শিলিগুড়ি থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের আলিপুরদুয়ারের সাংবাদিক চয়ন সরকার পারিবারিক অশান্তি এড়াতে পরিকল্পনা করেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই দাবি করল সিআইডি।
গত রবিবার থেকে নিখোঁজ চয়নকে শুক্রবার রাতে কোচবিহারের ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পরে তাঁকে আলিপুরদুয়ার থানা ও সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ দিন কলকাতায় সিআইডি-র আইজি (১) সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘পারিবারিক গোলমালে সহানুভূতি আদায় করতে চয়ন অসমে পালিয়ে যান বলেই জানা যাচ্ছে। টাকা ফুরনোয় শুক্রবার রাতে নিজেই ফিরে আসেন।’’ গোয়েন্দাদের দাবি, পালানোর আগে পরিচিত
তিন জনের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলেন চয়ন।
চয়ন উধাও হওয়ার দিন কয়েক আগে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাংশ তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। তাই চয়নের কাকা তাঁর অপহরণের আশঙ্কায় পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু টিএমসিপি-র হামলার ঘটনার সঙ্গে চয়নের উধাও হওয়ার কোনও যোগসূত্র নেই বলেই সিআইডির দাবি।
এ দিন শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের আইজির দফতরে চয়নকে হাজির করায় সিআইডি। সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করেন সিআইডির উত্তরবঙ্গের অস্থায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট তথা শিলিগুড়ির এসআরপি সুনীল যাদব, আলিপুরদুয়ারের এসপি আভারু রবীন্দ্রনাথ, ডিএসপি সিআইডি গৌতম ঘোষাল। এ দিনই তাঁকে শিলিগুড়ি থেকে ফের আলিপুরদুয়ার আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতে বিকেল পর্যন্ত চয়নের পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি। আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার পরে চয়নকে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুরদুয়ার থানায়। সেখানে তাঁর বাড়ির লোকজন যান। চয়ন বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে চলে গিয়েছিলাম। যা বলার সিআইডিকে বলেছি।’’
সিআইডির দাবি, ২ অগস্ট চয়ন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আত্মগোপনের ছক কষেন। সিআইডির আরও দাবি, এর পর তাঁর কয়েক জন সহকর্মীর সাহায্যে পালানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। সবাইকে বিভ্রান্ত করার জন্য আলিপুরদুয়ারের কাছে সলসলাবাড়িতে ৩১ সি জাতীয় সড়কে বাইক রাখেন। নতুন মানিব্যাগও কেনেন। তাতে পরিচয়পত্র ও কিছু টাকা রেখে বাইকের পাশে ফেলে চলে যান। সলসলাবাড়ি থেকে কামাখ্যাগুড়িতে গিয়ে আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ধরে গুয়াহাটি যান। সেখানে ক’দিন ইতস্তত ঘোরেন। তাঁর কাছে ১৮০০ টাকা ছিল। তা ফুরোনোর মুখে শুক্রবার রাতে গুয়াহাটি থেকে ধুবরি হয়ে ট্রেনে নিউ কোচবিহারে যান। সেখানে এক সহকর্মী ও ভাইকে ফোন করে চয়ন জানান, তিনি ফিরেছেন।
চয়নের কাকা প্রবীণবাবু বলেন, ‘‘চয়নকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’’ আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস সালভেমুরুগণ জানান, অপহরণের মামলাটির কী হবে, তা সিআইডি দেখবে।