দলেরই পঞ্চায়েত সদস্য বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন। সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যের সমর্থন নিয়ে সেই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা ধরে রাখল তৃণমূল। রাজ্য রাজনীতিতে সম্প্রতি সারদা, এমপিএস প্রভৃতি লগ্নিসংস্থার ঘটনাক্রমে দুই দলের মধ্যে তিক্ততা ক্রমশ বাড়লেও এই অদ্ভুত সমঝোতার সাক্ষী থাকল বান্দোয়ানের কুইলাপাল পঞ্চায়েত।
আবার মানবাজার থানার ধানাড়া পঞ্চায়েতে দলের সদস্যরা তৃণমূলের প্রধানকে সরাতে অনাস্থার দাবি জানিয়েছিলেন। সোমবার অনাস্থার তলবি সভায় একজন সদস্যও পঞ্চায়েত অফিসে উপস্থিত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেই সভা বাতিল হয়ে গেল।
বান্দোয়ানের কুইলাপাল পঞ্চায়েতে মোট সদস্য ৬ জন। তৃণমূলের ৩, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ২ এবং সিপিএমের ১ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সিপিএম ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সদস্যদের মধ্যে জোট না হওয়ায় তৃণমূল পঞ্চায়েতের ক্ষমতা পায়। প্রধান হন সনকা সরেন।
সম্প্রতি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বুলুরানি মাহাতো দলেরই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। অনাস্থা প্রস্তাবে তাঁর সঙ্গী হয়েছিল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার দুই সদস্য। কিন্তু সোমবার অনাস্থার তলবি সভায় সিপিএমের সুজল মুর্মু সমর্থন করেন সনকা সরেনকে। ফলে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন প্রধানই টিকে যান।
তৃণমূলের জেলা নেতা নবেন্দু মাহালি বলেন, “কোনও পরিস্থিতিতে এমনটা হয়েছে স্থানীয় নেতাদের ডেকে জানতে চাইব।” কুইলাপাল পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য সুজল মুর্মুর দাবি, “এখানে রাজনৈতিক রঙ নয়, উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে তৃণমূলের প্রধানকে সমর্থন করেছি।” তবে সিপিএমের বান্দোয়ান জোনাল সম্পাদক উপেন্দ্রনাথ হাঁসদা বলেন, “এ ধরনের কাজ আমরা সমর্থন করি না। এটা অনৈতিক কাজ। আমাদের দলের সদস্যের তৃণমূলের প্রধানকে সমর্থন করা ঠিক হয়নি।”
অন্য দিকে, মানবাজার থানার ধানাড়া পঞ্চায়েতে সোমবার অনাস্থা সংক্রান্ত সভা ছিল। সেখানে ১১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৬টি ও সিপিএম ৫টি আসনে জিতেছিল। প্রধান পদটি তপশিলি উপজাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় তৃণমূলের একমাত্র তপশিলি মহিলা অঞ্জলি মুর্মু প্রধান পদে রয়েছেন। সম্প্রতি দলেরই ৫ সদস্য ও সিপিএমের ১ মহিলা সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব আনেন। কিন্তু এ দিন অনাস্থা সংক্রান্ত সভায় দেখা যায়, সমস্ত সদস্যই গরহাজির। ফলে সভা বাতিল হয়ে যায়। ফলে আপাতত অঞ্জলিদেবীই প্রধান থেকে গেলেন। মানবাজারের তৃণমূল বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসে একসাথে কাজ করতে বলেছি।” জেলা নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দু’পক্ষের ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy