Advertisement
E-Paper

প্রতারক ধরতে রাজস্থান পুলিশ এল কলকাতায়

পিনকন-এর কর্ণধার, কলকাতার বাসিন্দা মনোরঞ্জন রায় ও তাঁর তিন সঙ্গীকে বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করেছে রাজস্থান পুলিশ। কিন্তু রাজকুমারকে পাওয়া যায়নি।

অত্রি মিত্র ও সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১৬

অভিযুক্তের সংখ্যা পাঁচ। তার মধ্যে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কর্ণধার-সহ চার জন ধরা পড়েছেন। কিন্তু পঞ্চম জন পলাতক। আর তাকে ধরতেই দু’দিন ধরে কলকাতায় ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে রাজস্থান পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপ (এসওজি)-এর একটি দল। রাজস্থান পুলিশ জানাচ্ছে, তাঁর নাম রাজকুমার রায়। যে সংস্থার বিরুদ্ধে শ’য়ে শ’য়ে কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ, সেই পিনকন-এর এক জন ডিরেক্টর ওই রাজকুমার। সংস্থার সদর দফতর কলকাতাতেই।

পিনকন-এর কর্ণধার, কলকাতার বাসিন্দা মনোরঞ্জন রায় ও তাঁর তিন সঙ্গীকে বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করেছে রাজস্থান পুলিশ। কিন্তু রাজকুমারকে পাওয়া যায়নি। সেই জন্য রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে রাজকুমারের বিভিন্ন সম্ভাব্য আশ্রয়ে রাজস্থান পুলিশ হানা দিচ্ছে।

টাকা দ্বিগুণ করার টোপ দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে শ’য়ে শ’য়ে কোটি টাকা তুলে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে। সেই তদন্তে নেমে একটি তথ্য জেনে বিস্মিত রাজস্থান পুলিশ। তারা জেনেছে, বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু থেকে ধরা পড়া মনোরঞ্জন রায়ের সঙ্গী রঘু জয় শেট্টির বিরুদ্ধে বছর পাঁচেক আগে চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই, ব্যাঙ্ক জালিয়াতির একটি মামলায়। যে মামলার তদন্ত ২০০৮-এ লালবাজারের গোয়েন্দারা শুরু করেন। তখন তাঁদের হাতেই গ্রেফতার হন মনোরঞ্জন রায়।

সেই সময়ে ওই রঘু জয় শেট্টি ছিলেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। ওই ব্যাঙ্কের জাল নথি (লেটার অব ক্রেডিট) অন্য ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছিল। নথিতে রঘু জয় শেট্টির সই জাল করা হয়েছিল। অথচ যাচাই করার জন্য অন্য ব্যাঙ্কটি যখন সেটি সত্যিই তাঁর স্বাক্ষর কি না জানতে চায়, তখন রঘু জানান, লেটার অব ক্রেডিটে তিনিই সই করেছেন। পরে তদন্তে বেরোয়, রঘু সব জেনেশুনেই এটা করেছেন। ২০১৩-তে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চাকরি খোয়ান রঘু। মনোরঞ্জনকে ওই জালিয়াতির ষড়যন্ত্রী হিসেবে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করলেও ‘প্রমাণাভাবে’ তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট দেয়নি। এখন জানা যাচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে বরখাস্ত রঘু পরে যোগ দেন মনোরঞ্জনের সংস্থায়। তখন থেকে পিনকন-এর যাবতীয় হিসেব তিনিই সামলাচ্ছেন। রাজস্থান পুলিশ জানাচ্ছে, টোপ দিয়ে টাকা তুলে কী ভাবে তা অন্য ভুয়ো অ্যাকাউন্টে সরিয়ে লোপাট করতে হবে, খাতায়-কলমে কী উল্লেখ করা থাকবে, সে সবই ছিল রঘুর নখদর্পণে।

এমনকী, নোটবন্দির সময়ে কয়েক কোটি টাকার বাতিল হয়ে যাওয়া নোট আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাটি। সেই টাকার একটা বড় অংশ জমা পড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। ওই লেনদেনের জন্য যাবতীয় যোগাযোগ রঘুই করেছেন বলে জেনেছে রাজস্থান পুলিশ। এসওজি-র আইজি এম এন দীনেশ বলেন, ‘‘রাজস্থান থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা প্রতারণা করেছে ওই গোষ্ঠী। ধৃতদের জেরা করে ওই টাকা উদ্ধারের চেষ্টাই করছি।’’

তবে একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতেন পিনকন-এর কর্তারা। এই ব্যাপারে কিছু তথ্যপ্রমাণ রাজস্থান পুলিশের হাতে এসেছে। ওই চার জনের গ্রেফতারির খবর পেয়ে জয়পুরের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর একটি দল ধৃতদের সম্পর্কে রাজস্থান পুলিশের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য নিয়েছে। প্রয়োজনে ইডি ওই চার জনকে হেফাজতে নিতে আদালতে আবেদন করতে পারে।

Pincon Group Scam Rajasthan Police Arrest Rajkumar Roy রাজকুমার রায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy