Advertisement
E-Paper

চেয়ারম্যানের ওয়ার্ড বাইরে কেন, জল্পনা

বাঁকুড়ার পাশাপাশি সংরক্ষণের গেরোয় পড়েছেন পুরুলিয়ার তিন পুরসভার বহু কাউন্সিলরও। পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুর পুরসভায় নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়তে পারছেন না দুই পুরসভার উপপুরপ্রধান। সোমবার জেলা প্রশাসন জেলার তিন পুরসভার (পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, ঝালদা) যে আসন পুনবির্ন্যাস ও সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে এমনই দেখা যাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৬

বাঁকুড়ার পাশাপাশি সংরক্ষণের গেরোয় পড়েছেন পুরুলিয়ার তিন পুরসভার বহু কাউন্সিলরও। পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুর পুরসভায় নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়তে পারছেন না দুই পুরসভার উপপুরপ্রধান।

সোমবার জেলা প্রশাসন জেলার তিন পুরসভার (পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, ঝালদা) যে আসন পুনবির্ন্যাস ও সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে এমনই দেখা যাচ্ছে। এই তিন পুরসভার পুরপ্রধানদের আসনগুলি অবশ্য সংরক্ষণের আওতায় পড়েনি। পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে পুরপ্রধানের আসন সংরক্ষণের আওতায় না পড়া নিয়ে বিরোধী শিবির সূত্রে কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও রঘুনাথপুর ও ঝালদার ক্ষেত্রে আপত্তি তুলেছে তারা। বাঁকুড়ার মতোই এখানেও সংরক্ষণ নিয়ে শাসক-শিবিরে ক্ষোভ রয়েছে।

খসড়া তালিকা অনুযায়ী, রঘুনাথপুরের উপপুরপ্রধান বাসুদেব তিওয়ারি এ বার নিজের ওয়ার্ড ২ নম্বর থেকে দাঁড়াতে পারছেন না। ওই ওয়ার্ডটি এবার তফসিলি মহিলার জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। একই ভাবে পুরুলিয়ার উপপুরপ্রধান সামিমদাদ খান নিজের ওয়ার্ড ১০ নম্বর থেকে দাঁড়াতে পারছেন না। এই ওয়ার্ডটিও মহিলা সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের দুই সদস্য বৈদ্যনাথ মণ্ডল ও প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ও তাঁদের নিজেদের আসন থেকে দাঁড়াতে পারছেন না সংরক্ষণের গেরোয়। বৈদ্যনাথবাবুর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বার তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। আর প্রদীপবাবুর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হয়েছে। ওয়ার্ডের বিন্যাস নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি সামিমদাদ খান। বৈদ্যনাথবাবু বা রঘুনাথপুরের উপপুরপ্রধান বাসুদেববাবুর মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। প্রদীপবাবুর বক্তব্য, “আমাদের যা বলার জেলা সভাপতির (তৃণমূল) কাছে বলব।”

পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিভাস দাসের ৫ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বারও সংরক্ষণের আওতায় পড়েনি। তাঁরও কোনও বক্তব্য নেই। সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আসন পুনবির্ন্যাস নিয়ে তাদের বক্তব্য পরে জানাবে। রঘুনাথপুরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গতবার জয়ী হয়েছিলেন বিষ্ণুচরণ মেহেতা। তিনি ছিলেন রঘুনাথপুর পুরসভায় তৃণমূলের দলনেতা। এ বার তাঁর ওয়ার্ড তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। বিষ্ণুচরণবাবুর অবশ্য দাবি, “এই আসনটি সংরক্ষিত হওয়া উচিত নয়। গতবার এই আসনটি সবর্সাধারণের জন্য ছিল। এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছি।”

এই পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডটিও এ বার সংরক্ষিত তফিসিলি জাতির প্রার্থীর জন্য। এই ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেসের মৃত্যুঞ্জয় পরামানিক। তিনি পুরসভার বিরোধী দলনেতাও ছিলেন। তাঁর ক্ষোভ, “এই আসন পুনবির্ন্যাস নিয়ে আমাদের বক্তব্য রয়েছে। একাধিক আসনের ক্ষেত্রেই সংরক্ষণের বিষয়টির ঠিকঠাক প্রতিফলন ঘটেনি। তা ছাড়া, কোন জাদুবলে পুরপ্রধানের নিজের ৪ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বারও সাধারণ ওয়ার্ড হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, বুঝতে পারছি না! কেননা গত ১৫ বছর ধরে ওই ওয়ার্ড সাধারণ হিসেবেই রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, পুরপ্রধানের ওয়ার্ড সাধারণ হিসাবে থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁদের ওয়ার্ডগুলিকে সংরক্ষণের আওতায় ফেলা হয়েছে। এ নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভাবছেন।

অন্য দিকে, ঝালদা পুরসভার ক্ষেত্রে চর্চা বেশি ১০ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে। এটি ঝালদার বর্তমান পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবালের ওয়ার্ড। কেন এই ওয়ার্ড সংরক্ষণের আওতায় এল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূল কাউন্সিলর প্রদীপ কর্মকার। গত বছর প্রদীপবাবুকে অনাস্থ ডেকে পদচ্যুত করে পুরপ্রধানের কুর্সিতে বসেছিলেন সুরেশবাবু। সেই থেকেই দুই নেতার সম্পর্ক যথেষ্ট তিক্ত। এ দিন খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে প্রদীপবাবু স্পষ্টই বলেন, “এই আসন বিন্যাস নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের যথেষ্ঠ বসবাস রয়েছে। অথচ এই আসন বিগত দু’টি নিবার্চনেই সাধারণের জন্য ছিল। এ বারও তাই রয়েছে। কেন এটা হল, তা নিয়ে আমরা আপত্তি জানাব প্রশাসনের কাছে।” প্রদীপবাবুর সুরেই বিজেপির ঝালদা মণ্ডল সভাপতি সমীর কান্দু বলেন, “বিগত দশ বছর এই আসন সাধারণের জন্য রয়েছে। এ বারও পুরপ্রধানের এই ওয়ার্ড সাধারণ হিসাবে দেখানো হল। আমরা ভোটার তালিকা মিলিয়ে কত শতাংশ ভোটার কোন সম্প্রদায়ের রয়েছেন, তা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনে আপত্তি জানাব।” তাঁর আরও বক্তব্য, ৭ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত রয়েছে। এটি তফসিলি মহিলা হলেই বোধহয় ভাল হত। কংগ্রেসের ঝালদা শহর সভাপতি গৌরীশঙ্কর সাও বলেন, “পুরো বিন্যাস এখনও খতিয়ে দেখিনি। তবে ১০ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে।”

delimitation purulia municipality election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy