Advertisement
E-Paper

হাজিরাতেও আধার চালু, বিতর্কে রেল

কেন্দ্র সরকারের সমস্ত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল। অন্য কিছু সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এই বন্দোবস্ত চালু করে দিলেও রেল কিছুটা দেরিতেই শুরু করেছে।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৫
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

বায়োমেট্রিক হাজিরায় আধার যোগ করা নিয়ে আপত্তি তুলল রেলকর্মীদের সংগঠন।

জানুয়ারির গোড়ায় আদ্রায় রেল কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হয়েছে। একটি যন্ত্রে আঙুলের ছাপ দিয়ে হাজিরা দিতে হচ্ছে। কিন্তু যন্ত্র তো রোজ আঙুলের ছাপ মিলিয়ে হাজিরাটুকু নেবে। সেই আঙুল কার, সেটা যাচাই হবে কী করে? তার জন্য আধার। প্রথমবার বায়োমেট্রিক হাজিরার যন্ত্রে আঙুল ঠেকানোর আগে রেলকর্মীদের নিজের আধার নম্বর দিতে হচ্ছে। যন্ত্র তার সঙ্গে মিলিয়ে দেখে নিচ্ছে। তবে গোড়ার ওই এক বারই দিতে হচ্ছে আধার নম্বর।

নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে রেলকর্মীদের সংগঠন মেনস কংগ্রেস আধার নম্বর দেওয়ার এই ব্যবস্থা প্রত্যাহার করার দাবি তুলেছে। গত মাসে সংগঠনের দক্ষিণপূর্ব জোনের সাধারণ সম্পাদক শিবরঞ্জন মিশ্র রেল বোর্ডের কাছে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। মেনস কংগ্রেসের আদ্রার নেতা সুব্রত দে ক্ষোভ প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছেন আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষকে।

কেন্দ্র সরকারের সমস্ত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা চালুর নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল। অন্য কিছু সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এই বন্দোবস্ত চালু করে দিলেও রেল কিছুটা দেরিতেই শুরু করেছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি রেলে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হয়েছে। আদ্রা ডিভিশনে সেটা হয়েছে জানুয়ারির গোড়ায়। প্রতিটি দফতরে বায়োমেট্রিক হাজিরার যন্ত্র বসানো হয়েছে। প্রতিবার অফিসে ঢোকা বা বেরনোর সময়ে কর্মীদের তাতে আঙুলের ছাপ দিয়ে সময়ের হিসাব রাখতে হচ্ছে।

রেল কর্মী সংগঠনের আশঙ্কা, আধার কার্ডের তথ্য যাচাই করার সুযোগে ওই যন্ত্র থেকে কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। ডিসেম্বরে কলকাতায় পরিদর্শনে আসা রেল বোর্ডের মেম্বার স্টাফের কাছে সংগঠনের পক্ষ থেকে শিবরঞ্জনবাবু দাবি জানিয়েছেন, বায়োমেট্রিক হাজিরায় আধার নম্বর নথিভুক্তির ব্যবস্থা প্রত্যাহার করতে হবে। চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, একই সঙ্গে রেলকর্মীদের আঙুলের ছাপ ও আধার নম্বর কোনও সার্ভারে থাকলে বিপত্তি হতে পারে।

সম্প্রতি পঞ্জাবের এক ইংরাজি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, অল্প টাকা খরচ করলেই হ্যাকারদের থেকে কেনা যাচ্ছে আধার কার্ডের প্রচুর তথ্য। ওই ঘটনায় দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। তার আগেও আধার-তথ্যের অপব্যবহবারের বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকের তথ্য যাচাইয়ের সময়ে তাঁর অজান্তেই ভার্চুয়াল ওয়ালেটে অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলা হচ্ছিল। জ্বালানি গ্যাসের ভর্তুকির টাকা জমা পড়ছিল সেখানে। এই সমস্ত প্রসঙ্গ তুলে রেল কর্মী সংগঠনটির অভিযোগ, হাজিরার জন্য দেওয়া আধার কার্ডের তথ্য তাঁদের অজান্তেই ব্যবহৃত হয়ে যেতে পারে। সংগঠনের নেতা সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘আধার নম্বর এখন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, মোবাইলের সিম কার্ড-সহ বিভিন্ন পরিষেবার জন্য দিতে হচ্ছে। ব্যাঙ্ক, ডাকঘর বা মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখতে আধার নম্বর দিতে হয়। আধার নম্বরের অপব্যবহার করে সেই টাকাও জালিয়াতি হতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা।’’

রাজ্য সরকার বিভিন্ন দফতরে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করেছে। সেখানে আধার নম্বর দেওয়ার দরকার পড়ছে না। সেই প্রসঙ্গ তুলে সুব্রতবাবুদের দাবি, কোনও কর্মীর আঙুলের ছাপের সঙ্গে তাঁর পরিচয় যাচাই করে নিতে ব্যবহার করা হোক অন্য কোনও পদ্ধতি। এর জন্য পিএফ বা পরিচয়পত্র যাচাই করা যেতে পারে। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘শুধু প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে রেল হাজিরায় আধার নম্বর বাধ্যতামূলক করছে।’’

তবে সংগঠনের এই অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি আদ্রার রেলের আধিকারিকেরা। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাজিরায় আধার নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাঁদের নয়। রেল বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ব্যাপারে যা বলার, যা করার— সবটাই রেল বোর্ড করবে। তবে রেলের এক আধিকারিক দাবি করেছেন, তথ্য অপব্যবহারের যে আশঙ্কা করছে সংগঠন তা অমূলক।

Aadhaar Aadhaar Card protest attendance system
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy