Advertisement
১৭ মে ২০২৪

সন্ন্যাসিনী ধর্ষণ কাণ্ডে শাস্তি যাবজ্জীবন

এ দিন বেলা দু’টোয় এজলাসে বসেন বিচারক। তার মিনিটখানেক আগে কাঠগড়ায় এনে দাঁড় করানো হয় ছ’জনকে।

ঘটনার দিন সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া সেই ছবি। —ফাইল চিত্র।

ঘটনার দিন সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া সেই ছবি। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১১
Share: Save:

রানাঘাটের মিশনারি স্কুলের বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত নজরুল ইসলামকে বুধবার যাবজ্জীবন সশ্রম কারবাসের শাস্তি দিল আদালত। বাকি পাঁচ অপরাধীকে দশ বছর সশ্রম কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিচারক কুমকুম সিংহ। মঙ্গলবার ছয় অপরাধীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এ দিন শাস্তি ঘোষণা করার সময় বিচারক মন্তব্য করেন, ‘‘স্বয়ং যীশুও হয়তো মিশনারি স্কুলে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনাকে ক্ষমা করতেন না।’’

এ দিন বেলা দু’টোয় এজলাসে বসেন বিচারক। তার মিনিটখানেক আগে কাঠগড়ায় এনে দাঁড় করানো হয় ছ’জনকে। শাস্তি ঘোষণার আগে বিচারক দোষীদের কাছে জানতে চান, শাস্তি নিয়ে কার কী বলার আছে। ডাকাতির ষড়যন্ত্র ও ডাকাতদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়া গোপাল সরকার জানায়, তারা খুব গরিব। সে-ই একমাত্র রোজগার করে। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও বাচ্চা ছেলেমেয়ে, হৃদরোগে আক্রান্ত দাদাকে নিয়ে তার সংসার। তাকে কম শাস্তি দিলে ভাল হয়। ডাকাতির ষড়যন্ত্র ও ডাকাতির অপরাধে দোষী মহম্মদ সালিম শেখ, খালেদুর রহমান, মিলন সরকার, ওহিদুল ইসলামেরা জানায়, তারা কেউ বাংলাদেশে রিকশা চালায়, কেউ দিনমজুর। সকলেরই স্ত্রী ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। কেউই সম্পন্ন নয়। তাদের শাস্তি বেশি হলে সংসার ভেসে যাবে।

বিচারক সকলের কথা শোনার পরে শেষে নজরুলের কাছে জানতে চান, তার কী বলার আছে। নজরুল বলে, ‘‘আমার কিছু বলার নেই।’’

শাস্তি ঘোষণার ঠিক আগে বিচারক জানান, মিশনারি স্কুলের কয়েক জন সন্ন্যাসিনী সাক্ষ্যে জানিয়েছেন কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছিল। শাস্তির মেয়াদ ঠিক করার সময়ে সেই সাক্ষ্যের কথা তিনি মনে রাখবেন।
এর পরে শাস্তির মেয়াদ ঘোষণা করেন বিচারক।

ঘোষণার পরে বিচারক জানান, আইন অনুযায়ী ধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতা ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকেন। তিনি দোষীদের শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাও করেছেন। শাস্তির মেয়াদ ফুরোলে নির্যাতিতাকে ওই জরিমানার টাকা দিতে হবে। তিনি মারা গেলে বা ‘সন্ন্যাসিনী’ বলে টাকা নিতে না চাইলে ওই টাকা তিনি যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সেখানে দিতে হবে।

বিচারক আরও জানান, দোষীদের অধিকাংশ বাংলাদেশের নাগরিক। কারাবাস শেষ হলে বাংলাদেশের যে কয়েক জন নাগরিক রয়েছে তাদের দেশে ফেরানোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন জেল সুপার।

এ দিন শাস্তি ঘোষণার পরে মিশনারিদের পক্ষে মণিকা জোসেফ এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, আদালতের রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE