Advertisement
E-Paper

স্কুলের পথে ফাঁকা ছোটদের মাথা

‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নিয়ে প্রচারের পরেও মোটরবাইকের সওয়ারিদের এখনও পুরদস্তুর হেলমেট ব্যবহারে অভ্যস্ত করা যায়নি। যদিবা বড়রা কেউ হেলমেট পরছেন, কিন্তু ছোটদের মাথা ফাঁকাই থাকছে। আর সেখানেই বিপদ উঁকি মারছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪০
নিয়ম ভেঙেই জেলা সদরের পথে। বাঁকুড়ার বড়কালীতলা এলাকায় তোলা  নিজস্ব চিত্র।

নিয়ম ভেঙেই জেলা সদরের পথে। বাঁকুড়ার বড়কালীতলা এলাকায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নিয়ে প্রচারের পরেও মোটরবাইকের সওয়ারিদের এখনও পুরদস্তুর হেলমেট ব্যবহারে অভ্যস্ত করা যায়নি। যদিবা বড়রা কেউ হেলমেট পরছেন, কিন্তু ছোটদের মাথা ফাঁকাই থাকছে। আর সেখানেই বিপদ উঁকি মারছে।

সকাল কিংবা বিকেলে বাঁকুড়া শহরের পথে দেখা যায়, বড়রা বাড়ির ছোটদের স্কুলে মোটরবাইকে দিয়ে আসা, নিয়ে আসা করছেন। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগেরই দেখা যায়, খুদের মাথায় হেলমেট পরান না। এমনটা কলকাতাতেও ঘটছে। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা তাই নিশ্চিত করতে কলকাতার এক স্কুলের অধ্যক্ষা নিজে দাঁড়িয়ে থাকছেন স্কুলের গেটে। হেলমেট ছাড়া অভিভাবকের মোটরবাইকে চড়ে আসা পড়ুয়াদের পত্রপাঠ ফিরিয়ে দিচ্ছেন তিনি। এমন উদ্যোগ কিন্তু সে ভাবে এই শহরে বা শহরের আশপাশের এলাকার স্কুলগুলিতে দেখা যায়নি বললেই চলে। যদিও কলকাতার ওই স্কুল অধ্যক্ষার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নানা স্কুল কর্তৃপক্ষ। কেউ কেউ আবার জানাচ্ছেন, এমন কোনও ব্যবস্থার কথা তারাও ভাবছেন।

জেলা পুলিশের একটি সূত্রে খবর, এমন অনেক দুর্ঘটনা তাদের নজরে এসেছে, মোটরবাইকের চালক হেলমেট পরে থাকায় অল্পের উপর দিয়ে রক্ষা পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বিনা হেলমেটের সঙ্গী মাথায় ইন্টারন্যাল হেমারেজের কারণে মারা গিয়েছেন। তাই বিনা হেলমেটে ছেলেমেয়েদের মোটরবাইকে নিয়ে যেতে দেখে অনেক পুলিশ কর্মীই সতর্ক করে দেন অভিভাবকদের। কিন্তু অভ্যাস বদলানো যায়নি। এক পুলিশ কর্মীর কথায়, ‘‘দুর্ঘটনা ঘটলে মোটরবাইকে চেপে থাকা ছাত্রছাত্রীটির বড়সড় ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তাই থেকেই যাচ্ছে।’’

বাঁকুড়া শহরের বড়কালীতলা এলাকায় দেখা গেল একটি মোটরবাইকে সামনে তেলের ট্যাঙ্কিতে একজন ও চালকের পিছনে আরও দু’জন ছাত্র বসে রয়েছে। তিনজনের কারও মাথায় হেলমেট নেই। তবে হেলমেট রয়েছে চালকের মাথায়। কেন এই ঝুঁকি নিচ্ছেন? ওই মোটরবাইকের চালক শুধু মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলেন। একই ভাবে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়া আরও এক অভিভাবকের যুক্তি, ‘‘ওদের স্কুলে হেলমেট রাখার অসুবিধা। তা ছাড়া শহরের ভিতরেই স্কুল। এই টুকু তো পথ। এ জন্য হেলমেট পরানোর দরকার নেই।” কিন্তু দুর্ঘটনা কখন, কোথায় হয়, তার নিশ্চয়তা আছে না কি? জবাব নেই ওই চালকের কাছে।

জেলার এসপি সুখেন্দু হীরা বলেন, “আমরা স্কুল থেকে পাড়ার ক্লাব সর্বস্তরেই ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’- এর প্রচার চালিয়েছি। এখন কলকাতার ওই স্কুলের মতো এই জেলার স্কুল-সহ সমস্ত প্রতিষ্ঠান যদি এগিয়ে আসে, তাহলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে।”

বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামাক্ষ্যা বিশ্বাসের কথায়, “আমরা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হেলমেট পরা নিয়ে সচেতনতা শিবির করেছি। ভাবছি ছাত্রেরা বিনা হেলমেটে স্কুলে আসছে কি না, নজরদারি চালাব।’’

ছাত্রছাত্রীদের এ ভাবে বিনা হেলমেটে স্কুলে নিয়ে যাওয়া বেশ উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা যে কোনও সময় ঘটতে পারে। তাই মোটরবাইকে আসা পড়ুয়ারা যাতে হেলমেট পরে সে জন্য স্কুলগুলিকে তৎপর হতে অনুরোধ করে চিঠি দেব।’’

Helmet Bankura Accident School Students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy