Advertisement
E-Paper

আগেভাগেই প্রহরীবিহীন সব গেট বন্ধ 

প্রহরীবিহীন রেলগেটে অনেক দুর্ঘটনা ঘটত। রাস্তার উপর দিয়ে রেললাইন গিয়েছে। রাস্তা দিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি পেরোচ্ছে। সেই সময়েই এসে পড়েছে ট্রেন! —এই ধরনের দুর্ঘটনায় অতীতে গোটা দেশেই প্রচুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেই প্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পর্যায়ক্রমে সমস্ত প্রহরীবিহীন রেলগেট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
নতুন: আদ্রা-খানুডি শাখায় রক্ষীবিহীন লেভেল ক্রসিং সরিয়ে স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে তৈরি করেছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশন। রঘুনাথপুর ১ ব্লকের মিছিরডি গ্রামের কাছে। ছবি: সঙ্গীত নাগ

নতুন: আদ্রা-খানুডি শাখায় রক্ষীবিহীন লেভেল ক্রসিং সরিয়ে স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে তৈরি করেছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশন। রঘুনাথপুর ১ ব্লকের মিছিরডি গ্রামের কাছে। ছবি: সঙ্গীত নাগ

রেলমন্ত্রকের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ছিল চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু তার এক মাস আগেই ডিভিশনের সমস্ত প্রহরীবিহীন রেলগেট বন্ধ করা গিয়েছে বলে দাবি আদ্রা ডিভিশনের রেল কর্তৃপক্ষের। রেলের দাবি, শুক্রবার, ৩১ জুলাই রাতে কোটশিলা-পুন্দাগ শাখায় ডিভিশনের শেষ প্রহরীবিহীন রেলগেটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আদ্রার ডিআরএম শরদকুমার শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘দক্ষিণপূর্ব রেলের মধ্যে আদ্রা ডিভিশনই প্রথম নির্দিষ্ট সময়ের আগে সমস্ত প্রহরীবিহীন রেলগেট বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছে।”

প্রহরীবিহীন রেলগেটে অনেক দুর্ঘটনা ঘটত। রাস্তার উপর দিয়ে রেললাইন গিয়েছে। রাস্তা দিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি পেরোচ্ছে। সেই সময়েই এসে পড়েছে ট্রেন! —এই ধরনের দুর্ঘটনায় অতীতে গোটা দেশেই প্রচুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেই প্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পর্যায়ক্রমে সমস্ত প্রহরীবিহীন রেলগেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। বদলে, সেখানে তৈরি করা হবে স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে। এলাকা ও রাস্তার গুরুত্ব বুঝে রেলগেট বসিয়ে সেখানে প্রহরী তথা রেলকর্মী নিয়োগ করা হবে। সেই কাজের জন্য চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল রেলমন্ত্রক।

লক্ষ্যমাত্রার আগেই কাজ শেষ করার ঘটনাটিকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে দাবি করছে আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষ। এ দিন নিজের দফতরে ডিআরএম ডেকে নিয়েছিলেন রেলের বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের। তাঁদের সামনেই লক্ষ্যমাত্রার আগে ডিভিশনের ১১৫টি প্রহরীবিহীন রেলগেট পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’বছর ধরে অন্য ডিভিশনগুলির সঙ্গেই আদ্রা ডিভিশনেও এই ধরনের রেলগেটগুলি বন্ধ করার কাজ চলছিল। কিন্তু কাজে প্রত্যাশিত গতি ছিল না।

সেই প্রেক্ষিতেই রেলমন্ত্রক দেশের ১৬টি জোনের কাছে গত বছর এপ্রিলে নির্দেশ পাঠিয়েছিল। বলা হয়েছিল, এই সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত সতেরো মাসে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১১৫টি রেলগেট। তার মধ্যে ৭৫টিতে স্থায়ী রেলগেট তৈরি করে সেখানে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। ২৮টি রেলগেট বন্ধ করে সেখানে তৈরি করা হয়েছে স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে। সাবওয়ে বা কর্মী থাকা স্থায়ী রেলগেটের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে ৯টি প্রহরীবিহীন রেলগেটকে। আর তিনটি রেলগেট পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তবে কিছু দিন আগে পুরুলিয়া শহরের কাছে একটি রেলগেট বন্ধ করা নিয়ে গোলমাল বেধেছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় কাজ বন্ধ করে ফিরতে হয়েছিল রেলকে। তবে ডিআরএম জানাচ্ছেন, রেলের খাতায় সেটিকে প্রহরীবিহীন রেলগেট বলে উল্লেখ করা নেই। ফলে এই হিসাবে ধরাও হচ্ছে না।

রেল সূত্রের খবর, লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য আধিকারিকদের নিয়ে বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছিল আদ্রা ডিভিশনে। সেই দলে ছিলেন আদ্রার এডিআরএম, বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ারেরা এবং রেলের সুরক্ষা আধিকারিক। পুরো প্রক্রিয়া দেখভাল করছিলেন ডিআরএম নিজে। বস্তুত, স্থায়ী রেলগেট তৈরি করে সেখানে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়নি রেলকে। সমস্যা হয়েছিল স্বল্প উচ্চতার সাবওয়ে তৈরির কাজে। সেই কাজ করতে গিয়ে একাধিকবার ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়েছিল ডিভিশনের বিভিন্ন শাখায়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রহরীবিহীন রেলগেটের সংখ্যা সব থেকে বেশি ছিল বাঁকুড়া-মশাগ্রাম শাখায়। ওই শাখার ১২০ কিলোমিটারের মধ্যে ৪০টিরও বেশি প্রহরীবিহীন রেলগেট বন্ধ করতে হয়েছিল।

ডিআরএম বলেন, ‘‘লক্ষ্যমাত্রা সংক্রান্ত নির্দেশ পাওয়ার পরেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বিশেষ দল গড়ে এই কাজে নামা হবে। সেই মতো দলগত ভাবে কাজ করেই সাফল্য এসেছে।”

Rail Crossing Unguarded Accident Subway
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy