Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Rampurhat

Rampurhat Clash: বগটুই-কাণ্ডের কেস ডায়েরি পেশ হাই কোর্টে, নন্দীগ্রামের তুলনা টেনে সিবিআই তদন্তের দাবি

বৃহস্পতিবার আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় দাবি তোলেন, নন্দীগ্রাম ঘটনায় পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। আদালত সিপিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য পুলিশ বা সিট নয়, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। তাতে নজরদারি করবেন হাই কোর্টের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।

বগটুইয়ের এই ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।

বগটুইয়ের এই ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২২ ১৫:৩৫
Share: Save:

বীরভূমের রামপুরহাটে আট গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় গৃহীত স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানি নির্ধারিত সময়ের পরেও চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের বেঞ্চ জানিয়েছে, হাই কোর্টের কাজের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও এই মামলার শুনানি চলবে। কোনও আইনজীবীর অসুবিধা না থাকলে কোর্টের সময় পেরিয়ে গেলেও মামলা শোনা হবে। মামলার গুরুত্ব অনুধাবন করেই এই সিদ্ধান্ত।

রামপুরহাটের বগটুইয়ে আট জন গ্রামবাসীর ঝলসে মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান বিচারপতি শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ফের হয় রামপুরহাট-কাণ্ডের শুনানি। শুরুতেই আদালতে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টল করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে গিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন এবং এমন কিছু মন্তব্য করেছেন যাতে তদন্তে ক্ষতি হতে পারে।’’

প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতি শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ দিয়েছিল, তদন্ত-সহ কেস ডায়েরির রিপোর্ট বৃহস্পতিবার জমা করতে হবে আদালতে। নিশ্চিত করতে হবে, ওই জায়গার কোনও তথ্য নষ্ট হয়নি। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগাতে হবে। আদালতের আগামী নির্দেশ ছাড়া সিসি ক্যামেরার রেকর্ড যেন বন্ধ করা না হয়। জেলা আদালতের বিচারকের নজরদারিতে সিসিটিভি নজরদারি (মনিটরিং) করা হবে। পাশাপাশি, ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও বলা হয়। দুই বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং আইজি-কে সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও ভাবেই তাঁদের হুমকি বা ভয় দেখানো যাবে না।

আদালতের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবারই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কেস ডায়রি জমা দেন। তিনি বলেন, ‘‘সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টল করার কথা বলা হয়েছিল। বুধবার হাই কোর্ট সেই নির্দেশ দিয়েছিল। সন্ধ্যাবেলা নির্দেশের প্রতিলিপি হাই কোর্টের সাইটে আসে। তার পর তা জেলায় পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করা হয় পূর্ব বর্ধমানের জেলা বিচারককে। এখন সেখানে ৩১টি সিসিটিভি ক্যামরা লাগানো হয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর বগটুই সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সব রাজনৈতিক দলের সব নেতাকে গ্রামে যেতে দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী গেলেই অসুবিধা? বিজেপি প্রতিনিধি দল গেল। সিপিএমের মহম্মদ সেলিম গেলেন।’’

যদিও আবেদনকারী পক্ষ এখনও সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় রয়েছেন। বৃহস্পতিবার আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় দাবি তোলেন, নন্দীগ্রাম ঘটনায় পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। আদালত সিপিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য পুলিশ বা সিট নয়, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। তাতে নজরদারি করবেন হাই কোর্টের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। তিনি আরও বলেন, ‘‘সিট এবং পুলিশের উপর প্রভাব খাটানো হতে পারে। তাই সিবিআই-কে দেওয়া হোক এই তদন্ত। ইতিমধ্যে রাজ্যের ডিজি তদন্ত না করেই বলে দিয়েছেন ওই ঘটনা রাজনৈতিক নয়।’’

শামিম আহমেদ বলেন, ‘‘‘কয়লা পাচার মামলায় ইডি জ্ঞানবন্ত সিংহকে নোটিস দিয়েছিল। তিনি ওই পাচারে যুক্ত। আর তাঁকেই কীভাবে সিটে রাখা হল। তথ্য প্রমাণ লোপাট করতেই কি পদক্ষেপ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘‘বুধবারই বলেছিলাম কেয়াম শেখ অন্যতম সাক্ষী। এই নাবালিকা ওই ঘটনার অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করেছেন। পুলিশ এখনও কোনও বয়ান রেকর্ড করেনি। এখন সে কোথায় রয়েছে তা-ও জানা নেই।’’ আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন, তাতে অসুবিধা নেই। কিন্তু তিনি কী ভাবে রাজ্য ডিজিকে বলতে পারেন, কী কী করতে হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE