Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TMC

‘উনি বিধায়ক না ধূমকেতু?’ ডেউচায় জনজাতি যুবকের ক্ষোভের মুখে ‘দিদির দূত’ ডেপুটি স্পিকার আশিস

মঙ্গলবার ডেউচা-পাঁচামির ভাঁড়কাটা এলাকায় গিয়েছিলেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এক যুবক তাঁর গাড়ি আটকান। বিধায়ককে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি। পরে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে সুশীল মুর্মু নামে সেই যুবক।

আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে সুশীল মুর্মু নামে সেই যুবক। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁচামি (বীরভূম) শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:২৮
Share: Save:

বিধায়ককে এলাকায় দেখা যায় না। নিজের বিধানসভা এলাকার ডেউচা-পাঁচামিতে গিয়ে এমন অভিযোগই শুনতে হল রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুধু তাই নয়, বিধায়কের গাড়ি আটকে এক যুবক তাঁকে সরাসরি প্রশ্নও করেন। জানান নিজের ক্ষোভের কথাও। ওই যুবক নিজেকে ডেউচা-পাঁচামির আদিবাসী গ্রামসভার সদস্য বলেও দাবি করেন। বিধায়কের সঙ্গে বাদানুবাদও হয় তাঁর। এর পর স্থানীয়েরাই ওই যুবককে সরিয়ে দেন। তাতে যদিও ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। ওই যুবকের প্রশ্ন, ‘‘বিধায়ক কি ধূমকেতু?’’

আশিস বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারও বটে। মঙ্গলবার তিনি তৃণমূলের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে ‘দিদির দূত’ হিসাবে ডেউচা-পাঁচামির ভাঁড়কাটা এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে সুশীল মুর্মু নামে এক যুবক তাঁর গাড়ি আটকান। বিধায়ক বসেছিলেন গাড়ির সামনে বাঁ দিকের আসনে। তাঁর সামনে গিয়ে সুশীল প্রশ্ন করেন, ‘‘এত দিন আপনি কোথায় ছিলেন?’’ ক্ষুব্ধ যুবক বিধায়কের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘‘উল্টোপাল্টা বলছেন কেন আপনি? তাই কি হয় নাকি। এখন আপনি আসবেন সেটা কি মানা যায় নাকি?’’ এর মাঝেই কাউকে সুশীলের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই ভাগো, ভাগো।’’ এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সুশীল। তিনিও পাল্টা সুর চড়িয়ে বলেন, ‘‘কী ভাগব? এই দেখুন, এক জন বিধায়ক কী ভাবে কথা বলছে। দেখুন...’’ সেই সময় এক জন সুশীলকে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে আশিসের উদ্দেশে আবার তিনি বলেন, ‘‘কেন আপনি বলবেন এ সব কথা। কেন ভাগব আমি এখান থেকে? আমি এখানকার বাসিন্দা।’’ এর পর সুশীলকে সরিয়ে দেন এক জন।

বিধায়ক চলে যাওয়ার পরেও বিষয়টি নিয়ে সরব হন সুশীল। তিনি বলেন, ‘‘বিধায়ক ধূমকেতু। ওঁকে কোনও দিনও দেখা যায় না। পাঁচামি এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এখানে জলের সমস্যা আছে। এখানে ধুলোর সমস্যাও আছে। উনি আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমরা কি মানুষ নই? এত দিন উনি কোথায় ছিলেন? উনি দূত হতে পারেন। কিন্তু ওঁকে তো আমরা দেখতেই পাই না।’’

আশিস যদিও বিষয়টিকে এক জনের ‘বিক্ষোভ’ হিসাবেই দেখছেন। তিনি বলেন, ‘‘মাত্র এক জন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। যিনি বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তিনি এলাকার বাসিন্দাও নন। তিনি এখানকার জামাই। ডেউচা-পাঁচামি কয়লাশিল্পের বিরুদ্ধে তিনি কতটা, তাঁর পরিচয় কী, তিনি কোথায় ছিলেন, সেখান থেকে তিনি বহিষ্কৃত হয়েছেন কি না সেই সমস্তটা আপনারা জেনে নিতে পারেন। ওখানকার মানুষ তো আমাকে কিছু বলেননি।’’

মঙ্গলবার মহম্মদবাজার ব্লকের কাপাসডাঙা গ্রামেও গিয়েছিলেন আশিস। সেখানকার বাসিন্দারা বিধায়ককে রাস্তা, নিকাশি-সহ নানা পরিষেবা দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দিদির দূত হিসাবে আমাদের পাঠানো হয়েছে যত প্রকল্প আছে তা চালু হয়েছে কি না, সাধারণ মানুষ তার সুবিধা পাচ্ছেন কি না, তা দেখার জন্য। এলাকার মানুষ সাংস্কৃতিক মঞ্চের কথা বলেছেন। তা হবে। বিধায়ক তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। রাস্তার বিষয়টি পঞ্চায়েতকে দেখতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Didir Doot Deputy Speaker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE