বছর ঘুরতে চলল টাকা এসে পড়ে আছে কিন্তু সমন্বয়ের অভাবে চালু হল না সিউড়ির জুভেনাইল হোম। নিয়মমাফিক কাজ না হওয়ার কারণ দেখিয়ে জুভেনাইল হোমের জন্য তৈরি ভবনটির উদ্বোধন হয়নি। সেটিতে আরও পরিমার্জন ও সংযোজন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বীরভূম জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
এদিকে, ২০১৬ সালে সিউড়ি সংশোধনাগারের পিছনে জুভেনাইল হোমের জন্য যে ভবনটিকে সাদা রং করে সংস্কার করা হয়েছিল সেটি মাত্র আড়াই হাজার বর্গফুটের। জুভেনাইল হোম হিসেবে সেটিকে চিহ্নিত করা হলেও নিয়মের ফাঁসে ব্যবহারের অনুমোদন মেলেনি। জুভেনাইল অ্যাক্টের গাইডলাইন অনুযায়ী, জুভেনাইল হোম অন্তত আট হাজার বর্গফুটের হতে হবে। তার জন্য বিশেষ পরিকাঠামোও থাকা দরকার। বিষয়টি নজরে আসার পরেই এটিকে নিয়ম মেনে গড়ে তুলতে এক বছর আগে রাজ্য ও কেন্দ্রের তহবিল থেকে ৮৭লক্ষ ৪৫হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু এক বছরে ওই ভবনে নতুন কোনও নির্মাণের কাজ শুরুই করা যায়নি। এদিকে বীরভূমে কোনও জুভেনাইল হোম না থাকায় অপরাধমূলক ঘটনায় অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত নাবালকদের পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদের হোমে এখন পাঠানো হয়। প্রায় এক দশক আগে ‘জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড’ গঠনের পর থেকে এই ব্যবস্থাই চলে আসছে।
প্রশাসনের খতিয়ান অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে বীরভূমে নাবালকদের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা বেড়েছে। জেলায় একটি হোম জরুরী বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবিও উঠেছিল। বোর্ড ও আইনজীবীদের বক্তব্য, প্রতি বছরই গড়ে ৫০জনেরও বেশি অপ্রাপ্তবয়স্ককে হোমে পাঠাতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বীরভূমে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের একটি মাত্র ঘরে বিচার প্রক্রিয়া চালাতেও অসুবিধা হয়। কাউন্সেলিং-সহ নাবালক অভিযুক্তদের আলাদা করে বসানোর মতো কোনও ঘরের ব্যবস্থাও নেই। ঠিক হয়েছিল এই নতুন ভবনে বিচারকক্ষ থেকে অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্তদের রাখার জায়গা সবটাই থাকবে। কিন্তু নতুন ভবন তৈরি হবে না তৈরি হওয়া ভবনকেই বাড়ানো হবে তা নিয়েও প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে আলোচনার অন্ত ছিল না এত দিন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। জুভেনাইল হোমের জন্য নিয়মমাফিক পরিকাঠামো বর্তমান ভবনটিতে নেই। এবার জেলা পরিষদ জুভেনাইল অ্যাক্টের গাইডলাইন অনুযায়ী ভবনটি সম্পূর্ণ করবে।’’
জেলার চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার নিরুপম সিংহ বলেন, ‘‘জেলা জজ এবং জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের প্রিন্সিপাল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলে জুভেনাইল অ্যাক্টের গাইডলাইন অনুসারে হোম
চালু করা হবে। কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে টাকা দিয়েছে। নকশা ও পরিকল্পনা তৈরি হয়ে গিয়েছে। খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে।’’