বেতন নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। পুজোর আগে শ্রমিকদের বোনাস দেওয়ার দাবি নিয়েও মালিক-শ্রমিক চাপান উতোর শুরু হয়েছিল। অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের দফতর পর্যন্ত সেই সমস্যা গড়ালেও তার মীমাংসা হয়নি। এরই মধ্যে বুধবার কারখানার মূল দরজায় বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে আপাতত কারখানা বন্ধ করার কথা ঘোষণা করল বড়জোড়ার হাটআশুরিয়া এলাকার ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। যদিও কাঁচামালের অভাবেই অল্প ক’দিনের জন্য কারখানা বন্ধ করা হয়েছে বলে মালিক পক্ষ দাবি করেছেন। কিন্তু শ্রমিকদের পাল্টা দাবি, বোনাস না দেওয়ার জন্যই পরিকল্পনা মাফিক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ওই কারখানায় রেলের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয়। স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৮০ জন এই কারখানায় কাজ করেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম মেনে বেতন দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন শ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, চলতি মাসে এখনও তাঁরা বেতন পাননি। কিছুদিন আগে কারখানার শ্রমিক সংগঠনের নেতারা পুজোর বোনাস নিয়ে কথা বলতে গেলে মালিক পক্ষ বোনাস নিয়ে কোনও আশ্বাস দেননি বলে অভিযোগ। ফলে কারখানাটি বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন শ্রমিকরা।
এই কারখানার স্থায়ী শ্রমিক তথা আইএনটিটিইউসি-র সম্পাদক মনোরঞ্জন বড়ু ও সিটুর সম্পাদক আশিস ঘোষ বলেন, “বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের অন্যান্য কারখানায় শ্রমিকদের দৈনিক ২৪৯ টাকা নূন্যতম মজুরি দেওয়া হলেও এই কারখানায় স্থায়ী শ্রমিকদের ১৪৪ টাকা ও অস্থায়ীদের ১২০ টাকা দৈনিক মজুরি দেওয়া হয়। এ বার পুজোয় বোনাস দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে মালিক।” তাঁরা জানান, বেতন বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের কাছে একাধিকবার লিখিত ভাবে আবেদন জানানো হয়। ওই দফতর থেকে বৈঠক ডাকা হলেও মালিকপক্ষ যাননি।
কারখানার ইনচার্জ রৌশন আলি দাবি করেছেন, “ওড়িশা থেকে আমাদের কাঁচামাল (লৌহ আকরিক) আনতে হয়। কিন্তু বর্তমানে কারখানায় কাঁচামাল নেই। তাই সাময়িক ভাবে কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। দ্রুত চালু হবে বলে মালিক জানিয়েছেন।” যদিও কাঁচামাল কেন ওড়িশা থেকে আনা হচ্ছে না তা জানাতে পারেননি তিনি। এ দিকে শ্রমিকরা দাবি করেছেন, কারখানায় যথেষ্ট পরিমাণ কাঁচামাল রয়েছে। বোনাস ফাঁকি দেওয়ার জন্যই কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। কারখানা খোলার দাবিতে এ দিন সিটু এবং আইএনটিটিইউসি-র শ্রমিকেরা একসঙ্গে মূল দরজার সামনে ধর্নায় বসে। কারখানার অন্যতম কর্ণধার বিকাশ ঝাওয়ারকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি কথা বলেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy