Advertisement
E-Paper

অভিভাবক-নীতি পাল্টানোর চিন্তা

পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ‘স্থানীয় অভিভাবক’ হিসেবে বিভাগীয় প্রধানদেরই অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বিশ্বভারতী। পাশাপাশি চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই পড়ুয়াদের জন্য একটি ‘বিশেষ কাউন্সেলিং’ ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৬ ০৭:৪০

পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ‘স্থানীয় অভিভাবক’ হিসেবে বিভাগীয় প্রধানদেরই অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বিশ্বভারতী। পাশাপাশি চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই পড়ুয়াদের জন্য একটি ‘বিশেষ কাউন্সেলিং’ ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

রবিবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “বেশ কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় অভিভাবক হওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের পরিবর্তে প্রয়োজনে বিভাগীয় প্রধানদের ওই দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে সমস্ত স্তরের পড়ুয়াদের বিশেষ কাউন্সেলিং এবং আবাসিক পড়ুয়াদের হস্টেলে থাকা নির্ঝঞ্ঝাট করতে বেশ কিছু পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত করা হবে।’’ সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমিতির বৈঠকে এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।

ঘটনা হল, বিশ্বভারতীতে বরাবর সংশ্লিষ্ট ভবন বা বিভাগের প্রধানরাই পড়ুয়াদের স্থানীয় অভিভাবক হতেন। কিন্তু গত এক দশকের কিছু বেশি সময় ধরে ছবিটা বদলেছিল। পরিবারের পরিচিতদের অনেককে পড়ুয়াদের স্থানীয় অভিভাবক করা হচ্ছে। কিন্তু, সম্প্রতি বিশ্বভারতীর ‘স্থানীয় অভিভাবকে’র দায়িত্ব পালন করা বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু পড়ুয়ারা নানা অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়েছেন। সাম্প্রতিক অতীতে এক ভিন্ দেশি ছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত হয়েছিল তাঁরই স্থানীয় অভিভাবকের দায়িত্বে থাকা বিশ্বভারতীর এক গবেষক। ওই ঘটনায় ছাত্রটিকে দোষী সাব্যস্তও করেছে আদালত। এই ধরনের ঘটনায় কিছুটা হলেও ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে বিশ্বভারতীরই। তার পরে বিশ্বভারতীর স্থানীয় অভিভাবক নিয়ে নিয়ম পরিবর্তনের এই ভাবনা। এ ক্ষেত্রে এ বার থেকে আবাসিক পড়ুয়াদের পরিবারের মত জানতে চাইবে বিশ্বভারতী। প্রয়োজনে বিভাগের প্রধানকেই স্থানীয় অভিভাবক করার ওই পুরনো প্রথা ফেরানো হবে। এই ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বভারতীর নানা মহল। খুশি পড়ুয়ারাও। ভুগোলের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সৌরদীপ সরকার, বাংলা স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বিষ্ণু ঘোষ, বাংলার প্রথম বর্ষের ছাত্রী পূজা বাগদি, দ্বিতীয় বর্ষের আশিয়ানা রশিদি, গবেষক সুমন দত্তদের মত, ‘‘হস্টেলের পরিষেবা নিয়ে অনেকেরই নানা অভিযোগ ছিল। সেই সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে পরিষেবার উন্নতি হলে সকলেরই ভাল হবে।’’

এ দিকে, অতীতে নানা মহল থেকে দাবি ওঠার পরে সদ্য শেষ হওয়া হস্টেল পরিচালন কমিটির বৈঠকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী। ঠিক হয়েছে, নব নির্মিত অত্যাধুনিক পরিষেবা থাকা হস্টেলে বেশির ভাগ পড়ুয়াকেই স্থান দেওয়া হবে। পড়ুয়াদের তিনটি চলতি হস্টেল— তান বয়েজ হস্টেল, অপূর্ব ঘোষ বয়েজ হস্টেল ও মৃণালিনী গার্লস হস্টেলকে আপাতত বন্ধ রাখা হবে। মৃণালিনীতে নতুন করে আর ছাত্রী নেবে না বিশ্বভারতী। যাঁরা বর্তমানে রয়েছেন, তাঁদের পঠনপাঠন শেষ হওয়ার পরে সেটিকে সংস্কারের জন্য বন্ধ করা হবে। বিশ্বভারতীর ছাত্র পরিচালক অমিত হাজরা বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা মেস চালালে ভাল কথা। তবে, সার্বিক পরিষেবা বাড়ানো হচ্ছে। তাতে মেস না চালালেও বিকল্প ব্যবস্থা থাকবে। আবাসিকদের সুবিধার জন্য ২৫ দিনের জায়গায় ২২ দিনের খাওয়াদাওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে। গুণগত মানোন্নয়ন করা-সহ নতুন খরচের তালিকাও ধার্য করা হয়েছে।’’

অন্য দিকে, একই ছাদের তলায় থাকা খুদে পড়ুয়ারা যাতে প্রভাবিত না হয় এবং তাদের স্বাধীনতাও যাতে অক্ষুন্ন থাকে, তার জন্যও উদ্যোগী হয়েছে বিশ্বভারতী। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত একই জায়গায় থাকা হস্টেলে বদল আনা হচ্ছে। সংস্কারের পরে পুরনো সন্তোষালয় ভবনে ‘জুনিয়র বয়েজ হস্টেল’ (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত), নবম ও দশম শ্রেণিকে অন্য এক জায়গায় এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জন্য আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট করে আবাসিক গবেষিকাদের জন্য বিড়লা এবং এমফিল পড়ুয়াদের জন্য গোয়েন্কা গার্লস হস্টেলের মতো পূর্বপল্লি বয়েজ হস্টেলের ‘সি’ ব্লকও কেবল মাত্র গবেষকদের রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে নতুন হস্টেলগুলিতে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হস্টেলে নতুন গবেষক একা থাকতে চাইলে, তাঁদের জন্য ঘরভাড়াও আগের তুলনায় কমানো হয়েছে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের চিকিৎসা, স্বাস্থ্যবিমা, শিক্ষা, খেলাধুলার মতো জরুরি ও অত্যাবশ্যক পরিষেবা উন্নত করা হয়েছে বলেও অমিতবাবুদের দাবি।

visva bharati Local guardian
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy