Advertisement
১৯ মে ২০২৪

পণের দাবি, বধূকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ

পণের দাবি না মেটানোয় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে এক বধূকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল। শনিবার বিকেলে সাঁইথিয়ার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ বধূর স্বামী সুদীপ কোনাই, শ্বশুর ধানু কোনাই এবং শাশুড়ি বণিতা কোনাইকে গ্রেফতার করেছে। ববিতা কোনাই নামে ওই বধূ এখন সিউড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ববিতা কোনাই। —নিজস্ব চিত্র।

ববিতা কোনাই। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০৬
Share: Save:

পণের দাবি না মেটানোয় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে এক বধূকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল। শনিবার বিকেলে সাঁইথিয়ার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ বধূর স্বামী সুদীপ কোনাই, শ্বশুর ধানু কোনাই এবং শাশুড়ি বণিতা কোনাইকে গ্রেফতার করেছে। ববিতা কোনাই নামে ওই বধূ এখন সিউড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, “বধূর বাবা তাঁর মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনায় বধূর স্বামী-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” পুলিশ জানায়, মেয়েটির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় এখনও পর্যন্ত তাঁর জবাবন্দি নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর আড়াই আগে সাঁইথিয়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ববিতা পাশের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুদীপ কোনাইয়ের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে ববিতার বাড়ির লোকের আপত্তি ছিল। সুদীপ বিয়ের পরে স্ত্রীকে নিজের বাড়িতেই নিয়ে যায়। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে ওঠার পর থেকেই মেয়েটির উপর পণের অত্যাচার শুরু হয়। বধূর বাবা গোপাল কোনাইয়ের অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকেই জামাইয়ের বাড়ির আসল রূপ বেরিয়ে আসে। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোক জন পণের জন্য নানা ভাবে চাপ দিতে শুরু করে। মেয়ের কথা ভেবে বিভিন্ন সময়ে ওঁদের বিভিন্ন দাবি মিটিয়েছে। তার পরেও ওরা মেয়েকে মারধর করত।” তিনি জানান, কিছু দিন আগেই মেয়ে তাঁর কাছে এসে জানায়, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিচ্ছে। গোপালবাবু বলেন, “আমি সামান্য দিনমজুর। এক সঙ্গে অত টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। ধীরে ধীরে দিয়ে দেব জানিয়েছিলাম। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ওরা টাকা না পেয়ে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারতে গেল।”

স্থানীয় সূত্রে খবর, পুরনো বাড়ি ছেড়ে দিন পনেরো আগেই সুদীপরা সবাই মিলে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ভাড়াবাড়িতে উঠে আসে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, মেয়েটির উপরে অত্যাচারের বিষয়টি তাঁদেরও নজরে এসেছিল। দিন চারেক থেকে তা চরম মাত্রা পায়। এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ বাসিন্দাদের একাংশ ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে মেয়েটির চিৎকার শুনতে পান। ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন মেয়েটি আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। তাঁরাই মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এ দিন থানায় বসে মেয়েটির স্বামী অবশ্য দাবি করেন, “পুড়িয়ে মারার অভিযোগ মিথ্যা। তখন ঘরেই ছিলাম না।”

এ দিকে, গোপালবাবুর খেদ, “ওদের সম্পর্কে আমাদের আপত্তি ছিল। তবুও মেয়ের মুখ চেয়ে ও বিয়ে মেনে নিই। মেয়ের এক বছরের একটি বাচ্চাও রয়েছে। এখন কী হবে, ভেবে কূল পাচ্ছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dowry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE