Advertisement
E-Paper

বিদ্যুৎ কাটা গেল হোটেল-লজের

দ্বারকা নদ বাঁচাতে আরও কড়া হল জাতীয় পরিবেশ আদালত! পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্রহীন হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিকে আদালত আগেই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সম্প্রতি আরও একধাপ এগিয়ে আদালত তারাপীঠের বেশ কিছু হোটেল-রেস্তোরাঁর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা নির্দেশ দিয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:২৩
ছাড়পত্রহীন হোটেলের বিদ্যুৎ সংযোগ কাটার কাজে ব্যস্ত কর্মীরা। বৃহস্পতিবার তারাপীঠে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ছাড়পত্রহীন হোটেলের বিদ্যুৎ সংযোগ কাটার কাজে ব্যস্ত কর্মীরা। বৃহস্পতিবার তারাপীঠে তোলা নিজস্ব চিত্র।

দ্বারকা নদ বাঁচাতে আরও কড়া হল জাতীয় পরিবেশ আদালত!

পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্রহীন হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিকে আদালত আগেই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সম্প্রতি আরও একধাপ এগিয়ে আদালত তারাপীঠের বেশ কিছু হোটেল-রেস্তোরাঁর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ মেনেই বৃহস্পতিবার থেকে পর্ষদের অনুমোদনহীন ৭০টি হোটেল-রেস্তোরাঁর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু করল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম। তার জেরে অবশ্য হঠাৎ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন তারাপীঠে পুজো দিতে ওই সব হোটেলে ওঠা পুণ্যার্থীরা।

বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির রামপুরহাট বিভাগীয় দফতরের আধিকারিকরা তারাপীঠের বেশ কিছু হোটেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বীরভূম রিজিওনাল ম্যানেজার তপনকুমার দে বলেন, “তিন দিন আগে রামপুরহাট বিভাগীয় অফিসে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল থেকে তারাপীঠে ৭০টি হোটেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চিঠি আসে। আদালতের নির্দেশে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র না থাকা তালিকাভূক্ত হোটেলগুলিতে সেই মতো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে।” আগামী দশ দিনের মধ্যে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানিকে এ ব্যপারে আদালতের কাছে রিপোর্ট দিতেও হবে।

এ দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে তারাপীঠে গিয়ে দেখা যায়, আদালতের নির্দেশ অনুসারে তালিকা দেখে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কর্মীরা তারাপীঠের মুন্ডমালিনীতলার দিকে হোটেলগুলির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছেন। এই দলটিতে ছিলেন রাজ্য কোম্পানির রামপুরহাট বিভাগীয় অফিসের ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড ল প্রিভেনশন সেলে’র আধিকারিক আবদুস সালাম, স্পেশ্যাল অফিসার নির্মলকুমার চৌধুরী, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির মাড়গ্রাম গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের সহকারী বাস্তুকার শিশু নাথ দাস-সহ অন্য কর্মীরা। তাঁরা মাড়গ্রাম থানার পুলিশ সহযোগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ করেন।

বেশ কিছু হোটেল মালিক এবং আশ্রমের কর্মীরা জানান, তাঁরা পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন পত্র জমা দেওয়ার পরও তাঁদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তারাপীঠ মুন্ডমালিনী তলার দিকে একটি হোটেলের মালিক শক্তিপদ দেবাংশী বলেন, “বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নোটিস আগাম পেয়ে কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দুর্গাপুর শাখায় পর্ষদের ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে এসেছি। সেখান থেকে বলা হয় আর কিছু হবে না। আজ সকালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ফলে বেকায়দায় পড়েছি।” অন্য একটি হোটেলের মালিক পরেশচন্দ্র বিশ্বাস অবশ্য জানালেন, “আমাদের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে কোনও নোটিস নেই। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য হোটেলের মধ্যে থাকা আবাসিকদের অসুবিধায় পড়তে হবে।” একই কথা জানালেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের তারাপীঠ আশ্রমের কেয়ার টেকার স্বামী দীনেশানন্দ মহারাজ। অন্য একটি হোটেলের মালিক জয়দেব মণ্ডল জানালেন, “সাত দিন পরে হোটেলে একটি অনুষ্ঠানের জন্য অগ্রিম ভাড়া নেওয়া আছে। এখন যদি হোটেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়, তা হলে চরম অসুবিধার মধ্যে পড়ব।”

অন্যদিকে তারাপীঠ বেড়াতে এসে এ রকম পরিস্থিতিতে চরম অসুবিধার পড়তে হয়েছে পর্যটকদের। কলকাতার নাগের বাজার এলাকা থেকে রেল কর্মী বিশ্বজিৎ সাহা ৯ জনকে নিয়ে বুধবার বিকালে তারাপীঠ এসেছিলেন। তিনি বলেন, “আগে থেকে জানতে পারলে এ রকম ভাবে আসতাম না। নানা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।”

পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি।” দফতরের দুর্গাপুর শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য বেশ কিছু হোটেল মালিক ৯ মার্চের আগে আবেদন জানাননি। আবার কিছু হোটেল মালিক আবেদন করেছে। সেগুলি মামলার পরবর্তী শুনানিতে তোলা হবে। যারা ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন করেনি, তাঁদের হোটেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে।” তারাপীঠের লজ মালিক সমিতির সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায় অবশ্য জানান, লজ মালিকদের অনেকেই নিয়ম মেনে চলছে। যাঁরা ছাড়পত্র নেননি, তাঁদের ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এখন যদি কেউ না নিয়ে থাকে, তার দায় লজ মালিক সমিতি নেবে না।

national enviournmental court Rampurhat power cut kalyan Rurda Tarapith Hotel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy