ডান্ডির নীচে সুরাত। কলকাতার নীচে শ্রীরামপুর!
মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষায় ম্যাপ পয়েন্টিংয়ের নমুনা-উত্তরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে পরীক্ষকদের এমনই অদ্ভুত নির্দেশিকা (মানচিত্র) পাঠনো হয়েছে। ওই নির্দেশিকা বা মানচিত্র দেখে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতে বসে শিক্ষকদের বড় অংশ রীতিমতো বিভ্রান্ত। তাঁদের দাবি, মানচিত্রে ডান্ডির অবস্থান সুরাতের নীচে। কলকাতাও শ্রীরামপুরের নীচে। কিন্তু পর্ষদের দেওয়া মানচিত্রে ভুল থাকায় তাঁরা বুঝতে পারছেন না, কী করবেন। বিশেষ করে যেখানে পর্ষদের দেওয়া মানচিত্র মিলিয়েই পরীক্ষার্থীদের নম্বর দেওয়ার কথা। শিক্ষক-পরীক্ষকদের প্রশ্ন, “কোনও পরীক্ষার্থী ঠিক জবাব দিলে তাকে নম্বর দেব, না কি পর্ষদের নির্দেশিকা অনুযায়ী তা ভুল বলে নম্বর কাটব, বুঝতে পারছি না।” আনন্দবাজারের কাছ থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি জানতে পেরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি আগে জানতাম না। এই সবে শুনলাম। বিশদে খোঁজ নিচ্ছি। যদি ভুল থাকে, জরুরি ভিত্তিতে তা শুধরে নেওয়া হবে।”
এ বার মাধ্যমিকের ইতিহাসের প্রশ্নপত্রে নিয়মিত ও বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০ নম্বরের ম্যাপ পয়েন্টিং ছিল। ১৪টি ঐতিহাসিক জায়গার মধ্যে ১০টি জায়গা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল। বিকল্প হিসেবে অবশ্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নও রয়েছে। কিন্তু যে সব পরীক্ষার্থী মানচিত্রের প্রশ্নগুলির সমাধান করেছে, তাদের উত্তরপত্র মূল্যায় করা নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে পরীক্ষকদের যে নমুনা-উত্তর দেওয়া হয়েছে, সেখানে ডান্ডির অবস্থানকে দেখানো হয়েছে সুরাতের উপরে। অন্য দিকে, ওই মানচিত্রে কলকাতা কী ভাবে শ্রীরামপুরের উপরে থাকল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
উত্তরপত্রের নমুনা মানচিত্রের বাঁদিকে উপরে আমদাবাদ, তার নীচে দেখানো হয়েছে ডান্ডিকে এবং ডান্ডির নীচে দেখানো হয়েছে সুরাতকে। অনেক পরীক্ষকের মধ্যেই প্রশ্ন জেগেছে, যে সমস্ত পরীক্ষার্থী ডান্ডির অবস্থান উক্ত তিনটি স্থানের মধ্যে সবচেয়ে নীচে দেখাবে, তাদের ক্ষেত্রে কী করা হবে। যদিও পর্ষদের পুরুলিয়ার ইতিহাস বিষয়ের অন্যতম প্রধান পরীক্ষক বলাই মণ্ডল দাবি করেছেন, “নমুনা-উত্তরে কোনও ভুল নেই। আমি দেখেছি প্রদত্ত মানচিত্রে ডান্ডির অবস্থান সঠিক জায়গাতেই দেওয়া রয়েছে। এটা নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার কথা নয়।” যদিও শিক্ষকদের একাংশ বলেন, “ভারতের মানচিত্রে ডান্ডির অবস্থান সুরাতের নীচেই। এটা সবাই জানেন। বিভিন্ন বইয়েও আমরা তা দেখেছি।” পর্ষদের কেউ কেউ বলেন, নমুনা-উত্তর প্রধান পরীক্ষকদের বার বার দেখে নিতে বলা হয়। এ ক্ষেত্রে তা কেন হয়নি সেটাই বিস্ময়কর। তা ছাড়া, যে শিক্ষকদের চোখে ওই ত্রুটি পড়েছে, তাঁরা কেন প্রধান পরীক্ষকের মাধ্যমে পর্ষদকে অবহিত করলেন না, থেকে যাচ্ছে সে প্রশ্নও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy