বাঁকুড়ায় শতাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বন্ধ হয়ে গেল রান্না করা খাবার পরিবেশন। — নিজস্ব চিত্র।
গত তিন মাস ধরে আইসিডিএসের বরাদ্দ অর্থ বন্ধ। মাসের পর মাস বরাদ্দ বকেয়া থাকায় শেষ পর্যন্ত আইসিডিএস কেন্দ্রে রান্না বন্ধ করে দিলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। শুক্রবার থেকে বাঁকুড়ার ওন্দার ৩৬০টি কেন্দ্রে রান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে ওই ব্লকের কয়েক হাজার প্রসূতি এবং শিশু।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে চাল, ডাল, তেল এবং নুন সরাসরি সরবরাহ করে রাজ্য সরকার। জ্বালানি, সবজি, ডিম ও হলুদ কিনতে হয় আইসিডিএস কেন্দ্রগুলিকে। প্রসূতি এবং শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বরাদ্দ করে সংশ্লিষ্ট দফতর। সারা মাস ধরে নির্দিষ্ট এলাকার কোনও একটি দোকান থেকে ধারে জিনিস নিয়ে কাজ চালান আইসিডিএস কর্মীরা। মাস শেষে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ পেলে সেই দেনা শোধ করা হয়। এ ভাবেই চলছিল এত দিন। কিন্তু গত তিন মাস ধরে বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লক-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে সরকারি বরাদ্দ আসা বন্ধ থাকায় বেজায় সমস্যায় পড়েছেন আইসিডিএস কর্মীরা। মুদির দোকানে দেনার বোঝা বাড়ছে। নতুন করে ধারে জিনিসপত্র দিতে আপত্তি করছেন মুদির দোকানিরা। তাই সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকে ওন্দা ব্লকের ৩৬০টি আইসিডিএস কেন্দ্রে রান্না করা খাবার পরিবেশন বন্ধ করে দিলেন কর্মীরা।
ওন্দা ব্লকের চন্দ্রকোনা আইসিডিএস কেন্দ্রের কর্মী দীপ্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা সারা মাস দোকানে ধার করে উপভোক্তাদের রান্না করা খাবার দিয়ে থাকি। মাস শেষে টাকা পেলে দোকানের দেনা শোধ করি। তিন মাস ধরে টাকা না পাওয়ায় দেনা শোধ করতে পারিনি। দোকানদার আর ধারে মাল দিতে রাজি হচ্ছেন না। আমরা বার বার বিডিও অফিসে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। অগত্যা ব্লক প্রশাসনকে জানিয়ে শুক্রবার থেকে রান্না বন্ধ রেখেছি। বকেয়া টাকা দিলে ফের চালু হবে।’’ অন্য একটি আইসিডিএস কেন্দ্রের কর্মী শিবানী মণ্ডল বলেন, ‘‘তিন মাসের বকেয়া টাকা না পেলে আমরা আর কেন্দ্র চালাতে পারব না। শিশু ও প্রসূতি মায়েরা কেন্দ্র থেকে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন দেখে খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু আমরা নিরুপায়।’’ বাঁকুড়া সদর মহকুমার মহকুমাশাসক সুশান্তকুমার ভক্ত বলেন, ‘‘যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তার তুলনায় বরাদ্দ কম। তাই সমস্যা হচ্ছে বলে মাঝেমধ্যে শুনেছি। বিষয়টি জেনে তার পর তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy