রাত পার হলেই দোল। তারই শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি সারতে ব্যস্ত এখন শান্তিনিকেতন। জোর কদমে শুরু হয়েছে বসন্ত উৎসবের প্রস্তুতি। নিরাপত্তা ও যানজট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এ বারও থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। নির্বিঘ্নে সকলেই যাতে অনুষ্ঠানের শরিক হতে পারেন, তার জন্য ইতিমধ্যেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জেলা পুলিশ, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন। ঠিক হয়েছে, সকালের অনুষ্ঠানের পর, অর্থাৎ দুপুর বারোটার পর আশ্রম এলাকা থেকে ভিড় সরানো হবে। পর্যটকেরা মূল আশ্রম প্রাঙ্গনের বাইরে থাকবেন। ফের সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের জন্য সকলের প্রবেশাধিকার থাকবে শান্তিনিকেতনের আশ্রমে মাঠে।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, জেলা পুলিশ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, দমকল, বিদ্যুৎ, জল এবং স্থানীয় পুরসভা-সহ সংশ্লিষ্ট সকল স্তরকে নিয়ে গত শনিবার বিকেলে এক বৈঠকে বসেন বিশ্বভারতীর সহ-উপাচার্য স্বপন দত্ত। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সভাগৃহে শনিবার প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে ওই বৈঠক। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, প্রথা মেনে বসন্ত উৎসবের আগের দিন সন্ধ্যায় আশ্রম মাঠে বসন্ত বন্দনা এবং রাতে আশ্রম চত্বরে বৈতালিকের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এ বারের বসন্ত উৎসব। উৎসবের দিন ভোরে বৈতালিক এবং সকালের অনুষ্ঠান হচ্ছে আশ্রম মাঠেই। দোলের রাতে এ বার বিশ্বভারতীর নিবেদন রবীন্দ্র-নৃত্যনাট্য ‘বসন্ত’।
উৎসব প্রাঙ্গনে এ বার থাকছে সিসিটিভিও। সাদা পোষাকে পুরুষ ও মহিলা পুলিশ কর্মীও থাকছেন ভিড়ের সঙ্গে মিশে। যানজট রোধে বিশ্বভারতী এলাকায় ঢোকার মুখে থাকছে গাড়ি পার্কিং-এর ব্যবস্থা। ড্রপ গেটেও থাকছে বাড়তি সুরক্ষাকর্মী।
রাতের অনুষ্ঠান চলাকালীন আশ্রম মাঠে যাতে কোনও রকমের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, তার জন্য বেশ কিছু বাড়তি ব্যবস্থা এ বারও নিয়েছে বিশ্বভারতী। উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের নির্দেশে, সহ-উপাচার্য স্বপন দত্তের সভাপতিত্বে উৎসব পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কমিটি করা হয়েছে। কমিটিগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে, নিজেদের মধ্যে এক প্রস্থ বৈঠক করেছেন তাঁরা। নিরাপত্তা, পানীয় জল, প্রাথমিক চিকিৎসা, অগ্নিনির্বাপণ-সহ নানা জরুরি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা। অন্য বারের মতো বহিরাগতদের জন্য বড় গেট এবং বিশ্বভারতীর নিজস্ব কর্মী, অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রী এবং উৎসবে যোগদানকারীদের আলাদা আলাদা গেটের ব্যবস্থা থাকছে। তবে শান্তিনিকেতন মূল এলাকায় ঢোকার জন্য এবং যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে শান্তিনিকেতন রাস্তার ওপর বিভিন্ন জায়গায় বসছে ‘ড্রপ’ গেট।
স্টেট ব্যাঙ্কের সামনের গেটের আগে থেকে রতনপল্লি মোড় এবং সঙ্গীত ভবন মোড় পর্যন্ত রাস্তার ওপর থাকছে বেশ কয়েকটি ‘ড্রপ’ গেট। পূর্ব পল্লি মেলার মাঠে, রতন পল্লি মাঠে এবং সাঁতার পুকুর লাগোয়া মাঠে থাকছে পারকিং ব্যবস্থা।
দোলে আশ্রম এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখা-সহ শিল্পীদের শিল্প কর্ম যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তার জন্য থাকছে বিশ্বভারতীর নিজস্ব নিরাপত্তা বিভাগের বিশেষ নজরদারি। স্বাভাবিক কারণেই, দুপুর বারোটার পর আশ্রম এলাকায় প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ফের সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্য ‘বসন্ত’-তে সকলের প্রবেশাধিকার থাকছে আশ্রম এলাকাতে।
বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে খবর, দুপুর বারোটার পর পর্যটকেরা মূল আশ্রম প্রাঙ্গনের বাইরে থাকবেন। ফের সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের জন্য সকলের প্রবেশাধিকার থাকবে আশ্রমে মাঠে।”
জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এলাকায় পুলিশ নজরদারি-সহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বসন্ত উৎসবের মূল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে সিসিটিভি বসছে। কেন্দ্রীয়ভাবে ওই ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষ বলেন, “শতাধিক অফিসার এবং কনস্টেবল নিয়ে সাড়ে চারশোর কিছু বেশি পুলিশ কর্মী মোতয়ন করা হয়েছে। বিশেষ ভাবে ছাত্রী এবং মহিলাদের কথা মাথায় রেখে শতাধিক মহিলা পুলিশ কর্মী মোতয়ন করা হয়েছে। রয়েছে সিসিটিভির ব্যবস্থাও। ভিড়ের মধ্যে থাকছেন সাদা পোষাকে পুরুষ ও মহিলা পুলিশও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy