Advertisement
E-Paper

সঞ্জয়-মৃত্যুতে প্রশ্ন অ্যাপোলো কলেজ নিয়েই

বছর দেড়েক আগেও প্রকল্পটিকে তাঁদের ‘স্বপ্ন’ বলে উল্লেখ করতেন অ্যাপোলো হাসপাতাল গোষ্ঠীর কর্তারা। রাজ্যে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ব্যাপারে অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিল ওই গোষ্ঠী।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায় ও অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০৩:৫২
সঞ্জয় রায়

সঞ্জয় রায়

বছর দেড়েক আগেও প্রকল্পটিকে তাঁদের ‘স্বপ্ন’ বলে উল্লেখ করতেন অ্যাপোলো হাসপাতাল গোষ্ঠীর কর্তারা। রাজ্যে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ব্যাপারে অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিল ওই গোষ্ঠী। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের জেরে সেই মেডিক্যাল কলেজের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠে গেল। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, প্রকল্পটি স্বপ্নই থেকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা।

চলতি বছরের শেষে বাটানগরের হাইল্যান্ড রিভার সাইডে অ্যাপোলো গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অংশত চালু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। রাজ্যের কাছ থেকে ৯৯ বছরের লিজে নেওয়া জমিতে হাজার শয্যার হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা ছিল ওই গোষ্ঠীর। তারই সঙ্গে ১৫০ আসনের মেডিক্যাল কলেজ গড়ার কথা ছিল। কিন্তু ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের মৃত্যু এবং তার জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই পরিকল্পনা নিয়ে অ্যাপোলো গোষ্ঠী আর এগোতে রাজি নয় বলে স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর।

অ্যাপোলোর যে-সব কর্তা একদা ওই প্রকল্পকে তাঁদের ‘স্বপ্ন’ বলে উল্লেখ করতেন, তাঁরা এখন চুপচাপ। মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যে-সব সুবিধা পাওয়ার কথা, এই পরিস্থিতিতে সেগুলি নেওয়া ঠিক হবে কি না, সেই ব্যাপারে দ্বিধায় পড়ে গিয়েছেন অ্যাপোলো-কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার এই মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির যাবতীয় নথিপত্র স্বাস্থ্য ভবনে জমা দিয়ে এসেছেন অ্যাপোলোর কর্তারা।

অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্রের খবর, বাটানগরের প্রকল্পের কাজ দেড় মাস ধরে আটকে আছে। অ্যাপোলোর এক কর্তা জানান, প্রথমে টাউন হলের প্রকাশ্য বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনা, তার পরে সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর ঘটনা এবং চলতি পর্যায়ে সর্বশেষ ঘটনা চার মাসের একটি শিশুর মৃত্যু— এই সবের ধাক্কায় মেডিক্যাল কলেজ গড়ার পরিকল্পনা মাথায় উঠেছে। ওই সব ঘটনা সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করা, তদন্ত কমিটি ও পুলিশ যখন যা চাইছে, সেই নথি সরবরাহ করা, তাদের সামনে হাজিরা দেওয়া ইত্যাদিতেই সময় চলে যাচ্ছে। ‘‘মেডিক্যাল কলেজের ব্যাপারে উপর মহল থেকে নির্দেশ এসেছে, আমরা যেন মুখে কুলুপ এঁটে থাকি,’’ বললেন ওই সংস্থার অন্য এক কর্তা।

রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, ‘‘মেডিক্যাল কলেজ আমাদের দরকার। কিন্তু অ্যাপোলোর সঙ্গে কোনও প্রকল্পে এগোতে গেলে এখন আমাদের অনেক সাবধানে পা ফেলতে হবে। তাড়াহুড়ো করলে হবে না।’’ তিনি জানান, প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত সমস্ত নথি ওদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কেন? স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, কিছু রোগীকে নিখরচায় দেখতে হবে বলে বাইপাস সংলগ্ন অ্যাপোলো হাসপাতালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের চুক্তি হয়েছিল। ওরা সেই শর্ত এত দিনে কতটা মেনেছে, সেটাও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার পরে মেডিক্যাল কলেজ প্রকল্পের চুক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা হবে।

তবে হাসপাতালের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে ই-মেলে জানানো হয়েছে, ‘অ্যাপোলো গ্লেনেগল্‌সের বিরুদ্ধে ওঠা গাফিলতির অভিযোগ ও তদন্তের সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ গড়ার বিষয়টির কোনও যোগ নেই। দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা। অ্যাপোলো-কাণ্ডের কোনও প্রভাব এতে পড়বে না। মেডিক্যাল কলেজ হবে।’

কিন্তু ই-মেলের এই বার্তার সঙ্গে বাস্তবের অমিলই যে বেশি, কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য ভবনে উঁকিঝুঁকি মারলেই সেটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।

Sanjay Roy death Apollo Hospital College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy