Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Narada

চাকরি নেই, দেবলোকে খবর দিন! এ বার পুজো করে নারদকে অনুরোধ বেকার যুবক-যুবতীদের

পড়াশোনা করার সময় সরস্বতীর আরাধনা করেছেন। এ বার চাকরি চেয়ে নারদ মুনির পুজো করছেন বাঁকুড়ার রতনপুরের যুবক। পুজো যেমন জমে উঠেছে, তেমনি চলছে রাজনৈতিক তরজা।

রতনপুরের নারদ পুজোর জাঁকজমক হার মানাচ্ছে দুর্গাকেও!

রতনপুরের নারদ পুজোর জাঁকজমক হার মানাচ্ছে দুর্গাকেও! —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২২ ১৬:৫৮
Share: Save:

অনেক চেষ্টা করেও চাকরি জোটেনি। এই বেকারত্ব অসহনীয় উঠেছে। চাকরি চেয়ে নারদের পুজো করছেন বাঁকুড়ার রতনপুরের এক যুবক। তাঁর আশা, চাকরির প্রার্থনা নারদের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে দেবলোকে। অন্য দিকে, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের ব্যাখ্যা, সমাজে যুবসমাজের মধ্যে হতাশা যত বৃদ্ধি পাচ্ছে ততই এই ধরনের উদ্যোগ বাড়ছে।

হিন্দুদের দেবদেবীর অভাব নেই। বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই আছে। কিন্তু তার মধ্যেও নারদ ব্রাত্য। সে অর্থে নারদ মুনির পুজোর আয়োজন তেমন একটা চোখে পড়ে না। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের রতনপুর গ্রাম। যে বারের টেট নিয়ে রাজ্যে কেসকাচারির সূত্রপাত, সেই ২০১৪ সালে প্রথম নারদ পুজোর চল শুরু হয় এখানে। একেবারেই কাকতালীয়। তবে রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ বারের নারদ পুজোর আলাদা করে ব্যঞ্জনা তৈরি করেছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।

এই নারদ পুজোর উদ্যোক্তা ছিলেন গ্রামের যুবসমাজ। তাঁদের ব্যাখ্যা, ‘‘বেকারত্বের যন্ত্রণার খবর বার্তাবাহক নারদ দেবলোকে পৌঁছে দিয়ে কিছু সুরাহা করতে পারেন, এই বিশ্বাস নিয়ে পুজো শুরু করেন। তার ফলও নাকি মেলে হাতেনাতে। পুজো উদ্যোক্তা এবং গ্রামের কয়েক জন সেই বছরই চাকরি পান। তার পর থেকে রতনপুরে নারদ পুজোর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। প্রতি বছর জাঁকজমক যেমন বেড়েছে, পুজোর আয়োজনের বড় হচ্ছে। এখন দুর্গা এবং কালীপুজোর জাঁকজমককে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলে দিয়েছে রতনপুরের নারদ পুজো। পুজো উদ্যোক্তাদের অন্যতম চঞ্চল মিশ্রের কথায়, “বেকারত্ব ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থায় শিক্ষিত বেকারদের বেকারত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়ার আবেদনটুকু যাতে বৈকুণ্ঠলোকে পৌঁছে দেওয়া যায় সে জন্যই নারদ পুজোর আয়োজন করেছি। এখানে নারদের প্রতিমা তৈরি করে পুজো হলেও পুজোর ধরন-ধারণ নারায়ণ পুজোর মতোই।” পুজা রানা নামে আর এক উদ্যোক্তা বলেন, “নারদ মুনি মর্ত্যলোক থেকে যাবতীয় ভালমন্দের খবর দেবলোকে পৌঁছে দেন। তাঁর পুজো করে গ্রামের কয়েক জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী দিনেও যেন সেই ধারাবাহিকতা থাকে, সে জন্যেই এই পুজো চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।”

এই পুজো নিয়ে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, “এ রাজ্যে চাকরি নিয়ে যা ঘটছে, তাতে দেবতার কাছে আবেদন জানানো ছাড়া বেকারদের কাছে আর কোনও পথ খোলা নেই।” বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “এ রাজ্যে যে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই হয়েছে। আগামী সময়ে আরও হবে।’’ এর পর কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বছরে দু’কোটি বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধাপ্পা দিয়েছেন সাধারণ মানুষকে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narada puja bankura Job Unemployment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE