Advertisement
E-Paper

মৌমাছির হুলে যন্ত্রণা, তবু পরীক্ষায় রুনা

অঙ্ক পরীক্ষার দিন সকালে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির জন্য বাবাকে সঙ্গে নিয়ে টিউশন নিতে গিয়েছিল সে। জঙ্গল পথে ফেরার সময়ে এক দঙ্গল মৌমাছির আক্রমণ করে দু’জনকেই। শেষ পর্যন্ত বাবাকে হাসপাতালে রেখে মৌমাছির হুলের বেঁধার যন্ত্রণা নিয়েই পরীক্ষার খাতায় অঙ্ক কষতে হল বাঁকুড়ার কুলমুড়া গ্রামের রুনা মাঝিকে। এবং তা সম্ভব হল শিক্ষকদের উদ্যোগে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৫ ০১:০৩

অঙ্ক পরীক্ষার দিন সকালে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির জন্য বাবাকে সঙ্গে নিয়ে টিউশন নিতে গিয়েছিল সে। জঙ্গল পথে ফেরার সময়ে এক দঙ্গল মৌমাছির আক্রমণ করে দু’জনকেই। শেষ পর্যন্ত বাবাকে হাসপাতালে রেখে মৌমাছির হুলের বেঁধার যন্ত্রণা নিয়েই পরীক্ষার খাতায় অঙ্ক কষতে হল বাঁকুড়ার কুলমুড়া গ্রামের রুনা মাঝিকে। এবং তা সম্ভব হল শিক্ষকদের উদ্যোগে।

রুনা বাঁকুড়া মায়াকানন হাইস্কুলের ছাত্রী। বিকনা ক্ষীরোদপ্রসাদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে তার পরীক্ষা কেন্দ্র। গুরুতর জখম অবস্থায় বাবা ভজন মাঝির সঙ্গে রুনাকেও বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করেছিল তার পরিবার। কিন্তু, ঘটনার কথা জেনেই রুনার পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে যান মায়াকানন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপম দে। ক্ষীরোদপ্রসাদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আশিস মুখোপাধ্যায়কে সব খুলে বলেন তিনি। এর পর আশিসবাবু জেলা স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলে যাবতীয় অনুমতি নিয়ে হাসপাতাল থেকে গাড়িতে করে স্কুলে নিয়ে আসেন রুনাকে। স্কুলেই ছিল মেডিক্যাল বোর্ড। ডাক্তাররা রুনার ক্ষতস্থানে ওষুধ লাগিয়ে দেন। বিশেষ ঘরে আলাদা ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষার শেষে রিকশা করে তাকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থাও করা হয়। রুনাকে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে নিয়ে যেতে স্কুলে এসেছিলেন দাদা নিতাই মাঝি। তাঁর কথায়, “বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। তাই অল্প বয়সে আমাকেও পড়াশোনা ছেড়ে এই পেশায় আসতে হয়েছে। বোনকে শিক্ষিত করা আমাদের স্বপ্ন। ভাবতেই পারিনি পরীক্ষার মাঝে এমন দুর্ঘটনা ঘটবে ওর।” অনুপমবাবু বললেন, “রুনা পড়াশোনায় খুব ভাল না হলেও প্রতিবারই মাঝারি রেজাল্ট করে। লেখাপড়ায় ওর আগ্রহও আছে।” আর আশিসবাবুর কথায়, “বাকি পরীক্ষাগুলিতেও ওর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করে দেব আমরা।” পরীক্ষা ভাল হয়েছে জানিয়ে রুনা বলে, “বাবার সাইকেলে ভেদুয়ার জঙ্গল পার হচ্ছি। হঠাৎই কানের চারপাশে বোঁ-বোঁ শব্দ। দেখতে দেখতে মৌমাছিগুলো ছেঁকে ধরল আমাদের। বিষের মতো জ্বালা। কোনও মতে বের হলাম সেখান থেকে। ভেবেছিলাম পরীক্ষাই হয়তো আর দেওয়া হবে না। শিক্ষকদের ধন্যবাদ, আমার জন্য ব্যবস্থা করে দিলেন তাঁরা।”

runa majhi bees attack madhyamik bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy