দুই জেলাতেই ‘জৈব গ্রাম’ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল কৃষি দফতর। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিকাশ যোজনায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১৫০টি ক্লাস্টার করে ‘জৈব গ্রাম’ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে দফতর। এতে রাসায়নিকের ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত জমির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে সাবেকি জৈব সার ব্যবহারে চাষিদের উৎসাহ দেওয়া হবে।
বাঁকুড়ার তিনটি গ্রামকে জৈব গ্রাম হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই গ্রামগুলি হল বাঁকুড়া ২ ব্লকের বড়চাকা, তালড্যাংরা ব্লকের বাঁশকোপা এবং জয়পুর ব্লকের পানখাই কলোনি। বুধবার বাঁকুড়ার বড়চাকা গ্রামে জৈব সারের প্রচারে একটি পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিক ও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা। উল্লেখ্য, বড়চাকা সংলগ্ন করনজোড়া গ্রামকে গত বছর জৈব গ্রাম হিসাবে গড়ে তুলেছে কৃষি দফতর।
সম্প্রতি মানবাজার থানার ভেড়াড্ডি গ্রামে রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জৈব গ্রাম গঠনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। তিনি জানান, পুরুলিয়ার মানবাজার, জয়পুর, কাশীপুর এবং নিতুড়িয়া থানা এলাকায় চারটি জৈব গ্রাম গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।
জৈব গ্রাম কী? কৃষি দফতরের আধিকারিকরা জনাচ্ছেন, ওই গ্রামগুলির সমস্ত চাষি রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক বর্জন করবেন। জৈব সার ও কীটনাশক তৈরির জন্য ওই কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাঁরা দলবদ্ধ ভাবে জৈব সার বানিয়ে জমিতে দেবেন। অন্য চাষিদেরও সেই সার ব্যবহার করতে উদ্ধুদ্ধ করবেন।
বাঁকুড়া জেলা কৃষি দফতরের উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) আশিসকুমার বেরা জানান, “জেলার ওই তিনটি গ্রামে প্রতিটিতে ১২ হেক্টর করে, মোট ৩৬ হেক্টর জমি জৈব সার দিয়ে চাষ করা হবে। কেঁচো সার ও জৈব সার তৈরিও করা হবে ওই গ্রামেই। সেই পরিকাঠামো গড়ার কাজ চলছে।” মানবাজার ১ ব্লকের কৃষি আধিকারিক শান্তিগোপাল কর্মকার জানান, ভেড়াড্ডি গ্রামে রয়েছেন ৬৫১ জন চাষি। প্রথম পর্বে তাঁরা শুধু জৈব সার প্রয়োগ করে ১২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল বুনবেন। জেলার মুখ্য কৃষি আধিকারিক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, উত্তপন্ন ফসলের বিক্রি এবং ন্যাহ্য মূল্য পাওয়ার বিষয়েও তাঁরা চাষিদের পাশে থাকবেন। দফতরের কৃষি অধিকর্তা পরিতোষ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জৈব গ্রামের পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাব আমরা।’’ ভেড়াড্ডি গ্রামে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জৈব সার তৈরির প্রশিক্ষণকেন্দ্র। সেখানে রয়েছে কেঁচো থেকে সার তৈরির ৪০টি প্রকল্প।
মানবাজারে ভেড়াড্ডি গ্রামের অনুষ্ঠানে বক্তা ছিলেন কুড়মাশোল গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ মাহাতো। অভিজ্ঞ চাষি বীরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘দ্রুত বেশি ফসল পাওয়ার লোভে অনেকেই মাত্রাছাড়া রাসায়নিক সার আর কীটনাশক ব্যবহার করেছিলেন। তার ফলে এখন জমির স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে গিয়েছে।’’ ভেরাড্ডি গ্রামের চাষি অমৃত মুর্মু, সজলা মুর্মু, আনন্দ সোরেনরা বলেন, ‘‘আমরা আগে গোবর সার দিয়েই চাষ করতাম। রাসায়নিক সারের ক্ষতি এখন বুঝতে পারছি। এখন থেকে ফের আগের জৈব পদ্ধতিতেই ফিরে যাব।’’
বাঁকুড়ায় কম্প্যাক্টর। নির্মল বাংলা মিশন প্রকল্পে দু’টি ভ্রাম্যমাণ কম্প্যাক্টর মেশিন পেল বাঁকুড়া পুরসভা। সম্প্রতি সেগুলির উদ্বোধন করেন পুরসভার চেয়ারম্যান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত। মহাপ্রসাদবাবু জানান, এই মেশিন আবর্জনার স্তূপ পিষে ছোট করে দেওয়ায় তা পরিবহণে সুবিধা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy