Advertisement
E-Paper

হরিণ ছাপা টোকেনে বালি ‘পাচার’

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দৈনিক সেখান থেকে কয়েকশো ট্রাক্টর বালি পাচার হচ্ছে। নদীর পাড় থেকে দেওয়া ‘টোকেন’-এর ভরসাতেই চালকেরা অবৈধ বালি নিয়ে নির্বিঘ্নে পৌঁছে যাচ্ছেন গন্তব্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৫৭
প্রকাশ্যে: কেন্দা থানার চাঁদাতিরি-বামুনডিতে চলছে ‘বালি চুরি’।

প্রকাশ্যে: কেন্দা থানার চাঁদাতিরি-বামুনডিতে চলছে ‘বালি চুরি’। নিজস্ব চিত্র।

বালি তোলার অনুমতি নেই। তবুও কংসাবতী নদীর চরে ঝপাঝপ শব্দে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোদাল দিয়ে কাটা হচ্ছে বালি। লোকের মাথায় ঝুড়িতে করে সেই বালি চলে যাচ্ছে ট্রাক্টরের ডালার ভিতরে। তারপরে বালি নিয়ে একের পর এক ট্রাক্টর ছুটছে বিভিন্ন দিকে।

পুঞ্চা ব্লকের কেন্দা থানার চাঁদাতিরি-বামুনডি এলাকার অদূরে কংসাবতী নদী থেকে প্রকাশ্যে এ ভাবেই রোজ বালি পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ।

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দৈনিক সেখান থেকে কয়েকশো ট্রাক্টর বালি পাচার হচ্ছে। নদীর পাড় থেকে দেওয়া ‘টোকেন’-এর ভরসাতেই চালকেরা অবৈধ বালি নিয়ে নির্বিঘ্নে পৌঁছে যাচ্ছেন গন্তব্যে। তবে প্রশাসন ও পুলিশের তরফে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের দাবি, বেশ কয়েক দিন আগে ওই এলাকায় কেন্দা থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালান পুঞ্চা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা। আধিকারিকদের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, ওই এলাকায় নদী থেকে কোনও ভাবেই বালি উত্তোলন করা যাবে না। কার্যত সেই নির্দেশকে ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে ‘টোকেন’ দিয়ে দিনের পর দিন কংসাবতী থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে বালি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কংসাবতী নদীর এক পাশে হুড়া ব্লক। অন্য পাশে পুঞ্চা ব্লকের কেন্দা থানা এলাকা। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, সেখান থেকে অনেকটাই দূরে হুড়া থানার কেশগড় এলাকায় একটি বৈধ ঘাট রয়েছে। কিন্তু এই ঘাটটি অবৈধ। এখান থেকে বালি তুলে ট্রাক্টরগুলি চাঁদাতিরি, বামুনডি, কেন্দা পঞ্চায়েতের পাশ দিয়ে মানবাজার-পুরুলিয়া রাস্তা ধরছে বলে বাসিন্দাদের দাবি।

স্থানীয়দের একাংশ ও ট্রাক্টর চালকদের একাংশের দাবি, স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী বালির অবৈধ কারবারে যুক্ত। ট্রাক্টরে বালি তুলে যাওয়ার পথে নদীর পাড়ে এক ব্যক্তি বালি কেনার জন্য প্রথম বার ট্রাক্টর পিছু নিচ্ছেন ১৪০০ টাকা। বিনিময়ে তাঁদের অন্য একটি বৈধ ঘাট থেকে বালি কেনার জন্য চালান দেওয়া হচ্ছে। সেই চালান দেখিয়েই দিনভর বালি পাচার চলছে বলে অভিযোগ। পরে সেখান আবার বালি তুলতে গেলে দিতে হচ্ছে ৮০০ টাকা। রাস্তায় পুলিশের চেকিং থেকে রেহাই পেতে গেলে ২০০ টাকা দিয়ে হরিণের ছবি ছাপানো কাগজের টোকেন কিনতে হবে ট্রাক্টর চালকদের কাছে ওই ব্যক্তি দাবি করছেন।

যদি স্থানীয় পুলিশের তরফে টোকেনি নিয়ে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, পুলিশ ও প্রশাসনের নজর এড়িয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দিনের পর দিন প্রকাশ্যে কী ভাবে বালি চুরি ও নির্বিঘ্নে পাচার হচ্ছে?

মঙ্গলবার পুঞ্চা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সুব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে অভিযোগ পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়েছিল। সে সময় কেউ বালি তুলছিল না। হুড়া ব্লকের কেশগড়ের একটি বৈধ ঘাট রয়েছে। সেখানকার ইজারাদারকে ডেকে বলা হয়, পুঞ্চার দিক থেকে যাতে বালি না তোলা হয়। তিনি বলেন, “পুঞ্চার দিকের ঘাট থেকে বালি তোলা হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

বেআইনি কারবার রুখতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয় জেলা পুলিশের তরফেও। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগ এলেখতিয়ে দেখা হবে।’’

sand smuggling Kenda smuggler
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy