Advertisement
E-Paper

উল্টোরথে বুদ্ধ, নজরুলরাও

এক সময় পঙ্‌ক্তিভোজ দূরের কথা নানুরে কোনও রথ যাত্রাই ছিল না। বছর ছয়েক আগে বোলপুর এলাকার একটি রথযাত্রা নানা জটিলতায় বন্ধ হয়ে যায়। ওই কমিটির সদস্যরা রথটি তুলে দেন নানুর কীর্তন মহামহোৎসব কমিটির সদস্যদের হাতে। সেই থেকে নানুরে চালু হয় রথযাত্রা এবং পঙ্‌ক্তিভোজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০১:২২
সম্প্রীতি: নানুরে উল্টোরথ। সোমবার। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি।

সম্প্রীতি: নানুরে উল্টোরথ। সোমবার। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি।

উৎসবের খুঁটিনাটি না জেনেও ফিবছর শেখ মহসীন, আব্দুল নাজান চৌধুরীরা রথযাত্রার জন্য প্রতীক্ষায় থাকেন। কারণ এ দিনই ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে পঙ্‌ক্তিভোজে সামিল হন সবাই। কৃষ্ণা ভট্টাচার্য, কল্পনা পালদের সঙ্গে একসঙ্গে পঙ্‌ক্তিভোজে সামিল হন নজরুল ইসলাম, আনোয়ার মুন্সীরাও। তাই ওই পঙ্‌ক্তিভোজ ঘিরে উচ্ছ্বাসের অন্ত নেই তাঁদের।

এক সময় পঙ্‌ক্তিভোজ দূরের কথা নানুরে কোনও রথ যাত্রাই ছিল না। বছর ছয়েক আগে বোলপুর এলাকার একটি রথযাত্রা নানা জটিলতায় বন্ধ হয়ে যায়। ওই কমিটির সদস্যরা রথটি তুলে দেন নানুর কীর্তন মহামহোৎসব কমিটির সদস্যদের হাতে। সেই থেকে নানুরে চালু হয় রথযাত্রা এবং পঙ্‌ক্তিভোজ। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। এ বারও দু’বেলাই ছিল পঙ্‌ক্তিভোজের আয়োজন। দুপুরে অন্য গ্রামের মানুষও সামিল হন। রাতে এলাকায় কার্যত অরন্ধন। এ দিন দুপুরে পাতে পাত ঠেকিয়ে খেতে দেখা গেল শেখ মহসীন, নজরুল ইসলামদের পাশাপাশি বীরুপাক্ষ মণ্ডল, বুদ্ধদেব গড়াইদের। তাঁরা জানান, একসঙ্গে বসে খাওয়ার আনন্দটাই আলাদা। উল্টো রথের পঙ্‌ক্তিভোজে সেই আনন্দটাই খুঁজে পাই। এই দিনটার প্রতীক্ষায় থাকি।

একই বক্তব্য কৃষ্ণা ভট্টাচার্য, ভাগ্যবতী বাগদিদের। তাঁরা জানান, ‘‘আমরাও এই দিনটার প্রতীক্ষায় থাকি। কারণ এই দিনটাতে আমাদের হেঁসেলে ঢুকতে হয় না। সবার সঙ্গে বসে খেতে খেতে গল্প করি।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সমীর কর, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য জানান, নানুরে রথযাত্রা এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে। তার মধ্যে পঙ্‌ক্তিভোজ ঘিরে সম্প্রীতির নজির গড়ে উঠেছে। রথযাত্রা কমিটির সভাপতি গদাধর সরকার, সম্পাদক সুনীল মুর্মরা জানান, রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই ধারাটি তাঁরা ধরে রাখতে চান।

রথের দিন যেমন আনন্দ হয়েছিল, উল্টো রথে একই আনন্দে মাতলেন ইলামবাজারের জনুবাজার গ্রামের মানুষ। ঘটনা হল গ্রামে রথ ছিল না। আগে রথের দিন মনখারাপে কাটত এলাকাবাসীর। নিজেদের ৭৫বছর পূর্তিতে সেই আক্ষেপ মেটাতে প্রথম পদক্ষেপ নেয় এলাকার ক্লাব সবুজ সমিতি। ঠিক হয় গ্রামের জন্য একটি নতুন রথ বানানো হবে। প্রস্তাব চূড়ান্ত হতেই সমর্থন জানান গ্রামের মানুষ। রথের দিন লোহার পাতের উপর সোনালী রঙের রথকে ঘিরে উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। জনুবাজার ও আশাপাশগ্রামের মানুষ ভিড় জমিয়ে ছিলেন। গ্রামের রাধাগোবিন্দ মন্দির থেকে রথ গিয়ে থামে গ্রামের ব্রাহ্মণ পাড়ায়। সোমবার উল্টো রথে রাধাগোবিন্দ মন্দির অভিমুখে একই ভাবে শোভাযাত্রা পা মেলালেন অনেক মানুষ।

Rath Yatra Festival রথ যাত্রা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy