Advertisement
E-Paper

ভিখিরিদের সম্মানের ভোজ কীর্ণাহারে

ভাল খাওয়া-দাওয়া দূরের কথা। দু’বেলা দু’মুঠো মোটা ভাতই জোটে না তাঁদের। তবে বছরে একটা দিন লাবু, ডোম, ক্ষান্ত বৈরাগ্যদের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিমন্ত্রিত অতিথির মতো আদরের সঙ্গে ভরপেট ভাল খাওয়াদাওয়া হয়। শুধু এ বছরই নয়, গত আট বছর ধরে সম্মানের এই খাওয়া দাওয়া জুটছে তাঁদের।

অর্ঘ্য ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০০:৩৩
বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

ভাল খাওয়া-দাওয়া দূরের কথা। দু’বেলা দু’মুঠো মোটা ভাতই জোটে না তাঁদের। তবে বছরে একটা দিন লাবু, ডোম, ক্ষান্ত বৈরাগ্যদের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিমন্ত্রিত অতিথির মতো আদরের সঙ্গে ভরপেট ভাল খাওয়াদাওয়া হয়। শুধু এ বছরই নয়, গত আট বছর ধরে সম্মানের এই খাওয়া দাওয়া জুটছে তাঁদের। তাই বছরের এই দিনটার জন্যই প্রতীক্ষায় থাকেন দুই শতাধিক ভিখিরি। সৌজন্যে কীর্ণাহারের পনেরো জন যুবক। তাদের কেউ ব্যবসায়ী, কেউ শিক্ষক আবার কেউ বা নিতান্তই বেকার। নিজেরদের গাঁটের কড়ি খরচ করে গত আট বছর ধরে ভিখিরিদের নিয়ে দিনভর পিকনিকের মেজাজে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করে চলেছেন তাঁরা।

কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ওই ভোজনে এ বার ২১৪ জন ভিখিরি অংশ নিয়েছেন। শুধু বীরভূম নয়, লাগোয়া বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসেন তাঁরা। রীতিমতো বিয়ে বাড়ির আমন্ত্রিত অতিথিদের মতোই প্রথমেই তাঁদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল সরবত এবং চা। টিফিনে দেওয়া হল মুড়ি, ছোলা ও কুমড়ো তরকারি। সঙ্গে থাকে বোঁদে। তারপর নুন, লেবু, ঘি-সহ ভাতে ডাল, আলু ও পটলের তরকারি। নবরত্ন টক এবং মিষ্টি। বিকেলে চা বিস্কুট। শুধু খাওয়া দাওয়াতেই থেমে নেই। খাওয়ার মাঝে চলে কীর্তন, বাউল, লোকগান। ফেরার আগে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় গৃহস্থের সরঞ্জাম।

কিন্তু কেন এই উদ্যোগ? সুবির মণ্ডল, জটাধারী কর্মকার, নিত্য নিরঞ্জন দত্তরা বলেন, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে দেখেছি, ভিখিরিরা একটু ভালমন্দ খাওয়ার আশায় জড়সড় হয়ে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। সবার শেষে তাদের পাতে তুলে দেওয়া হয় হত শ্রদ্ধার খাওয়ার। তখনই আমরা এই রকম একটা উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।” আর এই সম্মানের সঙ্গে ভোজন খেয়ে কী করছেন ভিখিরিরা? বর্ধমানের কাটোয়ার ভুলকুড়ির ৬২ বছরের সরস্বতী দাস, লাভপুরের পুশুলিয়ার ৬৫ বছরের অনাথ দাসরা বলেন, “এমন করে ভালবেসে নিমন্ত্রণ করে আমাদের কেউ খাওয়ায় না। ভোজ বাড়িতে নিমন্ত্রণে সবার শেষে বিরক্তি ভরে যে খাওয়ার দেওয়া হয় তাও সব সময় আমরা খেতে পারি না। কুকুরে কাড়াকাড়ি করে খেয়ে নেয় ওই সব খাবার। খুবই ভাল লাগছে।”

arghya ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy