Advertisement
E-Paper

জল প্রকল্প চালু হবে কবে

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুভাষ মাহাতো। নানা দাবি, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রশান্ত পাল। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।হুড়া ব্লকে রয়েছে ফুটিয়ারি জলাধার। পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জাতীয় সড়ক ধরে লধুড়কা মোড় পর্যন্ত এলে সেখান থেকে সামন্য রাস্তা। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় মনোরম প্রকৃতির টানে অনেকেই ফুটিয়ারি আসেন।

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৯
প্রকৃতি সৌন্দর্য দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন পরিকাঠামো গড়েনি ফুটিয়ারি জলাধারে।—প্রদীপ মাহাতো

প্রকৃতি সৌন্দর্য দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন পরিকাঠামো গড়েনি ফুটিয়ারি জলাধারে।—প্রদীপ মাহাতো

হুড়া ব্লকে রয়েছে ফুটিয়ারি জলাধার। পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জাতীয় সড়ক ধরে লধুড়কা মোড় পর্যন্ত এলে সেখান থেকে সামন্য রাস্তা। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় মনোরম প্রকৃতির টানে অনেকেই ফুটিয়ারি আসেন। পিকনিকের মরসুমেও ভিড় বাড়ছে। কিন্তু এত কিছু সত্বেও পর্যটন বা পিকনিকের কোনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। পঞ্চায়েত সমিতির এ বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে কিছু করার কথা ভাবছে কি?

বিধানচন্দ্র মণ্ডল, কলাবনি

সভাপতি: চলতি আর্থিক বছরে আমরা ফুটিয়ারি জলাধার ও মাঙ্গুড়িয়া পাহাড়কে ঘিরে পর্যটন-পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প স্থির হয়েছে। শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থা প্রভৃতি করা হবে সেই টাকায়। রাস্তাঘাটের সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়নের জন্য গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

কলাবনি গ্রামে জলস্তর নিচে থাকায় বাসিন্দারা জলকষ্টে থাকেন। গ্রামের অদূরে ফুটিয়ারি নদী। বাম আমলে মাঙ্গুড়িয়া ও ফুটিয়ারি পানীয় জলে প্রকল্পের একই সঙ্গে শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাঙ্গুড়িয়া প্রকল্প চালু হয়ে গেলেও ফুটিয়ারি প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হয়নি।

ঘনশ্যাম মণ্ডল, কলাবনি

সভাপতি: ফুটিয়ারি প্রকল্পের কাজ কেন ধীরে চলছে খোঁজ নিয়ে দেখব।

এই এলাকায় কলেজ থাকলেও মেয়েদের জন্য আলাদা কোনও কলেজ নেই। অনেক ছাত্রীই পুরুলিয়া নিস্তারিণী মহিলা কলেজে ভর্তি হয়। স্থানীয় কিছু বাসিন্দা আলাদা একটি মহিলা কলেজ গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সহায়তা পাওয়া যেতে পারে কি?

অশোক রক্ষিত, হুড়া

সভাপতি: এই ব্লকের লালপুরে একটি কলেজ রয়েছে। কিছু শিক্ষানুরাগী মানুষ এই মর্মে চেষ্টা করছেন বলে শুনেছি। পঞ্চায়েত সমিতি তো এ ব্যাপারে কিছু করতে পারে না। তবে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।

এই ব্লকের চাটুমাদারে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। কিছু দিন আগে পর্যন্তও সেখানে বর্হিবিভাগ থেকে স্থানীয় মানুষজন চিকিৎসা পরিষেবা পেতেন। এক জন হোমিওপ্যাথও বসতেন। কিন্তু ইদানীং পরিষেবা পাওয়াই যায় না। এই এলাকার গ্রামগুলি থেকে হুড়া ব্লক সদরের দূরত্ব কমবেশি ১৮ কিলোমিটার। বাধ্য সবাইকে সেখানে ছুটতে হয়। পরিষেবা ফের চালু করা জন্য পঞ্চায়েত সমিতি কি কিছু ভাবছে?

সুবোধ হাঁসদা, কারুডুবা

সভাপতি: সমস্যাটির কথা আমরা স্থানীয় মানুষজনের কাছ থেকে জেনেছি। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। শীঘ্রই বহির্বিভাগ চালু করা হবে। হুড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক জন চিকিৎসক সেখানে গিয়ে চিকিৎসা করবেন।

হুড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। কিন্তু সেটির পরিকাঠামো নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে। পর্যাপ্ত শয্যা নেই। আলো নেই। রাস্তা খারাপ। পঞ্চায়েত সমিতি কি কিছু ভাবছে?

প্রশান্ত দত্ত, হুড়া

সভাপতি: প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিষয়টি তুলেছিলাম। কিন্তু এই মুহূর্তে শয্যা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন পায়নি। পরিকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগী হচ্ছি।

হুড়ায় বাসস্ট্যান্ড নেই। হাটতলায় জাতীয় সড়কেরই বাস দাঁড়িয়ে থাকে। কোন প্রতীক্ষালয়, এমনকী সাধারণের ব্যবহারের মতো শৌচালয়ও নেই। যাত্রীদের অসুবিধা দূর করার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কি কোনও পরিকল্পনা রয়েছে?

সুজিত মাহাতো, কেশ্যাটাঁড়

সভাপতি: আপাতত বাসস্ট্যান্ড গড়ার পরিকল্পনা নেই। তবে যেখানে বাস দাঁড়ায় সেই এলাকায় শৌচালয় ও প্রতীক্ষালয় গড়ার কাজ আমরা শুরু করব। এই কাজের জন্য অর্থও বরাদ্দ হয়েছে।

লক্ষ্মণপুরের গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলি থেকে খৈরি-পিহিড়া যাওয়ার রাস্তায় একটি জোড় (খাল) পড়ে। তার উপরে একটা অস্থায়ী পারাপারের ব্যবস্থা করা রয়েছে। বছরের অনেকটা সময়ই ওই রাস্তায় যাতায়াত করা যায় না। পঞ্চায়েত সমিতির কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কী?

অশোক মাহাতো, দেউলি

সভাপতি: ওই জোড়ের উপরে যাতে একটি কজওয়ে বা কালভার্ট বানানো যায় আমরা তার প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। অনুমোদন মিললেই কাজ শুরু হবে।

এই এলাকা থেকে ট্রেন ধরতে হলে আদ্রা যেতে হয়। কিন্তু লালপুর-আদ্রা রুটে যাত্রী সংখ্যার তুলনায় খুবই কম বাস চলাচল করে। রুটটিতে বাসের সংখ্যা বাড়াতে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে কি?

জিয়াউল আনসারি, হিজুলি

সভাপতি: বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি সরাসরি কিছু করতে পারে না। আমরা জেলা পরিবহন দফতরে প্রস্তাব পাঠাবো। কেউ এই রুটে গাড়ি চালাতে চাইলে সাহায্যও করা হবে।

পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জাতীয় সড়কে হুড়ার লালপুর মোড়ের উপর দিয়ে ভোর থেকে অনেক রাত পর্যন্ত বাস যাতায়াত করে। নাইট সার্ভিসের বাসে অনেক মানুষ ফেরেন। কিন্তু মোড়ে কোনও শৌচালয় না থাকায় খুবই অসুবিধা হয়। মহিলা যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। এই বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির কি কোনও পরিকল্পনা রয়েছে?

সুচিত্রা মাহাতো, মাঙ্গুড়িয়া

সভাপতি: পঞ্চায়েত সমিতি ওই মোড়ে একটি শৌচালয় গড়েছিল। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে সেটি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা পারেনি। কী সমস্যা হচ্ছে খোঁজ নিয়ে শৌচালয়টি ফের চালু করার ব্যবস্থা করা হবে।

ফুটিয়ারি জলাধারের পাশ দিয়ে কলাবনি পর্যন্ত একটি পাকা রাস্তা রয়েছে। সেই রাস্তায় একটি কজওয়ে খুবই নিচু হওয়ায় বাস চলাচল করতে পারে না। রাস্তার দু’পাশের গ্রামগুলির বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন। পঞ্চায়েত সমিতি কি কিছু করতে পারে?

সত্যজিৎ মণ্ডল, কলাবনি

সভাপতি: সমস্যাটি এত দিন কেউই আমাদের নজরে আনেননি। সম্প্রতি বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। কজওয়ে উঁচু করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

লালপুর-মানবাজার রাস্তায় চাটুমাদার থেকে বড়গ্রাম মোড় পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। মানবাজারের দিক থেকে আসতে হলে লালপুর দিয়ে ঘুরে আসতে হয়। রাস্তা পাকা করার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি?

অর্ণব মাহাতো, চাটুমাদার

সভাপতি: কোনও গ্রামে চারশোর বেশি জনসংখ্যা থাকলে তবে মূল রাস্তার সঙ্গে পাকা রাস্তা দিয়ে যোগ করা হয়। ওই রাস্তাটির কাজ হওয়া উচিত ছিল। কোনও ভাবে আমাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে ওই রাস্তটিও পাকা করে দেওয়া হবে।

হাটতলা এলাকায় হুড়ার মূল বাজার। সেটি খবুই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বাজারটি ভাল করে সাজানোর কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি?

রাজেশ দে, হুড়া

সভাপতি: খুবই ভাল প্রস্তাব। আমরা হাটতলা এলাকায় দোকানঘর তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। তার নকশাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই কাজের জন্য বেশ কিছু বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে।

হিজুলি, কাজলি প্রভৃতি গ্রামগুলিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক মানুষজন বাস করেন। সামাজিক অনুষ্ঠান করার মতো কোনও কমিউনিটি হল ওই এলাকায় নেই। পঞ্চায়েত সমিতি কি কিছু করতে পারে?

আলাউদ্দিন আনসারি, হিজুলি

সভাপতি: ওই এলাকায় একটি কমিউনিটি হল গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনুমোদন মিলেছে। এখন বরাদ্দ মিললেই দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।

water project
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy