেন, তা প্রশংসার দাবি রাখে।’’
পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকেই নিতুড়িয়া এলাকার পুজোগুলির উদ্বোধন করেন জেলার মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। পরের দিন ষষ্ঠীতে বিদ্যা বালন বাথানেশ্বরের উদ্বোধনে আসেন। ফলে জেলাবাসীর অন্যতম গন্তব্য হয়ে ওঠে নিতুড়িয়া এলাকার মণ্ডপগুলি। অভিনেত্রীকে ঘিরে উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। রঘুনাথপুরের সুকুমার মণ্ডল, আদ্রা রেলশহরের বাসিন্দা শান্তি চক্রবর্তীরা বলেন, ‘‘রাস্তায় গাড়ির ভিড় থাকলেও পুলিশের সক্রিয়তায় ভোগান্তি হয়নি।’’ একই অভিজ্ঞতা ঝালদার বাসিন্দা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ও বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়দেরও।
কাশীপুর পঞ্চকোট রাজবাড়িতে স্ত্রী ঊষা বাউরিকে নিয়ে পুজো দেখতে এসেছিলেন পাড়ার বিধায়ক উমাপদ বাউরি। এসেছিলেন জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় নিজেও। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রচণ্ড ভিড় ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব কিছুই নির্বিঘ্নে মিটেছে।’’
জেলা পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আগেভাগে পরিকল্পনা করে সব সামলানো হয়েছে। এটা দলগত সাফল্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy