আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও পেনশনগ্রাহকদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ রাজ্য সরকারে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায় সামনে আসতেই খুশির হাওয়া বীরভূমের সরকারি চাকুরে ও পেনশনগ্রাহকদের মধ্যেও। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে কিছুটা হলেও মহার্ঘ ভাতার বৃদ্ধির নির্দেশে খুশি রাজ্য সরকারি কর্মীরা। তবে, বাকি থাকা বকেয়া মহার্ঘ ভাতার জন্য লড়াই চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে জেলা কো-অর্ডিনেশন কমিটি।
২০২২ সাল থেকে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের পথে গিয়েছিল একাধিক সরকারি চাকরিজীবী সংগঠন। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের যে হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়, তার থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার ফারাক মেটাতেই আন্দোলন। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফারাক বেড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার আগে পর্যন্ত রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে মহার্ঘ ভাতার ফারাকের পরিমাণ ৩৭ শতাংশ। নির্দেশ কার্যকর হলে ফারাক কিছুটা কমে ২৭.৭৫ শতাংশে নেমে আসবে।
ফারাক কমায় খুশি হলেও লড়াই সবে শুরু বলে জানিয়েছেন জেলা কো-অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক সৌমেন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমাদের দাবি ছিল, সম্পূর্ণ বকেয়া মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা। কিন্তু, রাজ্যের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, পুরো টাকা দিতে গেলে রাজ্য দেউলিয়া হয়ে যাবে। তাই এখনকার মতো বকেয়া ভাতার ২৫ শতাংশ মেটাতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। এতে সাধারণ কর্মচারীদের অবশ্যই সুবিধা হবে, তবে আমরা মূল দাবিতে অনড়। যতক্ষণ না কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে মহার্ঘভাতার ফারাক মিটবে, আমাদের আন্দোলন চলবে।”
৯.২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পাওয়া গেলে তা সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে অত্যন্ত সুবিধাজনক হবে বলে দাবি তৃণমূলপন্থী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের। যদিও সংগঠনের জেলা সভাপতি চিত্ত অধিকারী জানান, এই বিষয়ে যা বলার, তা রাজ্য নেতৃত্বে বলবেন। জেলা স্তর থেকে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হবে না।
এই বৃদ্ধি সরকারি চাকুরিজীবীদের জন্য অনেকটাই লাভজনক হবে বলে মনে করছেন সিউড়ির পাবলিক অ্যান্ড চন্দ্রগতি মুস্তাফি মেমোরিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুমন্ত রাহা। তাঁর কথায়, “অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী নিয়মিত মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির কথা ‘রিভিশন অব পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্সেস’ বা রোপা-তে লেখা আছে। এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল। কিছু না পাওয়ার থেকে, কিছু পাওয়া ভাল। এই বৃদ্ধি অনেকটাই সুবিধা দেবে। আশা করি আগামী দিনে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার পুরোটাই পাওয়া যাবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)