পাহারায় পুলিশ।নিজস্ব চিত্র।
নিয়ম মতো অজ্ঞান করে (লোকাল অ্যানাস্থেসিয়া) অস্ত্রোপচার করার কথা। অথচ কয়েক জন মহিলার বন্ধ্যাত্বকরণ অস্ত্রোপচার করা হয়েছে নাকি সজ্ঞানেই!
এমনই অভিযোগকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল বোলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ঘটনায় রোগীর পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পরবর্তী অস্ত্রোপচার বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। গন্ডগোলের আশঙ্কায় খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, ঝামেলা এড়াতে ভর্তি হওয়া বাকি ২৮ জন মহিলাকেই ওই অস্ত্রোপচারের জন্য বোলপুর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
যদিও রোগীর পরিজনদের ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বোলপুরের বিএমওএইচ সব্যসাচী রায়। তাঁর দাবি, ‘‘এখানে লোকাল অ্যানাস্থেসিয়া দিয়েই এমন অস্ত্রোপচার করা হয়। এ দিনও বোলপুরের মহকুমা সহ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা চিকিৎসক তারাপদ ঢলের উপস্থিতিতে সে ভাবেই ৬ জনের ওই অস্ত্রোপচার হয়েছে। সকলেই সুস্থ আছেন। ঝামেলার কারণে বাকিদের মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ব্লকের আশপাশের পঞ্চায়েতের ৩৪ জন মহিলা বন্ধ্যাত্বকরণের অস্ত্রোপচারের জন্য ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন। এ দিন সকালে তাঁদেরই মধ্যে মোলডাঙার বাসিন্দা চাঁদনি বিবি, আসমা বিবির অস্ত্রোপচার হয়। ওই গ্রামেরই মঞ্জিলা বিবির পরিজনদের অভিযোগ, ‘‘প্রত্যেককেই অজ্ঞান করানো হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু মাত্রা সঠিক না থাকায় ওঁরা কেউ-ই অজ্ঞান হননি। সজ্ঞানেই চিকিৎসকেরা তাঁদের অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। মঞ্জিলা আমাদের সে কথা জানিয়েছেন।’’ অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হতে আসা ওই মহিলাদের আত্মীয় জাকির মিঁয়া, রফিক শেখ, খাইরুন্নেসা বিবিদেরও দাবি, ‘‘জ্ঞান থাকা অবস্থাতেই অস্ত্রোপচার হয়েছে। ওঁরা খুবই কষ্ট পাচ্ছিল।’’ এ দিকে, ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ক্ষোভ বাড়ে ভর্তি হওয়া মহিলাদের পরিজনদের মধ্যে। প্রথমে চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি, সেখান থেকে বচসাও বাধে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয়ও ব্যবস্থার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। এর পরেই অবস্থা বেগতিক বুঝে এবং বাড়তি গন্ডগোলের আশঙ্কায় বোলপুর থানায় খবর দেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কতৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, বছরে প্রায় ৫০০ বন্ধ্যাত্বকরণ অস্ত্রোপচার হয় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সকলের ক্ষেত্রে লোকাল অ্যানাস্থেসিয়া ব্যবহার করাই বিধি। তারাপদবাবুর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সব্যসাচীবাবুর দাবি, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে ঘুমের মাত্রা কম হওয়ায় কেউ কেউ বুঝতে পারেন। এ ক্ষেত্রে হয়তো তা-ই হয়েছে। তবে, ঘটনার কথা জেলার সিএমওএইচ-কে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy