—নিজস্ব চিত্র।
দিঘায় জগন্নাথদেবের মন্দির নির্মাণের কাজ এখনও শেষ হয়নি। মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠা কবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা কাটেনি। এর মাঝেই রবিবার দিঘায় প্রথম বার জগন্নাথদেবের রথযাত্রা আয়োজিত হতে চলেছে বলে খবর। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার জন্য তিনটি রথের কাঠামো তৈরির কাজ শেষ। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের তত্ত্বাবধানে রথ-সড়ক তৈরির কাজ চলছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে রবিবার নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দিরের চত্বর থেকে যাত্রা শুরু করে পুরনো দিঘার জগন্নাথ ঘাটের পুরনো মন্দিরে তা শেষ হবে।
বৃহস্পতিবার জগন্নাথ মন্দিরের পাশেই কড়া নিরাপত্তায় তিনটি রথের কাঠামো দেখা গিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ওড়িশা থেকে দক্ষ কারিগর এনে এই রথগুলি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট। একটি গাঢ় সবুজ, একটি কমলা আর অন্যটিতে হলুদ রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। রথের মাথায় বসানো হয়েছে চূড়া। পুরীর রথের আদলে তৈরি দিঘার রথের চূড়াগুলিকে শেষ মুহূর্তে রঙিন কাপড় দিয়ে মুড়ে ফেলা হবে। ইতিমধ্যেই রাজস্থানের বংশী পাহাড়পুর থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি চলে এসেছে। সেগুলির মোড়ক এখনও খোলা হয়নি। মন্দিরের অন্দরসজ্জার কাজ শেষ হওয়ার পরেই মূর্তিগুলিকে স্থাপন করা হবে। কিন্তু কার হাত ধরে রথের উদ্বোধন হবে, কী ভাবে গোটা পর্ব সম্পন্ন হবে, সে বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে দিঘা উন্নয়ন পর্ষদ। ধোঁয়াশা থাকায় প্রকাশ্যে কিছু বলা হয়নি জেলা প্রশাসনের তরফেও।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, এ বারের রথযাত্রা ঘিরে মেলার আয়োজন না হলেও, রথ-সড়কের আশপাশের সমস্ত অস্থায়ী দোকান ও ঝুপড়ি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রতিনিয়ত মাইকে প্রচার করে রথ-সড়ক ও আশপাশের এলাকায় অবৈধ ভাবে দোকান বাঁধতে নিষেধ করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত রথ-সড়কটিকে প্রয়োজন মতো চওড়া করে দ্রুত রথ চলাচলের উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদকে। এর জন্য রাস্তার পাশে থাকা লাইটস্ট্যান্ডগুলিকে উপড়ে ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি জল-কাদা ঠেলে রোলার চালিয়ে লাল মাটি ফেলে রাস্তাটিকে দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে। বৃষ্টির ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন কর্মীরা।
এ দিকে, জগন্নাথ মন্দিরের কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত রয়েছে। সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ছ’টি ভাগ থাকছে মন্দিরটিতে। মন্দিরে দু’টি ফটক থাকবে। সেখান থেকে প্রবেশ করার পর থাকবে ভোগ মণ্ডপ, এর পর নাটমন্দির, জগন্মোহন এবং সব শেষে গর্ভগৃহ। এর মধ্যে সব ক’টি কংক্রিটের কাঠামো তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দুই ফটক, ভোগ মণ্ডপ ও নাটমন্দিরের বাইরে পাথর বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। তবে জগন্মোহন ও গর্ভগৃহের বাইরের পাথরের মোড়ক, চূড়া বসানো ছাড়াও আরও কিছু কাজ এখনও বাকি। এই কাজগুলি শেষ হওয়ার পরেই গোটা চত্বরে কংক্রিটের রাস্তা, সৌন্দর্যায়ন-সহ মন্দিরের অন্দরসজ্জার কাজ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy