Advertisement
১৯ মে ২০২৪

স্কুলে পরীক্ষা চলার মাঝেই শিক্ষিকাদের ঝামেলা, তালা

রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লেন সিউড়ি আর.টি গার্লসের শিক্ষিকারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হয় পুলিশকে। বৃহস্পতিবার বিকেলের ঘটনা। স্কুল সূত্রের খবর, নানা বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে বিরোধ রয়েছে বেশ কিছু শিক্ষিকার। এ দিনের ঝামেলা তারই বহিঃপ্রকাশ।

আর.টি গার্লস স্কুলের বাইরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষিকারা। —নিজস্ব চিত্র

আর.টি গার্লস স্কুলের বাইরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষিকারা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৮
Share: Save:

রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লেন সিউড়ি আর.টি গার্লসের শিক্ষিকারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হয় পুলিশকে। বৃহস্পতিবার বিকেলের ঘটনা। স্কুল সূত্রের খবর, নানা বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে বিরোধ রয়েছে বেশ কিছু শিক্ষিকার। এ দিনের ঝামেলা তারই বহিঃপ্রকাশ।

তবে এ দিনের ঝামেলার সূত্রপাত কী নিয়ে? স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল যাঁদের, ওই সব শিক্ষিকারা উপস্থিত থাকলেও তাঁদের একটা অংশ সেই দায়িত্ব পালন করেননি। দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছুক শিক্ষিকাদের হাজিরা খাতায় সই করতে দেননি প্রধান শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষিকা খাতায় প্রত্যেকের নামের পাশে অনুপস্থিত কথাটা লিখে দেন। এর পরে ওই সব শিক্ষিকারা হজিরা খাতা জোর করে নিয়ে কেড়ে নিলে প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে তালা দিয়ে পুলিশে খবর দেন। এই নিয়েই বিরোধ চরমে উঠে।

শিক্ষিকা সুস্মিতা দে, সোনালী চক্রবর্তী, সুচন্দ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়দের অভিযোগ, “প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাশগুপ্ত স্কুলে আর্থিক নয়ছয়ের সঙ্গে যুক্ত। ইচ্ছে মতো স্কুল চালান। চলতি বছরে বাইরের স্কুলের ছাত্রীদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব সামলে দিয়েছি। অথচ তার জন্য আমাদের প্রাপ্য টাকা ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষিকা আমাদের দেননি। বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শক এবং জেলাশাসক পর্যন্ত গড়ালেও সমাধান হয়নি। তাই যখন রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয়ের পরীক্ষার সেন্টার আমাদের স্কুলে পড়ল, তখন তাঁকে জানিয়ে দিই পরীক্ষা চালানোর জন্য আমাদের প্রাপ্য টাকা না পেলে আমরা সেই দায়িত্ব পালন করব না। এই নিয়ে বৈঠকও হয়েছে। বুধবার বিকলেও একই কথা প্রধান শিক্ষিকাকে জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার স্কুলে এলেও তিনি আমাদের হাজিরা খাতায় সই করতে দেননি।” তাঁদের দাবি, “বিষয়টি স্কুলের প্রশাসক কাকলি জোয়ারদার(যিনি সিউড়ি পশ্চিম সার্কেলের বিদ্যালয় পরিদর্শক(প্রাথমিক) বলি। তিনি স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখাও করেন। এর পরে হাজিরা খাতা নিয়ে সই করতে গেলে প্রধান শিক্ষিকা পুলিশ ডেকে স্কুলে তালা দিয়ে আমাদের আটকে রাখেন।”

অন্য দিকে, প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাশগুপ্ত বলেন, “রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা আমাদের স্কুলে হচ্ছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, পরীক্ষা কক্ষে শিক্ষিকাদের দায়িত্ব পালন করা আবশ্যিক। সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকাদের বৃহস্পতিবার দায়িত্ব পালন করতে হবে জানানোর পরেও অনেকেই সময়ে স্কুলে আসেননি। অনেকে এলেও দায়িত্ব পালন করেননি। তাই যাঁরা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ‘অন ডিউটি’ লিখেছি। আর যাঁরা সেটা করেননি তাঁদের খাতায় অনুপস্থিত লেখা হয়েছিল। কিন্তু ওই খাতা কেড়ে নিয়ে তাঁরা যাতে নষ্ট না করে দেন, সে জন্য পুলিশে খাবর দিয়ে গেটে তালা দেওয়া হয়েছিল। কারণ হাজিরা খাতা খোওয়া গেলে তার দায়ভার আমাকেই নিতে হবে।” তাঁর দাবি, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু সেই অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। ওঁদের অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের কাছেও গিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে যেহেতু পুরো টাকা আসেনি তাই ওঁদের দাবি আমি মানতে পরিনি। এ দিন যা কিছু হয়েছে পরীক্ষার অফিসার ইনচার্জ মনোরমা পালের উপস্থিতিতেই হয়েছে।”

মনোরমা পাল কিংবা কাকলিদেবীর সঙ্গে যোগযোগ করা যায়নি। তবে জেলা স্কুল পরিদর্শক আশরফ আলি মির্ধা বলেন, “আর.টি গার্লসে এ দিন ঠিক কী হয়েছে সেটা জানি না। তবে মধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টিফিন খরচের টাকা পাননি বলে শিক্ষিকাদের একটা অভিযোগ নিয়ে ওই স্কুলে বৈঠক করেছিলাম। সমস্যা মেটেনি। আসলে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষাকা নিয়ম-কানুনের কোনও তোয়াক্কা করেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suri teachers conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE