Advertisement
E-Paper

লড়াই শুধু ভোটবাক্সে, সৌহার্দের ছবি কুইঠায়

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে যেখানে শাসক-বিরোধী সংঘাত তুঙ্গে, সেখানে এমন ব্যতিক্রমী ছবি, দুবরাজপুরের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুইঠা গ্রামে।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৩ ০৫:১৪
একই দেওয়ালে পাশাপাশি প্রচার সিপিএম ও তৃণমূলের। দুবরাজপুরের সাহাপুরের কুইঠা গ্রামে।

একই দেওয়ালে পাশাপাশি প্রচার সিপিএম ও তৃণমূলের। দুবরাজপুরের সাহাপুরের কুইঠা গ্রামে।

কাছাকাছি দুই দলের কার্যালয়। রাস্তার একদিকে সিপিএমের, অন্যদিকে তৃণমূলের। ভোট প্রচার নিয়ে দুটি কার্যালেয় কর্মীদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। তবে তার ফাঁকেই সামনের চায়ের দোকানে বসছে আড্ডা। দুই দলের কর্মী সমর্থকেরা মুড়ি ঘুগনি বা মুড়ি কুমড়োর তরকারি খেয়ে দলের প্রার্থীদের সমর্থনে দেওয়াল লিখতে বের হচ্ছেন। এক দোকান থেকেই কিনছেন প্রচারের রং।

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে যেখানে শাসক-বিরোধী সংঘাত তুঙ্গে, সেখানে এমন ব্যতিক্রমী ছবি, দুবরাজপুরের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুইঠা গ্রামে। নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় ‘গণতান্ত্রিক’ পরিবেশ যাতে বজায় থাকে সে ব্যাপারে বদ্ধপরিকর স্থানীয় বাসিন্দা থেকে রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘একসঙ্গে সবাই থাকি। অহেতুক ঝামেলা চাই না।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহাপুর এলাকায় মোট ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন রয়েছে। তার মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৪টি আসনে শাসক দল জয়ী হয়েছে। ১৩টি আসনে বিরোধী প্রার্থী আছেন। চারটিতে বিজেপি। ১৩টিতে সিপিএম। সেই তালিকায় রয়েছে কুইঠা ও দমদমা। দুটি পাশাপাশি আসন। দ্বিমুখী লড়াই সেখানে।

কুইঠা আসনে শাসক দলের প্রার্থী মাহিলা বিবি, বিপক্ষে সিপিএম প্রার্থী শরিফা বিবি। অন্য দিকে, দমদমা সংসদে শাসক দলের শেখ আজিজুলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন সিপিএমের শেখ উসমান। সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি পর্ব চলছে। দু’পক্ষই দেওয়াল লিখন শুরু করেছে। কিন্তু অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে। ‘‘লড়াই যা হবে সেটা ভোটবাক্সে, তার বাইরে নয়’’, বলছেন স্থানীয় তৃণমূল ও সিপিএম কর্মীরা।

শাসক দলের অঞ্চল সভাপতি শেখ মহিম এ বার পঞ্চায়ত সমিতির প্রার্থীও বটে। তিনি বলছেন, ‘‘বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে ভোট হবে। জয়ী প্রার্থীকে এলাকার মানুষের ভোটে জিতে আসতে হবে। এমনটাই সিদ্ধান্ত।’’ অন্য দিকে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনারুল হক বলছেন, ‘‘এটাই তো সবাই চায়। এখনও ওই দুটি সংসদে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে বলতে হবে।’’

গ্রামের যে অংশে দু’টি দলের কার্যালয় তারপাশেই ছোট্ট হার্ডওয়্যারের দোকান মনিরউদ্দিন শাহের। তিনি বলছেন, ‘‘সকাল বিকেল আমার দোকানের সামনে দু’দলের কর্মীদের আড্ডা হয়। আমার দোকান থেকে প্রচারের জন্য লাল, গেরুয়া, সবুজ, কালো রং কিনেছেন দু’পক্ষই। একই ছবি পাশের চায়ের দোকানে। দু’দলের কর্মীরা বলছেন, ‘‘বেশ মেজাজে চলছে ভোট প্রচার।’’ তবে রাজনৈতিক আলোচনা হলেও স্পর্শকাতর কোনও বিষয় সযত্নে এড়িয়ে যাচ্ছেন সকলেই। উদ্দেশ্য একটাই, শান্তি বজায় রাখা।

সাহাপুর পঞ্চায়েত এক সময় বোমা-বারুদের জন্য কুখ্যাত ছিল। সেখানে এমন বদলে যাওয়া ছবি দেখে অবাক হচ্ছেন কেউ কেউ। আড়ালে তাঁরা বলছেন, ‘‘বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধানের গোয়ালঘর বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া এবং ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের পরে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে এই এলাকা। ফের যাতে ঝামেলা না হয়, তাই সতর্কতা।’’

West Bengal Panchayat Election 2023 dubrajpur Panchayat Election 2023
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy