অপেক্ষার শেষ, হাসপাতালে এল অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র।— নিজস্ব চিত্র।
একটি পঞ্চাশ, অন্যটি কুড়ি— এতগুলি বছর পরে রামপুরহাট হাসপাতালের প্রাচীন দুটি ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ জন্যে ৯ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৫৩ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
কলকাতার আমরি হাসপাতালের স্মৃতি উসকে মাস চারেক আগে আগুন লেগেছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে তদন্তে জানা যায় শর্ট সার্কিট থেকেই ওই আগুন। তখন হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠেছিল। তারপরেও একাধিকবার আগুন লেগেছে রাজ্যের নানা হাসপাতালে। কখনও কাটোয়া, কখনও কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল!
একের পর এক ঘটনা থেকে রামপুরহাট হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি উঠেছিল। কখন কী হয়ে যায়, সে নিয়ে তটস্থ থাকতেন রোগী, রোগীর পরিজন থেকে চিকিৎসক-নার্সেরা। হাসপাতালের দু’টি ভবন। একটি মূল ভবন অন্যটি আউটডোর ভবন। মূল ভবন তৈরি হয়েছে ৯৮ সালে, আর আউটডোর ভবন তৈরি হয়েছে ১৯৬৪ সালে। রামপুরহাট হাসপাতালের এই ভবনগুলিতেই আছে পুরুষ, স্ত্রী বিভাগ-সহ শিশু বিভাগ, ব্লাড ব্যাঙ্ক সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। হাসপাতালের কর্মীরাই জানাচ্ছেন, এই হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগ ছাড়া কোনও বিভাগেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। কোনও কিছু হয়ে গেলে দমকল কর্মীদের ভরসায় থাকতে হত।
এই পরিস্থিতিতে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর পূর্ত দফতরের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর জন্যে হাসপাতালের তরফে প্রস্তাব পাঠানো হয়। তার ভিত্তিতে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ৮৫টি ডিসিপি (ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার) যন্ত্র লাগানোর জন্য ৮ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৪৪ টাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এস্টিমেট করে পাঠায় পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৩১ অগস্ট স্বাস্থ্যভবন থেকে রামপুরহাট হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র লাগানোর জন্য ৮ লক্ষ ৪০ হাজার ৪২ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। তখন পূর্ত দফতরের সিভিল বিভাগকে হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র লাগানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই মতো পূর্ত দফতরের সিভিল বিভাগ নতুন করে ৯ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৫৩ টাকার এস্টিমেট করে। সেই মতো কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যেই ১১১টি এবিসি ক্যাটাগরি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, ১০৮ টিডিসিপি ক্যাটাগরি, ২০ টি কার্বন-ডাই-অক্সাইড যুক্ত এবং ২০টি জল ভরা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র লাগানো হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তারা।
সেই সঙ্গে বালি-ভর্তি ১০০টি বালতি বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়াও জল মজুত করার জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার-সহ ইমার্জেন্সি পাইপ লাইন, ফায়ার অ্যালার্ম বসানোর জন্য পূর্ত দফতর থেকে ডিপিআর (ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করা হচ্ছে।
রামপুরহাট হাসপাতাল সুপার সুবোধকুমার মণ্ডল জানান, চেন না মেলায় এখনই বালতিগুলি লাগানো হয়নি। খুব শীঘ্রই সেগুলি লাগানো হবে। বাকি কাজ শেষের দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy