হিমঘরে আলু মজুত রয়েছে। কিন্তু বাজারে তার দামে যেন আগুন লেগেছে। প্রতি বছরই এই ছবিটা হরেদরে এক থাকে। এর আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে আলুর ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। বুধবার বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে রাজ্যের কৃষি বিপনন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জানালেন, এ বার অন্য নিদান। সরকার ঠিক করেছে, প্রথম থেকেই নির্দিষ্ট সময়ে হিমঘর থেকে আলু বের করে আনায় জোর দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে সক্রিয় হতে বলেছেন তিনি। প্রশাসনের আধিকারিকেরা যাতে নিয়মিত জেলার হিমঘরগুলিতে পরিদর্শন চালান, সেই নির্দেশও দিয়েছেন।
এ দিন বাঁকুড়ার সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন ও হিমঘর মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তপনবাবু। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “হিমঘরে আলু মজুত করে রেখে বাজারের জোগান কমিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে দাম বেড়ে যায়। এই বিষয়টি রুখতে এ বার পদক্ষেপ করা হবে। কোনও মতেই দাম বাড়তে দেওয়া হবে না। হিমঘর খালি করানোর জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়মিত ভাবে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসককে।’’
মন্ত্রী জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই হিমঘর থেকে ৫০ শতাংশ আলু বাজারে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। নভেম্বরের মধ্যেই সমস্ত মজুত আলু হিমঘর থেকে বের করে আনার জন্য নির্দেশ জারি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত মোট মজুত আলুর ৬০ শতাংশ হিমঘরগুলিতে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির জেলা উপদেষ্টা বিভাস দে বলেন, “সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৫০ শতাংশ আলু বের করে দেওয়ার যে নির্দেশ জারি হয়েছে তা যুক্তিযুক্ত। তবে নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত আলু হিমঘর থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি।’’ তিনি জানান, বাজারে নতুন আলু আসে ডিসেম্বরের শেষে। তাঁর দাবি, সে ক্ষেত্রে নভেম্বরে হিমঘর খালি করে ফেললে অচিরেই বাজারে টান পড়বে। বিভাসবাবু বলেন, “মন্ত্রীকে আমরা সমস্যাটি জানিয়েছি। উনি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।”
এ দিকে সারেঙ্গা ব্লকের দু’টি হিমঘরে আলুতে রঙ মেশানোর অভিযোগ পেয়ে মন্ত্রী সেই বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে তদন্ত করে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এর আগেও রাজ্যের কয়েকটি হিমঘরে পরিদর্শনে গিয়ে আমি এই ঘটনা দেখেছি। সারেঙ্গার বিষয়টি যাতে জেলা প্রশাসন তদন্ত করে তার জন্য জেলাশাসককে বলেছি।” এই প্রসঙ্গে জেলা হিমঘর অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান দিলীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কেউ আইন ভাঙলে শাস্তি পেতেই হবে। প্রশাসন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিক।’’