Advertisement
E-Paper

পেনশন বন্ধ ছ’মাস, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

ব্লক অফিস থেকে বলা হচ্ছে, ডাকঘরে পেনশনের টাকা ছাড়া হয়েছে। কিন্তু তিন মাস পার হয়ে গেলেও ডাকঘর থেকে সেই টাকা হাতে পাচ্ছেন না আদিবাসী বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পে থাকা বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। ওই টাকা তাহলে কোথায় গেল, এই নিয়ে ধোঁয়াশা বেড়েছে ডাক বিভাগের আধিকারিকদের মন্তব্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৮

ব্লক অফিস থেকে বলা হচ্ছে, ডাকঘরে পেনশনের টাকা ছাড়া হয়েছে। কিন্তু তিন মাস পার হয়ে গেলেও ডাকঘর থেকে সেই টাকা হাতে পাচ্ছেন না আদিবাসী বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পে থাকা বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। ওই টাকা তাহলে কোথায় গেল, এই নিয়ে ধোঁয়াশা বেড়েছে ডাক বিভাগের আধিকারিকদের মন্তব্যে।

পুরুলিয়ার কেন্দা থানা এলাকার পিঁড়রা পঞ্চায়েতের কয়েকটি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের বার্ধক্য ভাতার প্রাপকদের দাবি, তাঁরা প্রায় গত ছ’মাসের উপর ভাতা পাননি। কেন ভাতা মিলছে না, এই অভিযোগে সম্প্রতি তাঁরা কেন্দার কুড়ুকতোপা ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। কিন্তু ভাতার টাকা কেন মিলছে না, তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি।

প্রশাসন সূত্রে খবর, ৬০ বছর বয়স থেকে আদিবাসীরা ‘এসটি পেনশন’ পাওয়ার যোগ্য। প্রতি মাসে তারা এক হাজার করে টাকা পান। পঞ্চায়েত থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের নামের তালিকা অনুমোদনের জন্য ব্লক অফিসে পাঠানো হয়। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ওই পেনশনের টাকা বরাদ্দ করে প্রতিটি ব্লকে পাঠিয়ে দেয়। ব্লক অফিস সেই পঞ্চায়েত এলাকার ডাকঘরে আদিবাসী বার্ধক্য ভাতার নামের তালিকা-সহ চেক পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ডাকঘর থেকে প্রাপকদের প্রতি মাসে এই ভাতা পাওয়ার কথা। অনেক সময় প্রতি মাসে না হয়ে তিন-চার মাসের ভাতার টাকা একসঙ্গেও দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও বারই এত দীর্ঘদিন ধরে পেনশনের টাকা বন্ধ থাকেনি বলে উপভোক্তাদের অভিযোগ।

তৃণমূলের এসটি, এসসি ও ওবিসি সেলের পুঞ্চা ব্লক সভাপতি নির্মল হেমব্রমের অভিযোগ, ‘‘পিঁড়রা অঞ্চলের কয়েকটি আদিবাসী গ্রামের প্রায় ১০১ জন ওই প্রকল্পে পেনশন প্রাপক রয়েছেন। কিন্তু কেন তাঁরা ছ’মাসের বেশি সময় ধরে পেনশনের টাকা পাননি, তা স্পষ্ট নয়। এতে তাঁদের পক্ষে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও ফল হয়নি।’’

যদিও পুঞ্চার বিডিও অজয় সেনগুপ্ত দাবি করেছেন, ‘‘চলতি বছরের ২৬ মার্চ ওই পঞ্চায়েতের নামের তালিকা অনুযায়ী কুড়ুকতোপা ডাকঘরে আদিবাসী বার্ধক্য ভাতার ৬ লক্ষ ৬ হাজার টাকার চেক পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন তাঁরা এখনও ভাতার টাকা পাননি, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ কুড়ুকতোপা ডাকঘর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে টাকা বিলি বন্ধ রয়েছে। এর বেশি তাঁরা কিছু জানাতে চাননি। ভাতা না পাওয়া পিঁড়রা অঞ্চলের আমাকোচা গ্রামের কেশরি হেমব্রম, পরমেশ্বর মান্ডি, ভরতডি গ্রামের খেলানিবালা মুদিরা বলেন, ‘‘এক মাস আগে আমরা পুরুলিয়ার হেড পোস্টঅফিসে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। তারপরে ওই অভিযোগের তদন্তে দু’সপ্তাহ আগে ওই ডাকঘরে ডাক বিভাগের এক ইন্সপেক্টর এসেছিলেন বলে শুনেছিলাম। কিন্তু তদন্তে কী হয়েছে, পেনশনের টাকা কবে পাব, কিছুই জানতে পারিনি।’’ তাঁদের অভিযোগ, ওই টাকা নয়ছয় হয়েছে। তাই ডাক বিভাগের কর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ডাক বিভাগের ওই ইন্সপেক্টর কাজল চট্টোপাধ্যায় ফোনে এ নিয়ে কথা বলতে চাননি। তবে পুরুলিয়া পোস্টাল সুপারিন্টেডেন্ট তপন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, ‘‘কুড়ুকতোপা ডাকঘর থেকে আদিবাসীরা বার্ধক্য ভাতার টাকা পাননি বলে আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি।’’ বাসিন্দাদের দাবি, দফতর যে একমাস আগে অভিযোগ নিয়েছে, তার প্রমাণ রয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর আশ্বাস, ‘‘কেন ওঁরা বার্ধক্য ভাতার টাকা পাননি, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

pension Tribal old age pension stopped
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy