Advertisement
E-Paper

খরচ হয়নি বরাদ্দই, ক্ষুব্ধ স্মৃতিকুমার

কলেজে দীর্ঘ দিন ধরে কোনও স্থায়ী অধ্যক্ষ নেই। দু’বছর ধরে নেই নির্বাচিত পরিচালন সমিতিও। গত চার বছরে বেশ কয়েক জন এই কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু নানা কারণে এক জনও ছ’মাসের বেশি টিকতে পারেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৫৬

কলেজে দীর্ঘ দিন ধরে কোনও স্থায়ী অধ্যক্ষ নেই। দু’বছর ধরে নেই নির্বাচিত পরিচালন সমিতিও। গত চার বছরে বেশ কয়েক জন এই কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু নানা কারণে এক জনও ছ’মাসের বেশি টিকতে পারেননি। প্রত্যেকেই শেষ অবধি তিতিবিরক্ত হয়ে মেয়াদের বহু আগেই দায়িত্ব ছেড়ে অব্যাহতি চেয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। ডামাডোলে চলা সেই সাঁইথিয়া অভেদানন্দ মহাবিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে মেলা কলেজ উন্নয়ন খাতের কয়েক লক্ষ টাকা খরচই করতে পারেনি। তার জেরে কলেজ কর্তৃপক্ষ নতুন অর্থ বরাদ্দের জন্য ইউজিসি-র কাছে কোনও আবেদনই করতে পারছে না। সম্প্রতি কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী উত্‌সবে এসে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার।

ওই দিন সুবর্ণ জয়ন্তী উত্‌সবের উদ্বোধনী বক্তৃতায় উপাচার্য বলেন, “এই ঐতিহ্যবাহী কলেজের পানে একটু চেয়ে দেখুন। ৫০ বছরের অনুষ্ঠানেও কলেজটিতে রং করা হয়নি। দেখতে কী বিশ্রী লাগছে! কলেজে ঢোকার সময় দেখলাম কোথাও কোথাও আবার পলেস্তরাও খসে পড়েছে।” এর পরেই উপাচার্যের ক্ষোভ আরও বাড়ে। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে কলেজ সৌন্দর্যায়ন-সহ নানা কাজের জন্য ইউজিসি ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেয়। এর জন্য সময় মতো আবেদন করতে হয়। কিন্তু সাঁইথিয়া কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই আবেদনই করেননি। তাঁদের ভুলে ওই টাকাটাই হাতছাড়া হয়ে গেল!”

ঘটনা হল, আবেদন করলেও ইউজিসি-র থেকে ওই অনুদান পেত না সাঁইথিয়ার এই কলেজটি। যার নেপথ্যে কলেজ পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কথাই উঠে আসছে। কলেজ সূত্রের খবর, কলেজের উন্নয়ন খাতে ২০০৭-’১২ আর্থিক বর্ষে পঞ্চদশ প্রকল্পে একাদশ কমিশন থেকে কয়েক লক্ষ টাকা পেয়েছিল সাঁইথিয়া অভেদানন্দ মহাবিদ্যালয়। যে টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনও অবধি খরচই করতে পারেননি। তাই দ্বাদশ কমিশনের টাকার জন্য ইউজিসি-র কাছে তাঁরা আবেদনও জানাতে পারেননি। নিয়মানুযায়ী নতুন করে টাকা পেতে হলে আগের বরাদ্দের ইউসি (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) জমা দিতে হয়। কিন্তু পাওয়া টাকার সবটা খরচ করতে না পারার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত সেই ইউসি জমা দেননি। যার জেরে ইউজিসি-র থেকে পরবর্তী কোনও অনুদানও কলেজ জোগাড় করতে পারছেনা। সে কথা মেনে নিয়ে কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপনবাবু বলেন, “ইউসি জমা না দেওয়ায় একাদশ কমিশন থেকে পাওয়া টাকা খরচ করা যায়নি। আর সে কারণেই কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী উত্‌সবে প্রাপ্য টাকার জন্য আবেদনও জানানো যায়নি।”

কলেজের পরিচালনায় এই ‘অচলাবস্থা’ নিয়ে মূলত দু’টি জিনিসকেই দায়ী করছেন কলেজের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মহল। এক, গত চার বছর ধরে (২০১০ সালের মার্চের পর থেকে) কোনও স্থায়ী অধ্যক্ষ না থাকা। দুই, গত দু’বছর ধরে কলেজে কোনও নির্বাচিত পরিচালন সমিতি না থাকা। কলেজ সূত্রের খবর, ২০১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কলেজে নির্বাচিত পরিচালন সমিতি ছিল। তার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজে প্রশাসক বসিয়ে দেয়। তখন থেকেই কলেজের দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) বিধান রায়। টিএমসিপি-র দখলে থাকা ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাহুল দাসের বক্তব্য, “কলেজে পরিচালন সমিতি নেই বলে সমস্যা রয়েছে। কলেজে স্থায়ী অধ্যক্ষ না থাকাটাও বড় সমস্যা। বহু জরুরি কাজের ক্ষেত্রে আমাদের মুশকিলে পড়তে হয়। বহু ক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজ থমকে গিয়েছে।” একই অভিজ্ঞতা কলেজের পড়ুয়াদেরও। সায়ন সূত্রধর, অতনু মণ্ডল, সুপ্রিয়া দাসরা বলেন, “উপাচার্য সে দিন ভুল কিছু বলেননি। ক্লাসঘরগুলোর অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছে। পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা মেটেনি।”

এই পরিস্থিতিতে সাঁইথিয়ার এই ঐতিহ্যবাহী কলেজ কবে স্থায়ী অধ্যক্ষ পাবে, কবেই বা সেখানে নির্বাচিত পরিচালন সমিতি গঠিত হবে তার কোনও উত্তর মিলছে না। কলেজের এই ‘অচলাবস্থা’র কথা জানানো হলে বিধানবাবু অবশ্য বলেন, “এ ব্যাপারে খোঁজ খবর করে ব্যবস্থা নেব।”

sainthia college UGC grant burdwan university vice-chancellor smriti kumar sarkar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy